আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থিতা ফিরে পেতে মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে বিএনপি চেয়ারপার্সনসহ ৫৪৩ জন সংক্ষুব্ধ প্রার্থী নির্বাচন কমিশনে আপিল করেছেন। বাতিল হওয়া মনোনয়নের মধ্যে ২৪৩ জন আপিল আবেদন করেননি।
বুধবার (০৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দিন আহমদ এসব তথ্য বলেন।
তিনি জানান, আপিল আবেদনের তৃতীয় দিনে ২২২ জন প্রার্থী আপিল করেন। দ্বিতীয় দিনে ২৩৭ প্রার্থী নির্বাচন কমিশনে আপিল করেন। প্রথমদিনে আপিল করেন ৮৪ জন। আগামী ৬, ৭ ও ৮ ডিসেম্বর আপিলের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, আগামীকাল ৬ তারিখ ১ থেকে ১৬০ পর্যন্ত ক্রমিক নম্বরের আবেদন শুনানি হবে। ৭ ডিসেম্বর ১৬১ থেকে ৩১০ পর্যন্ত এবং ৮ ডিসেম্বর ৩১১ ক্রমিক নম্বর থেকে ৫৪৩ পর্যন্ত আবেদনের আপিল শুনানি গ্রহণ করবে কমিশন।
তিনি অারো বলেন, দুপুরে শুধু খাওয়ার বিরতি দেয়া হবে। এছাড়া শুনানী শেষ না হওয়া পর্যন্ত চলবে।
সচিব বলেন, প্রতিটি আবেদনের আপিল শুনানি শেষে সাথে সাথেই রায় জানিয়ে দেয়া হবে। সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি যদি উচ্চ আদালতে কমিশনের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে চান, তাহলে তাকে রায়ের নকল কপি দিয়ে দেয়া হবে।
এদিকে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র ‘আইন বহির্ভূতভাবে’ বাতিল হয়েছে দাবি করে প্রার্থিতা ফিরে পেতে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আপিল করা হয়েছে। কমিশন স্বাধীনভাবে আইন অনুসরণ করলে খালেদা জিয়া প্রার্থিতা ফিরে পাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিএনপির আইন সম্পাদক কায়সার কামাল।
এছাড়াও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের মনোনয়নপত্র বাতিল করার জন্য নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আপিল করেছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সমাজ কল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। মির্জা আব্বাস হলফনামায় ভুল তথ্য ও তথ্য গোপন করেছেন, এজন্য তার মনোনয়ন বাতিলের জন্য আপিলটি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মেননের আইনজীবী জিয়াদ আল মালুম।
প্রার্থিতা পেতে আগ্রহীদের আপিলের শুনানি আগামী ৬ ডিসেম্বর থেকে ৮ই ডিসেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এক্ষেত্রে আদালতের মতোই শুনানি করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচন কমিশন একটি আধাবিচারিক সংস্থা। নির্বাচন কমিশনারদের মর্যাদাও হাইকোর্টের বিচারপতিদের সমান। শুনানিতে আপিলকারীরা তাদের আইনজীবী নিয়ে আসতে পারবেন। সেখানে আদালতের বেঞ্চের মতো করেই তারা মুভ করবেন। সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনই আপিল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা পালন করে। সংক্ষুব্ধরা ইসির সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট হলে আদালতেও যেতে পারবেন। আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের ১১ তলায় শুনানি হবে।
উল্লেখ্য গত ২ ডিসেম্বর ছিল মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের দিন। সারা দেশে দাখিল করা ৩ হাজার ৬৫টি মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের পর ২ হাজার ২৭৯টি মনোনয়নপত্র বৈধ এবং ৭৮৬টি মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা।
বাতিল হওয়া প্রার্থীরা তাদের প্রার্থিতা ফিরে পেতে ৩ ডিসেম্বর থেকে আপিল শুরু হয়েছে চলবে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এরপর ৬ ডিসেম্বর থেকে প্রার্থীদের আপিল গ্রহণের ওপর শুনানি চলবে। পরদিন ৯ ডিসেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন এবং ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে। আগামী ৩০ ডিসেম্ভব ভোট গ্রহণ।