রংপুরের জামায়াত নেতারা এবার ধানের শীষের প্রার্থী

বিবিধ, নির্বাচন

ফরহাদুজ্জামান ফারুক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-28 04:16:31

একাদশ সংসদ নির্বাচনে বৃহত্তর রংপুরে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে বিএনপি-জামায়াতের একাধিক প্রার্থী এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য প্রস্তুত হয়েছেন। এদের মধ্যে যুদ্ধাপরাধের দায়ে নিবন্ধন হারানো জামায়াতে ইসলামীর হাফ ডজন প্রার্থীও রয়েছেন। যাদের বিরুদ্ধে রয়েছে হত্যা-নাশকতা-সহিংসতা ও সংখ্যালঘু নির্যাতনের মামলা। দীর্ঘ সময় আত্মগোপন ও কারাগারে থাকা এসব জামায়াত নেতারা ধানের শীষ নিয়ে মাঠে থাকবেন।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত মনোনয়নপত্র দাখিল শেষে এখন তাদের অপেক্ষা প্রচারণায় নামার। এদের মধ্যে রংপুর-৫ আসনে জেলা জামায়াতের রাজনৈতিক সচিব গোলাম রব্বানী, গাইবান্ধা-১ এ জেলা জামায়াতে ইসলামীর সহ-সচিব মাজেদুল ইসলাম, নীলফামারী-২ আসনে জেলা আমির মনিরুজ্জামান মন্টু, নীলফামারী-৩ এ কেন্দ্রীয় সূরা সদস্য আজিজুল ইসলাম, দিনাজপুর-১ এ উপজেলা আমির আবু হানিফ এবং দিনাজপুর-৬ আসনে রয়েছেন জেলা জামায়াতের আমির আনোয়ারুল ইসলাম।

বিভিন্ন মামলার সূত্র মতে, মিঠাপুকুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জামায়াত নেতা গোলাম রব্বানী, ২০১৩ সাল থেকে সংঘটিত সহিংসতা-নাশকতার ঘটনাগুলোতে তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে জানা যায়। পেট্রোল বোমায় সাত বাসযাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যা মামলার আসামিও তিনি। গাইবান্ধা জেলা জামায়াতের সহ-সচিব মাজেদুল ইসলাম বামনডাঙ্গা পুলিশ ফাঁড়ি আক্রমণ করে অস্ত্রলুট ও চার পুলিশ সদস্যকে হত্যা, রিকশাচলাক শরীফুল ও ছাত্রলীগ নেতা মামুন হত্যা মামলার আসামি।

কেন্দ্রীয় জামায়াতের সূরা সদস্য আজিজুল ইসলাম ও নীলফামারী জেলা আমির মনিরুজ্জামান মন্টুর বিরুদ্ধে সংস্কৃতিমন্ত্রীর গাড়িবহরে হামলা করে চার যুবলীগ কর্মী হত্যার মামলা রয়েছে। এছাড়া দিনাজপুরের সংখ্যালঘু কর্ণই গ্রামে অগ্নিসংযোগসহ ১৭টি নাশকতা মামলার আসামি জেলা আমির আনোয়ারুল ইসলাম ও উপজেলা আমির আবু হানিফ। 

নিবন্ধন না থাকায় বিএনপির প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়া জামায়াতে ইসলামীর এক প্রার্থী না প্রকাশের শর্তে বলেন, ‘নিবন্ধন নেই বলেই জামায়াত ভিন্ন প্রতীকে লড়ছে। সারাদেশ থেকে নির্বাচিত হয়ে আসার মতো দলে ৩৫ জন প্রার্থী আছে। সবাই সজাগ থাকলে জয়ের পথ আরো সহজ হবে।’

এদিকে যুদ্ধাপরাধের দায়ে নির্বাচন কমিশন জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করেছে। অথচ মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সরকার ক্ষমতায় থেকেও জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করেনি। সরকারের এই ব্যর্থতার কারণে সংসদ নির্বাচনে জামায়াত নেতাদের রাজনৈতিক পুনর্বাসনের সুযোগ হয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বিশিষ্ট সংগঠক আকবর আলী বলেন, ‘বাংলাদেশে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য যারা দায়ী, সেই দলের নেতারা এখন রাজনীতি করার বৈধতা পেয়ে যাচ্ছে।’

অন্যদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষক নজরুল ইসলাম হাক্কানি বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের যে দলটি সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। তাদেরকে পুনর্বাসন করা হচ্ছে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর