ঢাকা-৩: ড্রাইভিং সিটে আ'লীগ, ব্যাকফুটে বিএনপি

বিবিধ, নির্বাচন

মনি আচার্য্য, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-29 11:02:24

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে সারা দেশে চলছে নির্বাচনী হিসেব নিকেশ। কোন আসনে কোন দলের প্রার্থী এগিয়ে, আবার এসব সমীকরণ ভোটের আগে কতটুকুই বা প্রভাব ফেলবে। এ ধরনের নানা জল্পনা কল্পনা ও নির্বাচনী আড্ডার মধ্য দিয়ে নির্বাচনের উত্তাপ ছড়াচ্ছে সব জায়গায়।

যেহেতু বাংলাদেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রধান দুইটি রাজনৈতিক দল। তাই তাদের প্রার্থীদেরকে নিয়েই চলে সারা দেশে নির্বাচনী আলোচনা। তবে ১১ ডিসেম্বর থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হওয়ার পর থেকে রাজনীতির মাঠের হিসাব নিকাশ আরও চাঙ্গা হয়েছে।

আর এ রকম রাজনৈতিক হিসাব নিকাশ চলছে ঢাকা-৩ আসনেও। এই আসনটিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই প্রার্থী লড়ছেন ভোটের ময়দানে। এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে লড়ছেন বর্তমান এমপি বিদ্যুৎ, খনিজ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু ও বিএনপির মনোনয়ন পেয়ে লড়ছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। 

নির্বাচনী মাঠে গুরুত্বপূর্ণ এ আসনটিকে নিয়ে চলছে নানা জল্পনা কল্পনা ও হিসাব নিকাশ। শেষ পর্যন্ত ভোট যুদ্ধে শেষ হাসি কে হাসবে তা নিয়ে চলছে নানা তর্ক-বিতর্ক।

নসরুল হামিদ বিপুর নেতৃত্বে ঢাকা-৩ আসনে আওয়ামী লীগ এখন যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি শক্তিশালী। সেই তুলনায় গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এখনো ঢাকা-৩ আসনে বিএনপিকে সেভাবে ঐক্যবদ্ধ করে মাঠে নামাতে পারেনি। নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা সেটাই প্রমাণ করে। আ’লীগ প্রচারণা শুরু করলেও বিএনপিকে এখনও এলাকাগুলোতে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সে কারণে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা থেকে শুরু করে বিপুর থেকে সব দিকে পিছিয়ে পড়ছে গয়েশ্বর চন্দ্র। সব কিছু মিলিয়ে ঢাকা-৩ আসনে এখন পর্যন্ত ড্রাইভিং সিটে রয়েছে আওয়ামী লীগ। ব্যাকফুটে বিএনপি।

তবে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত একই হিসাব থাকছে কিনা তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে সন্দেহ থাকলেও আপাতত বলা যাচ্ছে ঢাকা-৩ আসনে আওয়ামী লীগ কিছুটা হলেও স্বস্তিতে রয়েছে।

বুধবার (১২ ডিসেম্বর) ঢাকা-৩ আসনের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

ঢাকা-৩ আসন আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, কেরানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ দুই অংশে ভাগ থাকলেও দলীয় নেতাদের মধ্যে কোনো অন্তর্কোন্দল নেই। এই আসনে নসরুল হামিদকে নির্বাচনে জয়ী করতে নিজেদের অপ্রতিরোধ্য বলে মনে করছেন। তাছাড়া ঢাকা-৩ আসনে গত কয়েক বছর ধরে নসরুল হামিদ বিপু অনেক উন্নয়নমুখী কাজ করছেন। ফলে একটি সত্য এবং কর্মশীল জনপ্রতিনিধি ইমেজ গড়ে উঠছে স্থানীয় ভোটার মাঝে। তাই এই আসনে তাকে শক্ত চ্যালেঞ্জ করার প্রার্থী নেই বলেই তারা মনে করছেন।

এ বিষয়ে আগানগর ইউনিয়নের যুবলীগের সহ-সভাপতি ইয়াসিন মিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, ঢাকা-৩ আসন আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্বাচনের মাঠে নেমেছেন। নসরুল হামিদ বিপুকে আবারও সংসদ সদস্য করতে বদ্ধপরিকর ঢাকা-৩ আসনের স্থানীয় আওয়ামী লীগ।

তিনি আরও বলেন, আমাদের এই ঐক্যবদ্ধ শক্তির প্রয়াসের প্রতিচ্ছবি ইতিমধ্যেই নির্বাচনী প্রচারণার মাঠে দেখা যাচ্ছে। অন্য যেকোনো দলের প্রার্থী থেকে ঢাকা-৩ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী অনেক এগিয়ে।

এদিকে, ঢাকা-৩ আসন বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ আসন থেকে তাদের দলীয় প্রার্থী গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। দলের বিগত সংসদ সদস্য আমান উল্লাহ আমান ঢাকা-২ আসনে চলে যাওয়ার পর স্থানীয় বিএনপিতে নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে।

অন্যদিকে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের সঙ্গে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক নেই। তাদের সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে খোলামেলা আলাপ আলোচনাও নাকি করতে চান না বলেও অভিযোগ রয়েছে।

আর এ সব কারণেই ঢাকা-৩ আসনে নির্বাচনের মাঠে ধীরে ধীরে পিছিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। দ্রুত সময়ের মধ্যে দলীয় সমস্যা সমাধান করা না হলে ঢাকা-৩ আসনে জয়ী হওয়া বিএনপির পক্ষে সম্ভব হবে না বলেও স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা আশংকা করছেন।

এ বিষয়ে জিঞ্জিরা ইউনিয়ন বিএনপির আবুল বাসার নিজের দলীয় পদ না প্রকাশ করার শর্তে বার্তা২৪.কমকে বলেন, নির্বাচনী প্রচারণা চলছে কিছুটা ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে। এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে হারাতে হলে স্লো কাজে কাজ হবে না। দ্রুত এবং শক্তিশালী ভূমিকা নিয়ে এগোতে হবে, যা এখনো ঢাকা-৩ আসন বিএনপি করতে পারছে না।

তিনি বলেন, এর জন্য কিছুটা হলেও গয়েশ্বর চন্দ্র রায় দায়ী। কেননা তিনি ঠিক মতো নির্বাচনী এলাকায় আসছেন না, নেতাকর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাতও করছেন না। তাহলে স্থানীয় নেতাকর্মীরা উৎসাহ পাবে কিভাবে? আর এই কারণে বিএনপির অনেক ওয়ার্ড অফিস বন্ধ রয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর