ভোটে বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে তিন স্তরের নিরাপত্তা ছক

বিবিধ, নির্বাচন

ইসমাঈল হোসেন রাসেল ,স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪ | 2023-08-25 00:23:39

আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ভৌগোলিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে মেট্রোপলিটন এলাকা, মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে ও বিশেষ এলাকায় (পার্বত্য অঞ্চল, দীপাঞ্চল ও হাওর) পৃথক সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হবে। 

কমিশন সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিবেশকে ঘিরে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন। এক্ষেত্রে সহিংসতাপ্রবণ এলাকাগুলোর জন্য থাকবে আলাদা সতর্কমূলক ব্যবস্থা। সাধারণ এলাকা, মেট্রোপলিটন এলাকা ও দুর্গম এলাকার জন্য পৃথক নিরাপত্তা ব্যবস্থার পরিকল্পনা নিয়েছে ইসি। জাতীয় নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আজ বৈঠকে বসছে কমিশন। বৈঠকে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিবেদন অনুযায়ী ভোটের নিরাপত্তা পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হবে। এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিপত্রের মাধ্যমে তা জানিয়ে দেবে।

ইসির পরিকল্পনা অনুযায়ী, ভোট কেন্দ্রের পাহারায় মেট্রোপলিটনের এলাকার সাধারণ ভোটকেন্দ্রে তিনজন পুলিশ (অস্ত্রসহ), লাঠিসহ অঙ্গীভূত আনসার সদস্য ১২ জন (মহিলা-৪, পুরুষ-৮) ও গ্রাম পুলিশ একজন। মেট্রোপলিটনের গুরুত্বপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে পাঁচজন পুলিশ (অস্ত্রসহ), লাঠিসহ অঙ্গীভূত আনসার সদস্য ১২ জন (মহিলা-৪, পুরুষ-৬) ও গ্রাম পুলিশ একজন। মেট্রোপলিটনের এলাকার বাইরে সাধারন ভোটকেন্দ্রে একজন পুলিশ (অস্ত্রসহ), লাঠিসহ অঙ্গীভূত আনসার সদস্য ১২ জন (মহিলা-৪, পুরুষ-৮) ও গ্রাম পুলিশ একজন। মেট্রোপলিটনের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে দুইজন পুলিশ (অস্ত্রসহ), লাঠিসহ অঙ্গীভূত আনসার সদস্য ১১ জন (মহিলা-৪, পুরুষ-৭) ও গ্রাম পুলিশ একজন। এবং বিশেষ এলাকার গুরুত্বপূর্ণ (পার্বত্য এলাকা, দীপাঞ্চল ও হাওর) দুইজন পুলিশ (অস্ত্রসহ), লাঠিসহ অঙ্গীভূত আনসার সদস্য ১২ জন (মহিলা-৪, পুরুষ-৮) ও গ্রাম পুলিশ একজন। আর বিশেষ এলাকার গুরুত্বপূর্ণ তিনজন পুলিশ (অস্ত্রসহ), লাঠিসহ অঙ্গীভূত আনসার সদস্য ১২ জন (মহিলা-৪, পুরুষ-৮) ও গ্রাম পুলিশ একজন নিয়োগ করা হচ্ছে। 

ভোট কেন্দ্রের বাইরে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবেন সেনা ও নৌবাহিনীর সদস্যরা। র‌্যাব, বিজিবি, কোস্টগার্ড ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে টহল দেবেন। তারা ভোট কেন্দ্রের ভেতরে বা ভোট গণনা কক্ষে ঢুকতে পারবেন না। অবশ্য রিটার্নিং বা প্রিসাইডিং কর্মকর্তা চাইলে স্ট্রাইকিং ও মোবাইল টিমের সদস্যরা প্রয়োজনে ভোট কেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশ করতে পারবেন।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও আচরণবিধি প্রতিপালনে দেড় হাজারের বেশি জুডিশিয়াল ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে থাকবেন। সবমিলিয়ে ভোটের মাঠের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ছয় লাখের বেশি সদস্য মাঠে নামছেন। নির্বাচন কমিশনের একাধিক সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।

ভোট কেন্দ্রে নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরা ভোট গ্রহণের দুইদিন আগে এবং ভোটের দিন ও ভোটের পরের দিনসহ চারদিন মাঠে থাকবেন। আর অঙ্গীভূত আনসার সদস্যরা ভোট গ্রহণের তিন দিন আগে মাঠে নেমে থাকবেন পরের দিন পর্যন্ত। আর আগামী ২৪ থেকে ২৬ ডিসেম্বরের মধ্যে যেকোনোদিন মাঠে নামবে সেনাবাহিনী। তবে এর আগে ১৫ ডিসেম্বর থেকে পরিস্থিতি অবলোকন (রেকি) করবেন তারা। সেনাবাহিনীর প্রতিটি টিমের সঙ্গে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হবে। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের পাঠানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এবার মোট ভোটার ১০ কোটি ৪২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৩ জন এবং ৩০০ আসনে মোট ভোট কেন্দ্র ৪০ হাজার ১৮৩টি।

 

এ সম্পর্কিত আরও খবর