বাগেরহাট-৩: মাঠে সরব নৌকা, নেই ধানের শীষ

বিবিধ, নির্বাচন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-10 05:52:53

একাদশ সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে বাগেরহাট-৩ (মোংলা-রামপাল) আসনে প্রচারণায় নৌকার প্রার্থী মাঠে সরব থাকলেও তেমনটা আনাগোনা নেই ধানের শীষ প্রার্থীর।

এ আসনটিতে পাঁচজন প্রতিদ্বন্দ্বী থাকলেও মূলত প্রধান দুই প্রতিদ্বন্ধী দল হিসেবে মাঠে আছেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী দুইবারে এমপি হাবিবুন নাহার এবং ঐক্যফ্রন্টের মনোনীত প্রার্থী জামায়াত নেতা মাওলানা অ্যাডভোকেট শেখ আ. ওয়াদুদ।

এছাড়া অন্য যে তিন প্রার্থী আছেন তারা হলেন- হাত পাখা প্রতীক নিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাওলানা শাহজালাল সিরাজী, গোলাপ ফুল নিয়ে জাকের পার্টির মো. রেজাউল করিম ও লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে জাতীয় পার্টির (জাপা) মো. সেকেন্দার আলী মনি।

মাঠে সরব উপস্থিতি না থাকার বিষয়ে মাওলানা ওয়াদুদ বলেন, ‘আমাদের নেতাকর্মীদের নানাভাবে ভয়ভীতি ও মামলা দিয়ে মাঠে নামতে দেয়া হচ্ছে না। বৃহস্পতিবারও আমাদের কয়েকজন কর্মীর নামে রামপাল থানায় মামলা দেয়া হয়েছে। এত কিছুর মধ্য দিয়েও আমি গ্রামাঞ্চলে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছি।’

অপরদিকে হাত পাখার প্রার্থী মাওলানা শাহজালাল সিরাজী বলেন, ‘আমার পোস্টার লাগানো ও প্রচারণায় বাধা দেয়া হচ্ছে। আমার কর্মীদের মারধর এবং হুমকি ধামকি দেয়া হচ্ছে।’

এদিকে বরাবরই আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এ আসনটিতে আবারো নৌকার প্রার্থী হাবিবুন নাহারের বিজয়ী হওয়ার সম্ভবনার কথা বলছেন ভোটররা।

সাধারণ ভোটারদের মতে, এ আসনে মূলত লড়াই হবে নৌকা ও ধানের শীষ প্রতীকের মধ্যে। আওয়ামী লীগের প্রার্থী দিন-রাত সমানভাবে মোংলা-রামপাল জনসংযোগ করলেও প্রতিপক্ষ ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থীর জনসংযোগ এখন পর্যন্ত চোখে পড়েনি। রাস্তাঘাট, দোকানপাট সব জায়গায় নৌকার প্রার্থীর পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে।

এছাড়া নৌকা প্রতীকের পক্ষে শহর ও শহরতলী জুড়ে চলছে মাইকিং প্রচারণা। কিন্তু ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী জামায়াত নেতা ওয়াদুদের মাইকিং তো দূরে থাক, কোন পোস্টার, ব্যানার ফেস্টুনও চোখে পড়ছে না।

তবে কিছু জায়গায় ধানের শীষ প্রতীক সম্বলিত জামায়াত নেতা ওয়াদুদের পোস্টার সাঁটানো দেখা গেলেও তা নিয়ে আবার চরম বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয় বিএনপি-জামায়াত জোটের মধ্যে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মী বলেন, আমাদের প্রতীক ব্যবহার করেছে ঠিকই, কিন্তু পোস্টারে আমাদের নেতা-নেত্রীদের (জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান) ছবি দেয়া হয়নি। এতে দলীয় সাধারণ লোকজনের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

রামপালের নওশের আলী ও খাঁন আলী আজম বলেন, দেশে জামায়াত বলতে কিছু আছে নাকি। যদি বিএনপির প্রার্থী হতো তাহলে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সঙ্গে মাঠে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতো।

কারণ হিসেবে তারা বলেন, এখানে প্রায় ৭০ হাজার সংখ্যালঘু ভোটার রয়েছে, তারা কখনোই জামায়াতকে ভোট দেয়না। যে কারণে ভোটের দিক দিয়ে জামায়াত প্রার্থী অনেক পিছিয়ে থাকে। মূলত জামায়াত এ আসনে ভোটে পারবে না, আবার বিএনপিকেও ছাড়বে না।

মোংলার মামার ঘাটের বাসিন্দা মো. শরিফুল ইসলাম, ইসরাফিল শেখ বলেন, এখানে দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক ও হাবিবুন নাহার এমপি হয়ে আসছেন। সে সুবাদে এলাকায় তারা ব্যাপক উন্নয়নও করেছেন।

তাই এবারও আওয়ামী লীগের প্রার্থী দুইবারের এমপি হাবিবুন নাহারই বিজয়ী হবেন বলে আশাবাদী তারা।

মোংলা উপজেলা নির্বাচন কমিশনার মো. জাকারিয়া জানান, মোংলা-রামপাল নিয়েই গঠিত বাগেরহাট-৩ আসন। এ আসনটিতে মোট ভোটার রয়েছেন দুই লাখ ২৬ হাজার। তারমধ্যে সংখ্যালঘু ভোটার রয়েছেন প্রায় ৭০ হাজারের মতো।

এ সম্পর্কিত আরও খবর