ইভিএম কিনতে আরো ৩৯০ কোটি টাকা চেয়েছে ইসি

বিবিধ, নির্বাচন

আসিফ শওকত কল্লোল, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-22 10:37:02

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কিনতে আরো ৩৯০ কোটি টাকা বিশেষ বরাদ্দের আবেদন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সম্প্রতি এক চিঠিতে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে এ আবেদন করা হয়। অর্থমন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ছয়টি আসনের জন্য ইভিএম আমদানি করতে ট্রাস্ট ব্যাংকে ঋণপত্র খোলা হবে। ফলে অর্থ সেখানেই ব্যবহার করা হবে। এছাড়া পরবর্তী জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে আরো ১০০ আসনের জন্য ইভিএম কিনতেও এ অর্থ ব্যয় করা হবে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘এখনই ৮৪ হাজার ইভিএম কেনার দরকার নেই। কারণ ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনে মাত্র ৬টি আসনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। ফলে এখন এতো টাকার দরকার নেই। এমনিতেই ইভিএম’র দাম নির্ধারণ করা হয়েছে কয়েকগুণ।’

সূত্রে জানা গেছে, ভারতের চেয়ে ১১ গুণ বেশি দামে ইভিএম কিনছে বাংলাদেশ। ইসি একটি ইভিএম কিনতে খরচ করবে ২ লাখ ৩৪ হাজার ৩৭৩ টাকা। তবে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ২০-২২ হাজার টাকা দরে ইভিএম সরবরাহ করতে চেয়েছিল। কিন্তু আমদানি করা ইভিএমে বৈশিষ্ঠ্যের দিক থেকে কিছু পার্থক্য থাকলেও দাম অস্বাভাবিক বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, ইভিএম কিনতে সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশন বিশেষ সহায়তা তহবিল থেকে ইসিকে ১১০ কোটি টাকা দিয়েছে। যার মধ্যে ১০৫ কোটি টাকা যন্ত্রপাতি কিনতে ব্যয় করা হবে।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের বাস্তবায়নাধীন ইভিএম প্রকল্পটি গত ১৮ সেপ্টেম্বর একনেকে অনুমোদিত হয়। প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় তিন হাজার ৮২৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। প্রকল্পটি সম্পূর্ণ জিওবি অর্থায়নে বাস্তবায়িত হবে। প্রকল্পটির অনুমোদিত বাস্তবায়ন মেয়াদ চলতি বছরের জুলাই থেকে আগামী ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত।

ইসি চিঠিতে জানিয়েছে, এই অর্থবছরে বরাদ্দের পরিমাণ এক হাজার ৯৯৮ কোটি ৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা। ইসি বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাচন এবং একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ছয়টি আসনের সব কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহারের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। তাই চলতি বছরের বরাদ্দ থেকে আরো ৩৯০ কোটি টাকা মূলধন খাতে এবং ১০ কোটি টাকা রাজস্ব খাতে মিলিয়ে ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া প্রয়োজন। এমতাবস্থায় নির্বাচন ব্যবস্থায় তথ্যপ্রযুক্তি প্রয়োগের লক্ষ্যে ইভিএম ব্যবহার শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ইভিএম ক্রয় এবং আনুষঙ্গিক ব্যয় নির্বাহের জন্য প্রকল্পের অনুকূলে ৪০০ কোটি বরাদ্দ প্রদানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে ইসির নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

এদিকে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ইভিএম প্রকল্পের জন্য প্রথম পর্যায়ে আমরা ৮৪ হাজার ইভিএম কিনতে চাই। এ জন্য অর্থমন্ত্রণালয়ে দুই হাজার কোটি টাকার সংস্থান রাখতে বলা হয়েছে। অন্যদিকে পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, বিষয়টি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হওয়ায় সেটা দ্রুত পরিকল্পনামন্ত্রীর কাছে পেশ করা হবে।

আরো জানা গেছে, ইভিএম তৈরির ক্ষেত্রে কারিগরি কমিটির সুপারিশ পুরোপুরি আমলে নেয়নি ইসি। ভোটারদের আস্থা ও গ্রহণযোগ্যতার জন্য কমিটি ইভিএমে ভোটার ভ্যারিয়েবল পেপার অডিট ট্রেইল বা ভিভিপিএটি (যন্ত্রে ভোট দেওয়ার পর তা একটি কাগজে ছাপা হয়ে বের হবে) সুবিধা রাখার পরামর্শ দিলেও তা রাখা হয়নি। ফলে ভোট পুনঃগণনার প্রয়োজন হলে ইসিকে সমস্যায় পড়তে হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর