দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবে না: ইশতেহারে ঐক্যফ্রন্ট

বিবিধ, নির্বাচন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-04-13 09:39:51

ক্ষমতার ভারসাম্য নিশ্চিত করার লক্ষে একই ব্যক্তিকে পর পর দুই মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী না রাখা নিয়ম এবং সংসদে উচ্চ কক্ষ সৃষ্টি করবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

সোমবার (১৭ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে রাজধানীর মতিঝিলের হোটেল পূর্বাণীতে এক সংবাদ সম্মেলনে ইশেতহার প্রকাশ করে ঐক্যফ্রন্ট।

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে ইশতেহার ঘোষণা করেন।

ইশতেহারে ৩৫ টি প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। যেগুলো ঐক্যফ্রন্ট ক্ষমতায় আসলে বাস্তবায়ন করবে বলে জানানো হয়।

'প্রতিশ্রুতির মধ্যে একটি হল, সংবিধানের ১১৫ এবং ১১৬ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে নিম্ন আদালতকে পুরোপুরি সুপ্রিম কোর্টের অধীনে দেয়া হবে।'

'সবার সাথে আলোচনার মাধ্যমে শুধু অনাস্থা ভোট এবং অর্থবিল ছাড়া যে কোনো ক্ষেত্রে দলীয় সংসদ সদস্য দলের বিরুদ্ধে ভোট দিলেও তাদের সংসদ সদস্য পদ শূন্য হবে না, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে এমন সংশোধনী আনা হবে।'

'সংসদে উচ্চ কক্ষ সৃষ্টি করা হবে। সকল অংশীজনের সাথে আলোচনার মাধ্যমে উচ্চ কক্ষের গঠন প্রক্রিয়া নির্ধারণ করা হবে।'

'সকল সাংবিধানিক পদে নিয়োগের জন্য সুস্পষ্ট আইন তৈরি করা হবে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সহ সব সাংবিধানিক পদে নিয়োগের জন্য বিরোধী দলের প্রতিনিধি সহ স্বাধীন কমিশন গঠন করা হবে। কমিশনের প্রাধমিক ভাবে মনোয়ন প্রাপ্তদের নাম জনগনের মতামতের জন্য প্রকাশ করা হবে। সংসদীয় স্থায়ী কমিটির উল্লেখযোগ্য পদ সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বণ্টন করা হবে।'

'প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য আনা হবে। মন্ত্রী সভাসহ প্রধানমন্ত্রীকে সংসদের কাছে দায়বদ্ধ থাকার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করা হবে। পর পর দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকা যাবে না।'

'সংসদে ডেপুটি স্পিকার বিরোধীদলীয় সদস্যদের মধ্যে থেকে নির্বাচন করা হবে।'

'আইন এবং রাষ্ট্রীয় নীতি প্রণয়ন এবং পর্যালোচনাই হবে  সংসদ সদস্যদের মূল কাজ। খবরদারি নয়, সংসদ সদস্যগণ উন্ননয়নে স্থানীয় সরকারের সাথে সহায়তামূলক ভূমিকা পালন করবেন।'

'বিরোধী দলের সাংবিধানিক মর্যাদা নিশ্চিত করা হবে। রাষ্ট্র পরিচালনায় বিরোধী দলের মতকে যথাযথ গুরুত্ব দেয়া হবে।'

এছাড়া পুলিশ ও সামরিক বাহিনী ছাড়া সরকারি চাকরিতে প্রবেশের কোনও বয়সসীমা থাকবে না। একই সঙ্গে পিএসসি ও জেএসসি পরীক্ষাও বাতিল করবে ঐক্যফ্রন্ট।

ইশতেহারে বলা হয়, প্রজাতন্ত্রের সব ক্ষমতার মালিক জনগণ। বিজয়ী হলে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আনাসহ অনেক প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেছে। যেগুলো ৫ বছরের মধ্যে পূরণ করা হবে।

অন্যান্য প্রতিশ্রুতির মধ্যে রয়েছে, সর্বদলীয় সত্যানুসন্ধান ও বিভেদ নিরসন কমিশন গঠন করা, হত্যা ও গুম পুরোপুরি বন্ধ করা, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন বাতিল করা।

গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি হবে ১২ হাজার টাকা। প্রথম বছরে গ্যাস, বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হবে না। ১০০ ইউনিট পর্যন্ত ব্যাবহারকারীর বিদ্যুৎতের দাম ৫ বছর বাড়বে না।

নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা কারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা হবে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী, গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি অ্যাড. সুব্রত চৌধুরী, গণফোরামের নেতা রেজা কিবরিয়া, জগলুল হায়দার আফ্রিক, জেএসডির শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সুকমল বড়ুয়া,  বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, ডা. এ জে ড এম জাহিদ হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপচার্য অধ্যাপক এমাজ উদ্দিন আহমেদ, সিনিয়র সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ প্রমুখ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর