ঢাকা-১২: প্রচারণায় বিএনপি না থাকায় হতাশ ভোটাররা

বিবিধ, নির্বাচন

মনি আচার্য্য,স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪ | 2023-08-25 18:12:37

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটের দৌড়ে প্রার্থীরা নিজেদের এগিয়ে রাখতে রাত দিন প্রচারণা চালাচ্ছেন।

কিন্তু প্রচারণার ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে ঢাকা-১২ আসনে। এখানে নির্বাচনী প্রচারণায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী যতটা সরব ততটাই নীরব বিএনপির প্রার্থী। আর এক পেশে এমন প্রচারণা দেখে আসনটির ভোটাররা হতাশ।

কেননা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের দিন তারা যেমন হাড্ডাহাড্ডি লড়াই প্রার্থীদের মধ্যে দেখতে চান, তেমনি দেখতে চান প্রচারণার মাঠেও। তাই প্রচারণার মাঠে লড়াই দেখতে না পেয়ে ভোটের দিন সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা নিয়ে সন্দিহান অনেক ভোটাররা।

ঢাকা-১২ আসন থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, বিএনপির প্রার্থী সাইফুল আলম নীরব, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থী শাহীন খাম, জাতীয় পার্টির প্রার্থী নাসির উদ্দিন সরকার, বাংলাদেশ বিল্পবী ওয়ার্কার্স পার্টি প্রার্থী মো.জোনায়েদ আব্দুর রহিম সাকি ও বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মোহাম্মদ শওকত হাওলাদার মধ্যে লড়াই হচ্ছে।

তবে মূলত লড়াই চলছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও বিএনপির প্রার্থী সাইফুল আলম নীরবের মধ্যে। তবে নির্বাচনী প্রচারণার মাঠে লড়ায়ের ছিটেফোঁটা না পেয়ে আশাহত হচ্ছেন ভোটাররা।

ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা এমন নির্বাচনী পরিবেশ আশা করেননি। যেখানে শুধুমাত্র একজন প্রার্থী প্রচারণায় এলাকা মুখোর থাকবে, আর বাকিসব প্রার্থীদের ছিটেফোঁটা থাকবে না। অনেকের মতে প্রচারণায় মাঠে এমন দৃশ্য ভোটের পরিবেশকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। তাছাড়া একজন প্রার্থী ব্যতীত অন্য প্রার্থীরা ভোটে জয়ী হলে তাদের জন্য কী ধরণের কাজ করবেন তাও তারা জানতে পারছেন না।

ফলে ৬ জন প্রার্থীর মধ্যে তারা কাকে ভোট দিবেন তা কীভাবে নির্বাচন করবেন সে বিষয় নিয়ে চিন্তায় পড়ে গেছেন ভোটাররা। সোমবার (১৭ ডিসেম্বর) ঢাকা-১২আসনের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

তেজগাঁও, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল, হাতিরলঝিল, শেরেবাংলা নগর, রমনার থানার একাংশ নিয়ে ঢাকা-১২ আসন গঠিত। এসব এলাকা সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, এসব থানার প্রতিটি ওয়ার্ডে দেখা গেছে আওয়ামী লীগের একাধিক নির্বাচনী অফিস ও প্রচারণার কেন্দ্র রয়েছে। এছাড়া প্রতিটি এলাকার অলিতে গলিতে রয়েছে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর ব্যানার পোস্টার। কিন্তু কোথাও বিএনপিসহ অনন্য প্রার্থীদের অফিস কিংবা প্রচারণার কোনও আলামত দেখা যায়নি।

কিন্তু সকল দলের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছাড়া অন্য প্রার্থীদের প্রচারণার মাঠে উপস্থিতি না পেয়ে ভোটাররা চরম পর্যায়ে অবাক।

এ বিষয়ে ঢাকা-১২ আসনের ২৭ নং ওয়ার্ডের ভোটার ফরহাদ হোসেন ইভান বার্তা২৪.কমকে বলেন, এ কেমন নির্বাচনী পরিবেশ যেখানে শুধু মাত্র আওয়ামী লীগের প্রার্থীর প্রচারণা। এসব দেখে তো মনে হচ্ছে নির্দিষ্ট কোনো দল নির্বাচন করছে, অন্য কেউই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। আমিতো জানিই না এই আসনের বিএনপির প্রার্থী কেমন। কারণ আমি তাকে কোনও দিনই প্রচারণার মাঠেই দেখিনি।

তিনি বলেন, এখন আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য প্রার্থীরা কেন নির্বাচনের মাঠে প্রচারণার জন্য আসতেছে না তা জানি না। তাদের কি প্রচারণায় আসতে দেওয়া হচ্ছে নাকি না তা নিয়েও সবার মনে প্রশ্ন জাগছে।

ঢাকা-১২ আসনের ৩৬ নং ওয়ার্ডের ভোটার মো.নূর বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমাদের ওয়ার্ডে বিএনপির কোনও অফিস নেই। কোনও প্রচারণাও নেই। ঢাকা-১২ আসনে বিএনপির প্রার্থী নির্বাচন অংশ নিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু মাঠে তাকে নামতে দেওয়া হচ্ছে না বলে শুনছি। কিন্তু একথা সত্য কিনা তা জানিনা। তবে এক প্রার্থী ছাড়া অন্যদের উপস্থিতি মাঠে না থাকা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ভালো নয়। আমরা চাই সকল দলের প্রার্থীরা সমান সুযোগ পেয়ে নির্বাচন করুক। তাদের মধ্যে সব থেকে ভালো প্রার্থী খুঁজে নেওয়ার দায়িত্ব আমাদের।

অন্যদিকে ভোটারদের মধ্যে প্রচারণা নিয়ে ধারণা সৃষ্টি হচ্ছে যে, হামলা মামলার ভয়ে বিশেষ করে বিএনপির প্রার্থীর লোকজন মাঠে নামতে পারছেন না। তাদের বিরুদ্ধে অনেক মামলা দেওয়া হচ্ছে যেন তারা মাঠে নামতে না পারেন। তবে এসব অভিযোগ কেউই নিশ্চিত করতে পারছেন না। আর বিএনপির কোনও প্রতিনিধিও পাওয়া যাচ্ছে না ঢাকা-১২ আসনে প্রচারণায় তারা কেন পিছিয়ে তা নিয়ে কথা বলার জন্য।

এ সম্পর্কিত আরও খবর