ঢাকা-৫ আসনে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা

বিবিধ, নির্বাচন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 08:05:21

ঢাকা-৫ আসনে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখছেন স্থানীয় ভোটাররা। আর এই ত্রিমুখী লড়াই হবে প্রধান তিন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের মধ্যে।

একাধিক দফায় নির্বাচিত হওয়ার কারণে স্থানীয়দের কাছে পরিচিত মুখ আওয়ামী লীগ প্রার্থী হাবীবুর রহমান মোল্লা। আবার ঢাকা সিটি করপোরেশনের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন, সরকার বিরোধী আন্দোলনে আলোচিত মুখ নবীউল্লাকে প্রার্থী করেছে বিএনপি।

মহাজোট গঠন হলেও রাজধানীর এই আসনটি উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। এই আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হয়েছেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক ফুটবলার মীর আব্দুস সবুর আসুদ। ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা টকশোর জনপ্রিয় মুখ আসুদকে শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে দেখছেন স্থানীয়রা।

রায়েরবাগের চা দোকানী তোফাজ্জল হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, এই আসনে ভোটে জিততে হলে দুটি বিষয় কাজ করে। এই আসনে বহিরাগত প্রার্থীরা কখনই সুবিধা করতে পারে নি। এরপর কুমিল্লা অঞ্চলের ভোটার বেশি থাকায় কুমিল্লা অরিজিনের প্রার্থীরা কিছুটা সুবিধা পেয়ে থাকেন।

এখানে হেভিওয়েট প্রার্থীরা কখনও সুবিধা করতে পারেনি। ড. কামাল হোসেন ১৯৮৬ সালে নির্বাচন করে বিজয়ী হতে পারেন নি। ভোটের দুই ফ্যাক্টরে এগিয়ে রাখছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী আসুদকে। তিনি বংশপরম্পরায় এই আসনের বাসিন্দা। ছোট থেকে বেড়ে ওঠা, ব্যবসা-বাণিজ্য সবসুত্রেই এলাকার সঙ্গে বাঁধা। আবার তার নানার বাড়ি কুমিল্লায় হওয়ায় সেই দিক থেকেও থাকবেন বিশেষ সুবিধায়।

সোমবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে রায়েরবাগ এলাকায় গণসংযোগ করতে দেখা গেছে জাপা নেতা আসুদকে। নেতাকর্মীদের নিয়ে দোকানে দোকানে গিয়ে গলা মেলাচ্ছিলেন। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমি এই এলাকার মাটি মানুষের পাশে থেকে বড় হয়েছি। দীর্ঘদিন ধরে এলাকার সামাজিক-সাংস্কৃতিক-ক্রীড়া ও ধর্মীও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্তি আছি। আমি এই এলাকার মাটি মানুষকেও চিনি। তারাও আমাকে এবং আমার পরিবারকে ভালো জানে।

রংপুর অঞ্চলের চেয়েও এখানে লাঙ্গলের জোয়ার বেশি। ৩০ ডিসেম্বর এখানে ভোট বিপ্লব ঘটবে। মানুষ ভোট দিতে পারলে আমাদের বিজয় নিশ্চিত। এখানে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নানা উপদলে বিভক্ত। তারা এক গ্রুপ ভোট করছে অন্যরা গোপনে বিরোধিতা করছে। অনেকেই জাতীয় পার্টিতে যোগ দেওয়ার জন্য যোগাযোগ করছে বলে জানান তিনি।

জাতীয় পার্টিতে কোনও বিভক্তি বা কোন্দল নেই। এখানকার জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা নিজের পকেটের পয়সা খরচ করে আমার জন্য ক্যাম্পেইন করছে। নির্বাচনী প্রচারণায় নানা রকম বাঁধা বিপত্তি সত্ত্বেও এক রাউন্ড শেষ করেছি। এখন আবার দ্বিতীয় রাউন্ড শুরু করেছি। মানুষের দারুণ সাড়ায় আমি অবিভুত।

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, ডেমরা ও কদমতলী থানার আংশিক নিয়ে গঠিত ঢাকা-৫ আসন ঘুরে আ’লীগ প্রার্থীর পোস্টারের আধিক্য দেখা গেছে। পোস্টার টানানোর দিক থেকে নৌকার পর পরেই আছেন লাঙ্গল, এরপর রয়েছে হাতপাখার পোষ্টার। অল্প সংখ্যক পোষ্টার দেখা গেছে ধানের শীষের প্রার্থী নবীউল্লাহ’র।

গৃহিনী সাবিনা ইয়াসমিন জানান, অন্যান্য নির্বাচনের মতো এবার এখনও প্রার্থীরা বাড়ি বাড়ি যাওয়া শুরু করেনি। শুধু আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পোষ্টার দেখছি। কেউই এখন বাড়িতে আসেনি ভোট চাইতে। যে কারণে ভোট কাকে দেবেন সে বিষয়ে এখন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন নি।

১৯৭টি ভোট কেন্দ্রে মোট ভোটার রয়েছে ৫ লাখ ৪২ হাজার। ২০০১ সালে সর্বোচ্চ ৭৮ শতাংশ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। অন্যান্য সময়ে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশের মধ্যে উঠা-নামা করেছে। এবার ভোটারদের উপস্থিতি কম হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। সাড়ে ৩ লাখের মতো ভোট কাস্ট হতে পারে। জিততে হলে দুই লাখের মতো ভোটের প্রয়োজন পড়বে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর