‘গুজব’ নির্বাচনের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি

বিবিধ, নির্বাচন

মনি আচার্য্য, শাহরিয়ার হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-14 00:38:01

একাদশ সংসদ নির্বাচনের দিন যত এগোচ্ছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে হুমকি বাড়ছে- এমন গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে। নির্বাচনের দিন বা আগের কয়েক দিন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটানোর ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলেও গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য রয়েছে।

নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট বা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর জন্য সব থেকে বড় মাধ্যম হিসবে ব্যবহার হতে পারে সাইবার ওয়ার্ল্ডের গুজব। তবে এ বিষয়টি আগে থেকেই আঁচ করতে পেরে নানা প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থা।

কিন্তু এত কিছুর পরেও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অনলাইনে গুজব এখনো সব থেকে বড় হুমকি বলে মনে করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থাগুলো।

গোয়েন্দা বাহিনীদের কাছে তথ্য রয়েছে, নির্বাচনী পরিবেশকে অশান্ত পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিতে পারেনি। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা তাদের ব্যর্থতা ঘোচাতে নির্বাচনের দিন ও এর আগের কয়েকটি দিনকে বেঁচে নিতে পারে। সেক্ষেত্রে তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করে নানা আইন বিরোধী কার্যক্রম চালাতে পারে।

গত কয়েক দিন ধরে সরকারি দলের বিভিন্ন পর্যায় থেকে বলা হচ্ছে, ভোটের দিন অথবা তিন-চার দিন আগে বিভিন্ন গোষ্ঠী নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ ও বানচাল করতে নানা অপতৎপরতা চালাতে পারে।

নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকেও বলা হচ্ছে একাদশ সংসদ নির্বাচনে কমিশনের জন্যও সাইবার ওয়ার্ল্ডের গুজব অন্যতম একটি চ্যালেঞ্জ। আর এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য যে কোনো ধরনের গুজব রোধে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ করবে ইসির বিশেষ সেল।

এ বিষয়ে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশে এবারের নির্বাচন এমন একটা সময়ে হচ্ছে যখন এর আগের যেকোনো নির্বাচনের তুলনায় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহার হচ্ছে অনেক বেশি। এর আগের কোনো সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে বিষয়টি নিয়ে এতটা ভাবতে হয়নি। বিষয়টি এক ধরনের উদ্বেগ যে তৈরি করছে সেটি বোঝা যাচ্ছে।’

অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি সূত্র মতে, নির্বাচনের ইশতেহার ঘোষণার পর সাইবার ওয়ার্ল্ডে গুজব হবে বা হতে পারে এমন একটি তথ্য তাদের কাছে ছিল। সেই তথ্য অনুযায়ী তারা কাজও করেছেন অনেক। কিন্তু সর্বশেষ কিছু গোয়েন্দা তথ্যে দেখা গেছে গুজব ছড়িয়ে নির্বাচনী পরিবেশ অস্থিতিশীল করে তুলতে একটি গোষ্ঠী আগের থেকে বেশি সক্রিয়।

গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য এসেছে, প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাজে লাগিয়ে গোষ্ঠীটি ইন্টারনেটে গুজব ছড়াতে কাজ করছে। আর এ তথ্যের ভিত্তিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ হতে বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্যা নজরুল ইসলাম বার্তা২৪কে বলেন, ‘নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইন্টারনেটে গুজব ছড়িয়ে পরিস্থিতি খারাপ করার থ্রেট আগে থেকেই আছে এবং এখনো আছে। সম্প্রতি প্রবাসীদের দিয়ে গুজব ছড়ানোর বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। আমরা এই বিষয়ে ইতোমধ্যে কাজও শুরু করেছি।’

অন্যদিকে জানা গেছে গুজব ঠেকাতে আগের থেকে বেশি তৎপরতা বাড়িয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থাগুলো। তারা বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের মনিটরিং সেল গঠন করেছে। সর্বশেষ বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ হতে গুজবের বিরুদ্ধে মনিটরিং ও অ্যাকশন নেওয়ার জন্য বিশেষ সেল গঠন করা হয়েছে। যা ‘৯৯৯’ এর মাধ্যমে পরিচালিত হবে। এছাড়া ডিএমপি ও পুলিশ সদর দফতরে ইন্টারনেট গুজব বন্ধ করার জন্য বিশেষ সেল রয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর