পটুয়াখালী-২: সৌভাগ্যের সাত কি ছুঁতে পারবেন আ. স. ম ফিরোজ !

বিবিধ, নির্বাচন

আব্দুস সালাম আরিফ,ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, পটুয়াখালী | 2023-09-01 19:01:26

পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলা নিয়ে গঠিত সংসদীয় আসন পটুয়াখালী-২। স্বাধীনতা পরবর্তী নির্বাচন গুলোতে এ আসনে অধিকাংশ সময়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। এর মধ্যে টানা ছয় বারের মতো এমপি নির্বাচিত হন বর্তমান জাতীয় সংসদের চীফ হুইপ আ.স.ম ফিরোজ। এবারও তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন নৌকার মাঝি হয়ে। তবে এ আসনে বিএনপি নেতা সাবেক সংসদ সদস্য শহিদুল আলম তালুকদারের স্ত্রী সালমা আলম ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। বাউফল উপজেলায় শহিদুল আলমের শক্ত অবস্থানের কারণে এবার ভোটের মাঠে একটি শক্ত লড়াই হবে বলেও মনে করেন দুই দলের তৃনমূল নেতাকর্মীরা।

সংসদীয় আসন ১১২, পটুয়াখালী-২ এ মোট ভোটার সংখ্যা  ২ লাখ ৫১ হাজার ৮৫৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ২৬ হাজার ৭০৭ এবং মহিলা ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ২৫ হাজার ১৫১ জন। গত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে এ নির্বাচনে ৩২ হাজার ৯৬৬ জন ভোটার বৃদ্ধি পেয়েছে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ের নির্বাচনগুলোতে এই আসেন আওয়ামী লীগের আধিপত্য ছিলো বেশি। বিশেষ করে বর্তমান আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের চীফ হুইপ ৫ বার আওয়ামী লীগ থেকে ও একবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। আর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আ.স.ম ফিরোজ সপ্তম বারের মতো এমপি হতে চান। সে লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নেমেছে ফিরোজ সমর্থকরা। তবে ফিরোজের সেই আশায় কিছুটা হলে কালো মেঘের ছায়া আছে। বিশেষ করে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সালমা আলমের পেছনে নির্বাচনী মাঠে কাজ করবেন মোঃ শহিদুল আলম তালকুদার।

তবে বাউফলে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে বর্তমানে অভ্যন্তরীণ গ্রুপিংও অনেকটা চাঙ্গা। বিশেষ করে বাউফলের পৌর মেয়র জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউল হক জুয়েল এবং বাউফল উপজেলা চেয়ারম্যান ইঞ্জি: মজিবুর রহমানের একটি গ্রুপ আ.স.ম ফিরোজের সাথে দীর্ঘদিন যাবত প্রকাশ্য বিরোধীতা করছেন। যে বিষয়টি নির্বাচনে একটি বিরুপ প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করেন দলটির তৃনমূল নেতাকর্মীরা। সর্বশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আ.স.ম ফিরোজ যাতে প্রার্থী হতে পারেন সে জন্য আদালতেরও গিয়েছেন মেয়র জিয়াউল হক জুয়েল।

১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারীর নির্বাচনে আ.স.ম ফিরোজ প্রথম এমপি নির্বাচিত হন। সে সময়ে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দী ছিলো বিএনপির মতিউর রহমান। এর পর ১৯৮৬ সালের ৭ মে নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আ.স.ম ফিরোজ দ্বিতীয় বারের মতো এমপি নির্বাচিত হন সে সময়ে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দী ছিলো জাতীয় পার্টির মোঃ রুহুল আমিন। ১৯৯১ সালে আ.স.ম ফিরোজ তৃতীয় বারের মতো এমপি নির্বাচিত হন। এর পর ১৯৯৬ সালে বিএনপি শহিদুল আলম তালুকদারকে মাত্র ২৪ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে ৪র্থ বারের মতো এমপি নির্বাচিত হন আ.স.ম ফিরোজ। তবে ২০০১ সালের নির্বাচনে আ.স.ম ফিরোজ বিএনপি প্রার্থী শহিদুল আলমের কাছে ১৬ হাজার ৯৩১ ভোটে পরাজিত হন। এরপর ২০০৮ এ বিএনপি প্রার্থী একে এম ফারুক হোসেন তালুকদারকে পরাজিত করে ৫ম বারের মত এমপি নির্বাচিত হন ফিরোজ। এবং সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে আ.স.ম ফিরোজ বিনাপ্রদ্বন্দ্বিতায় ছয় বারের মত এমপি নির্বাচিত হন।

তবে এবারও এ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হতে হলে আ.স.ম ফিরোজকে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসনেও কাজ করতে হবে। আর আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসন করতে না পারলে ফলাফলে প্রভাব পরতে পারে বলেও মনে করেন স্থানীয় ভোটাররা। অপরদিকে বিএনপির মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল থাকলেও তাদের সেই বিরোধীতার বরফ অনেকটাই গলতে শুরু করেছে বলে দাবী দলটির একাধিক নেতা কর্মীর।

এ সম্পর্কিত আরও খবর