কুষ্টিয়ার উন্নয়নে হানিফের পাল্লা ভারী

বিবিধ, নির্বাচন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, কুষ্টিয়া, বার্তা২৪ | 2023-08-25 00:39:07

বিগত ৫ বছরে রেকর্ড পরিমাণ উন্নয়ন আর ব্যক্তি ইমেজের কারণে কুষ্টিয়া-৩ সদর আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহবুবউল আলম হানিফের পাল্লা এখন পর্যন্ত ভারী।

দেশ স্বাধীনের পর উন্নয়নবঞ্চিত এ জেলায় বিভিন্ন উন্নয়নমুলক কর্মকাণ্ড করেছেন হানিফ। ২০১৪ সালে কুষ্টিয়া-৩ সদর আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে একগুচ্ছ বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। 

বিশেষ করে গত দুই যুগের দাবি ছিল মেডিকেল কলেজ, হরিপুর সেতু ও বাইপাস সড়ক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হয়েছে হানিফের সময়। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে এর আগের সংসদ নির্বাচনগুলোতে ভোটারদের সামনে মুলা ঝোলানো হতো। প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে দীর্ঘদিন ভোটের রাজনীতি হয়েছে সদর আসনের মানুষের সাথে।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি নির্বাচিত হওয়ার পরপরই বড় তিনটি প্রকল্প শুরু করেন।   শহর সংলগ্ন একটি ইউনিয়নের জন্য গড়াই নদীর উপর শেখ রাসেল সেতু ও শহর বাইপাস সড়কের কাজ শেষ হয়েছে। যার সুফল ইতিমধ্যে পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এছাড়া সাংসদ হানিফ একটি আধুনিক সুইমিংপুলও নির্মাণ করেন এই এলাকায়।

বড় প্রকল্পের মধ্যে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের কাজ চলমান রয়েছে। পাশাপাশি মেডিকেল কলেজের পাশে একটি কেন্দ্রীয় মসজিদ, আইটি পার্ক ও জেলা পরিষদ শিশু পার্ক নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

পাশাপাশি কুষ্টিয়া শহরের বটতৈল থেকে ত্রিমোহনী পর্যন্ত মহাসড়কটি ফোর লেনে উন্নতি করার ঘোষণা দিয়েছেন।  যার টেন্ডার হয়েছে সম্প্রতি।

কুষ্টিয়া-৩ সদর আসনের আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফের পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের পাশাপাশি, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগসহ অঙ্গসহযোগী সংগঠন, জেলার ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ,জেলার ক্রীড়াবিদ, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সংগঠকসহ বিভিন্ন সংগঠন।

শনিবার সকালে কুষ্টিয়া পৌরসভার বিজয় উল্লাস চত্বর থেকে নৌকায় ভোট চেয়ে প্রচার শুরু করেন জেলার ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া সংগঠক। এ সময় কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়র আনোয়ার আলী, কুষ্টিয়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক (পিপি) অ্যাডভোকেট অনুপ কুমার নন্দী, অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক খন্দকার ইকবাল মাহমুদ, ক্রীড়া সংগঠক এসএম কাদেরী শাকিল, সনৎ পাল বাবলু, আফরোজা আক্তার ডিউসহ জেলার ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া সংগঠকবৃন্দ নৌকার পক্ষে প্রচারণা চালান। এছাড়াও সকালে চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির উদ্যোগে চেম্বার ভবনে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা চালান চেম্বারের নেতৃবৃন্দ। বিআরবি গ্রুপের চেয়ারম্যানসহ ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র জানিয়েছে, গত ৫ বছরে যে উন্নয়ন হয়েছে সেইসব প্রতিশ্রুতি ছিল বিএনপির দেওয়া।  বিএনপি যা দুই যুগে পারেনি, মাহবুবউল আলম হানিফ তা ৫ বছরে করে দেখিয়েছেন। এটা বড় অর্জন দলের জন্য।  পাশাপাশি গত ৫ বছরে মাহবুবউল আলম হানিফ দলমত সবার কাছে সমান জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন।  তার কাছে কাজে গিয়ে কেউ ফেরত আসেনি। এমনকি বিএনপির লোকজনও তার কাছে গিয়ে কখনো হতাশ হয়নি। তিনি তাদের কাজ করে দিয়েছেন। এ কারণে সদরে হানিফের ইমেজ আরও স্বচ্ছ হয়েছে। মাঠের প্রচার-প্রচারণায় এসব উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরা হচ্ছে।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী বলেন, মানুষ উন্নয়ন ও শান্তি চায়। বিএনপি বারবার সদরের মানুষকে ধোঁকা দিয়ে ভোট নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে।  কিন্তু কোন উন্নয়ন তারা করতে পারেনি। এবার মানুষ সব পেয়েছে। তাই নৌকা ও হানিফের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ব্যক্তি হানিফও এখন সবার কাছে জনপ্রিয়।

বাংলাদেশ তাঁতী লীগ কুষ্টিয়া জেলা শাখার সদস্য সচিব হাজী হারুন আর রশিদ বার্তা২৪কে বলেন, তাঁতীদের উন্নয়নে কাজ করছে এই সরকার। আরও কাজ করার সুযোগ দিতে আবারও নৌকায় ভোট দিতে হবে। এজন্য আমরা প্রতিনিয়ত তাতী লীগের উদ্যোগে পাড়া মহল্লায় নির্বাচনী গণসংযোগ ও সরকারের উন্নয়ন নিয়ে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, কুষ্টিয়াকে মানুষ চেনে সাংস্কৃতিক রাজধানী নামে। আগামীতে চিনবে উন্নয়নের রাজধানী হিসেবে। আগামীতে এমপি নির্বাচিত হতে পারলে কুষ্টিয়ার মানুষের চাওয়া-পাওয়ার যে হিসাব আছে তা মেটাতে পারব ইনশাআল্লাহ।

তিনি আরও বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হলে গোটা কুষ্টিয়ার উন্নয়নের চিত্র বদলে যাবে। বড় বড় প্রকল্প হাতে নেওয়া ছাড়াও বেকার সমস্যা কমাতে নতুন শিল্প কারখানা স্থাপন ও বাইরে থেকে যাতে নতুন বিনিয়োগ আসে সে ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়ার চিন্তা চলছে।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহবুবউল আলম প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে থাকলেও এখনো মাঠে নামতে পারেনি ধানের শীষের প্রার্থী জাকির হোসেন সরকার। জাকির সরকার মনোনয়ন পাওয়ায় জেলা ও সদর বিএনপিতে গ্রুপিং তৈরি হয়েছে।

জাকির হোসেন সরকার বলেন, প্রতিটি পদে পদে বাধা।  নেতা-কর্মীদের আটক করা হয়েছে। যারা আমার সাথে মাঠে ছিল তারা এখন আর কেউ নেই। আমি এখন একা। এখন নিজের নিরাপত্তা নিয়েও চিন্তিত আছি। সব অভিযোগ লিখিত আকারে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কমিশনে দিলেও কোন প্রতিকার মিলছে না।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর