ঢাকায় প্রচারণায় সন্তুষ্ট আ.লীগ, বিএনপির শত অভিযোগ

বিবিধ, নির্বাচন

শাহরিয়ার হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-07-23 01:48:35

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণা শেষ হচ্ছে শুক্রবার সকাল ৮টায়। দিনব্যাপী নির্বাচনী মাঠের তৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে ঢাকার ২০ আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও তাদের নেতাকর্মীদের। শেষ সময় রাতেও মানুষের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন, ভোট চাচ্ছেন। শেষদিনেও মাঠে ছিলো না, বিএনপির প্রার্থীসহ কর্মী সমর্থকরা। তবে প্রচারণা চালাতে না দেওয়া ব্যাপারে ছিলো তাদের শত অভিযোগ।

বৃহস্পতিবার (২৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় থেকে রাত পর্যন্ত ঢাকার অধিকাংশ আসন ঘুরে দুই দলের প্রার্থী ও তাদের নেতা কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য ও চিত্র দেখা  যায়।

রাজধানীর শাহবাগ, নীলক্ষেত, ধানমন্ডি, ফার্মগেট, গাবতলী, বছিলা, মিরপুর বিভিন্ন সংসদীয় আসন ঘুরে দেখা যায়, দিনের মতো রাতেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও প্রার্থী এখনও মিছিল-মিটিং প্রচারণা করছেন। তবে একদম শেষ মুহূর্তেও মাঠে নেই বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ও তাদের নেতাকর্মীরা। বরং প্রচারণার মাঠে ছিল স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।

প্রচারণা নিয়ে নিজের সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন ঢাকা ৮ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রাশেদ খান মেনন। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, প্রচারণার শুরু দিন থেকে আজ শেষ দিন পর্যন্ত মাঠে ছিলাম আমরা। ভোটাররা আমাদের ভালোভাবে নিয়েছে। তাদের কাছে গিয়ে মূল্যবান ভোট চাইতে পেরেছি। আশা করি, নৌকার বিজয় হবেই।

একই আসনের বিএনপির প্রার্থী মির্জা আব্বাস বার্তা২৪.কমকে বলেন, প্রচারণা ওই অর্থে করতে পায়নি। পুলিশি বাধা আর নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে আমাদের। গ্রেফতার মামলা হামলা তো আছেই। তবে ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রতীক হিসেবে ধানকেই বেছে নিবে।

ঢাকা ১২ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল আজকে শেষ দিনেও একাধিক পথসভা ও গণসংযোগ করেছেন। নিজের নৌকা প্রতীকের প্রচারণা সম্পর্কে বার্তা২৪.কমকে বলেন, অল্প সময়ের মধ্যে যতটা সম্ভব ভোটারদের কাছে গিয়েছি। কথা বলার চেষ্টা করেছি। বিভিন্ন পথসভা, গণসংযোগে অংশ নিয়েছি। আমি বলব প্রচারের দিক থেকে আমরা অন্যদের থেকে পিছিয়ে নেই।

প্রচারণায় অন্য দল গুলোকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না বলে তিনি বলেন, অন্য প্রার্থীদের প্রচারণায় কোন বাধা দেয়া হয়নি। কেউ যদি প্রচারণা না করে সেটা তাদের দলীয় সিদ্ধান্ত। আর বাধা দেওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন।

অন্যদিকে ঢাকা ১৩ আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী সাদেক খান, ঢাকা ১০ আসনের আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস এর নেতাকর্মীদেরও প্রচারণায় ও গণসংযোগ করতে দেখা গেছে। তবে সংশ্লিষ্ট আসনের বিএনপি প্রার্থীরা শেষ দিনেও নীরব ছিলেন। মোহাম্মাদপুর, ধানমণ্ডি, আদাবর বসিলার কমপক্ষে ২০ জন সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের কাছে নৌকা ছাড়া অন্য কোনো প্রতীকে ভোট চাইতে আসেনি কেউ। 

জানতে চাইলে, ঢাকা ১৪ আসনের বিএনপির প্রার্থী সৈয়দ আবু বক্কর সিদ্দিক সাজু বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমি প্রথম থেকেই ঘরে ঘরে গিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা করেছি। একদিন গণসংযোগ করতে বের হতে, সরকারী দলে ক্যাডারদের বাধায় পড়েছিলাম। এত বাধা-বিপত্তির মধ্যে কখনো প্রচারণা করা যায় না। তবুও আমরা আমাদের সাধ্যমত চেষ্টা করেছি।

অন্যদিকে নির্বাচনের দু'দিন বাকি থাকতেই রাজধানী ফাঁকা হতে শুরু করেছে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে তল্লাশিকরাসহ রাজধানী জুড়ে টহল দিচ্ছেনিরাপত্তার বাহিনী।  সরজমিনে দেখা যায়, বাসের সংখ্যা তুলনামূলক কমে গেছে। সন্ধ্যা ৭ টাতেই গুরুত্বপূর্ণ সড়ক গুলো ফাঁকা হয়ে গেছে। 

উল্লেখ্য নির্বাচনী আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ (আরপিও) অনুযায়ী, ভোটগ্রহণের ৪৮ ঘণ্টা আগ থেকে সব ধরনের প্রচার বন্ধ থাকার বিধান রয়েছে। আরপিওর ৭৮(১) ধারায় বলা হয়েছে, ভোট শুরুর ৪৮ ঘণ্টা আগে এবং ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার ৪৮ ঘণ্টা পর কোনো ব্যক্তি, প্রার্থী বা নির্বাচন সংশ্লিষ্ট প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত কেউ নির্বাচনী এলাকায় কোনো ধরনের সভা-সমাবেশ আয়োজন বা এতে যোগ দিতে পারবেন না।

সে অনুযায়ী, ২৮ ডিসেম্বর শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে ১ জানুয়ারি বিকেল ৪টা পর্যন্ত যে কোনো ধরনের সভা-সমাবেশ ও মিছিল এবং শোভাযাত্রা করা যাবে না।

এ সম্পর্কিত আরও খবর