দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তদারকি করতে ৩০৫ সদস্যর মনিটরিং সেল গঠন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। মনিটরিং সেলে সদস্য হিসেবে থাকবেন ইসির কর্মকর্তা, প্রশাসন ও সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিনিধিরা।
এই মনিটরিং সেল নির্বাচনের আগের দিন অর্থাৎ ৬ জানুয়ারি থেকে ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবে। সেলটি প্রতি দেড় ঘণ্টা পরপর সারাদেশের পরিস্থিতি কমিশনকে অবহিত করবে।
নির্বাচনী মনিটরিং সেল গঠন নিয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, কমিশন থেকে অলরেডি মনিটরিং সেল গঠন করা হয়ে গেছে। এর মধ্যে একটা আচরণবিধি মনিটরিং সেল। সেই সেল দেখবে নির্বাচনে কোনো আচরণবিধি ভঙ্গ হচ্ছে কিনা। যদি ভঙ্গ হওয়ার বিষয় পাওয়া যায় তারা সেটা নিয়ে কাজ করবেন।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসাররা কি করছে, নির্বাচনে যে ফোর্স পৌঁছানোর কথা, তারা ঠিকমতো পোঁছেছে কিনা, নির্বাচনের দিন দেখা হবে ঠিকমতো নির্বাচন হচ্ছে কিনা, গণনা ঠিকমতো হচ্ছে কিনা, রেজাল্ট ঠিকমতো হচ্ছে কিনা, রেজাল্ট দিয়ে প্রিজাইডিং অফিসাররা ফিরছে কিনা, এগুলো মনিটরিং করা হবে। ইতোমধ্যে মনিটরিং সেল গঠনের আদেশ হয়ে গেছে এবং কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এই নির্বাচনকে সুষ্ঠু করা ও প্রার্থীদের আচরণবিধি লঙ্ঘন নিয়ে ৩০০ সংসদীয় আসনে নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি ইতোমধ্যে সারাদেশে দেড় শতাধিক প্রার্থীকে আচণবিধি লঙ্ঘনের জন্য শোকজ করা হয়েছে। শোকজের তালিকায় রয়েছে বর্তমান সরকারের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
এর আগে নির্বাচনী এলাকায় অপরাধ দমনে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আইন ও বিচার বিভাগ, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে, নির্বাচনী এলাকায় ৬৫৩ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে ৫ জানুয়ারি হতে ৯ জানুয়ারি অর্থাৎ ভোটগ্রহণের আগের দু'দিন, ভোটগ্রহণের দিন ও ভোটগ্রহণের পরের দু'দিন পর্যন্ত মোট পাঁচ দিনের জন্য নিয়োগ করা হয়।
পাশাপাশি প্রতি উপজেলায় একজন তবে, ১৫ বা তদূর্ধ্ব ইউনিয়ন বিশিষ্ট (পৌরসভাসহ) উপজেলায় দুই জন; জেলা সদরের ক্যাটাগরির পৌরসভায় এক জন, তবে নয় ওয়ার্ডের অধিক হলে একজন; সিটি করপোরেশন (ঢাকা উত্তর সিটিতে ১১ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১৫ জন, চট্টগ্রাম সিটিতে ১০ জন, খুলনা সিটিতে ৬ জন, গাজীপুর সিটিতে ৪ জন, অন্যান্য সিটি করপোরেশনে ৩ জন করে মোট ৮০২ জন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ প্রদান করে নির্বাচন কমিশন।
ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানিয়েছেন, এবারের জাতীয় নির্বাচনে ২৭ টি রাজনৈতিক দলের ১৫'শ ১৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটে লড়াই করছেন ৩৮২ জন। তবে উচ্চ আদালতে প্রার্থিতা ফিরে পেতে অনেকে আবেদন করায় সেই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
এবারের নির্বাচনে দেশে ভোটার সংখ্যা ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৭ লাখ ৭১ হাজার ৫৭৯ জন এবং নারী ভোটার ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৯ হাজার ২০২ জন। আর তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন ৮৫২ জন।
ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্ধের পর এখন চলছে প্রচারণা। যা শেষ হবে আগামী ৫ জানুয়ারি। একদিন বিরতি দিয়ে ৭ জানুয়ারি সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত স্বচ্চ ব্যালট পেপারের মাধ্যমে চলবে ভোটগ্রহণ।