দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে কর্মীসভার বক্তব্যে এক আওয়ামী লীগ নেতা বলেছেন, আবুল কালাম আজাদ (গোবিন্দগঞ্জ-৪) যেদিন নৌকা পেয়েছেন সেদিনই তিনি জয়লাভ করেছেন, এখন শুধু আনুষ্ঠানিকতা বাকি!
আওয়ামী লীগ নেতার এ বক্তব্যটি ফিরোজ কবীর (Firoz kobir) নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে লাইভ করা হয়েছে। এছাড়া এরইমধ্যে বক্তব্যের ওই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে বার্তা২৪.কমের হাতে এসেছে।
এরআগে, গত শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সালমারা ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কর্মী সভায় বক্তব্য দেওয়ার মাঝে এ কথা বলেন ওই নেতা। ভিডিওতে বক্তব্য দেওয়া ওই নেতার নাম মোকাদ্দেস আলী বাদু। তিনি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
সেদিনের ওই অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদসহ উপজেলার আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ভিডিওতে মোকাদ্দেস আলী বাদুকে বলতে শোনা যায় যায়, আমার দাদার আমলের আওয়ামী লীগ, তারপরে আমার বাবার, তারপরে হবে আমার, এই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন অন্য কেউ পাবে কেন? এটাতো আমার পৈতৃক সূত্রে-এই আওয়ামী লীগ আমার। এই আওয়ামী লীগের অন্য কেউ যেন মনোনয়ন চায় না।
তিনি আরও বলেন, আবুল কালাম আজাদ এই উপজেলায় যেদিন মনোনয়ন পেয়েছে সেই দিন নৌকা জয়লাভ হয়েছে; শুধু আনুষ্ঠানিকতা বাকি! ৭ তারিখে এই উপজেলায় আওয়ামী লীগ এবং উপজেলায় যারা আসলে উন্নয়নের বিশ্বাসী তারা কিন্তু নৌকা মার্কার আবুল কালাম আজাদকেই ভোট দিবে। এটা কিন্তু যেদিন মনোনয়ন পেয়েছে সেদিনই জয়লাভ হয়ে গেছে, শুধু ৭ তারিখের ভোটের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকতা বাকি আছে।
বক্তব্যের এক পর্যায়ে মোকাদ্দেস আলী বাদু নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, একদিনের জন্য আপনাদের ভূমিকায় থাকতে হবে। আপনার তো ক্যাম্পেইন করবেনই। ওই একটা দিন আপনাদের আত্মীয়-স্বজনকে বলবেন। মানুষ কিন্তু ভোটকেন্দ্রে আসতে চায় যদি সুষ্ঠু সুন্দর পরিবেশ থাকে। শুধু মানুষকে বলা, বললেই কিন্তু চলে আসবে। ভোটের দিনটা নারী-পুরুষ সবাই চায় যে আজকে ভোট দেব সারাদিন একটু ঘুরেও বেড়াবো এটা কিন্তু মানুষ চায়। শুধু আপনাদের সেই মেসেজটা ভোটারদের কাছে জানাতে হবে।
এদিকে, এ ধরণের বক্তব্যে নির্বাচনী এলাকায় শুরু হয়েছে তুমুল সমালোচনা। বিষয়টি নিয়ে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ভোটার ও সাধারণ মানুষের মাঝেও শষ্কার সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। তবে মতামত চানতে চাইলেও বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি কেউ। বক্তব্যের বিষয়ে জানতে মোকাদ্দাস আলী বাদুর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। ফলে তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে গাইবান্ধা-৪ (গোবিন্দগঞ্জ) আসনের সহকারী রির্টানিং কর্মকর্তা ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাসেল মিয়া বলেন, ভিডিও’র বক্তব্যের বিষয়টি তার নজরে এসেছে। এটি খতিয়ে দেখা হবে। তবে আচরণবিধি লঙ্ঘন হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।