গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ফারজানা রাব্বী বুবলীর বিরুদ্ধে কালো টাকা ছড়িয়ে ভোট কেনার অভিযোগ তুলেছেন একই আসনের নৌকার প্রার্থী মাহমুদ হাসান রিপন। এমন অপকর্মে সহায়তা করছেন বুবলীর আপন চাচাতো ভাই, ফুলছড়ি-সাঘাটার স্থানীয় আ.লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও তাদের পরিবারের নারী সদস্যরা।
শুধু তাই নয়, বুবলীর স্বামী ব্যারিষ্টার খুরশিদ আলম নির্বাচনি আচরণবিধির কোনো তোয়াক্কা না করে প্রতিনিয়ত নির্বাচনের পরিবেশ বিনষ্ট করা এবং নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে নানা অপতৎপরতা চালানোসহ কোনো ভোটার তাদের এমন বেআইনি প্রস্তাবে রাজি না হলে তাদেরকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার হুমকি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।
শনিবার (৬ জানুয়ারি) রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর মাহমুদ হাসান রিপন লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ট্রাক মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থী ফারজানা রাব্বী বুবলী ও তার স্বামী বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার নির্বাচনী আচরণবিধিমালার কোনো তোয়াক্কা না করে প্রতিনিয়ত নির্বাচনের পরিবেশ বিনষ্ট করছেন এবং নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে নানা রকম অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। ফারজানা রাব্বী বুবলী কিছু নারী সমর্থকের মাধ্যমে গ্রামে গ্রামে কালো টাকা ছড়িয়ে ভোট কেনার চেষ্টা চালাচ্ছে। তারা প্রতিদিন বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে সুকৌশলে নারী ভোটারদের টাকার বিনিময়ে ট্রাক মার্কায় ভোট দেয়ার জন্য বেআইনি প্রলোভন দেখাচ্ছে এবং টাকার বিনিয়ে ভোট কিনছে। নির্বাচনী এলাকায় বসবাসকারী বিভিন্ন ধর্মীয়, সামাজিক প্রতিষ্ঠানে টাকা ছড়াচ্ছে। ট্রাকে ভোট দেয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে শর্ত সাপেক্ষে অনুদান দিচ্ছে।
এছাড়া কোনো কোনো ভোটার তাদের বেআইনি প্রস্তাবে রাজি না হলে ফারজানা রাব্বী বুবলীর স্বামী বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার হুমকি দিচ্ছে। যা তিনি নির্বাচনী এলাকার ভোটারদের মাধ্যমে জানতে পারেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেছেন।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, সংঘবদ্ধ এই অপরাধী চক্রের নেতৃত্ব দিচ্ছে ফারজানা রাব্বী বুবলীর আপন চাচাতো ভাই ফাহাদ রাব্বী ও তার স্ত্রী ফেরদৌস আরা জান্নাত, ফুলছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান জি এম সেলিম পারভেজ ও তার স্ত্রী নাসরিন আক্তার। উপজেলা চেয়ারম্যান ছাড়াও জিএম সেলিম পারভেজ ফুলছড়ি উপজোলা আ.লীগের সভাপতি, সাঘাটা উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির ও তার ১ম স্ত্রী রিভি আক্তার ও ২য় স্ত্রী সাদিয়া বিশ্বাস। এছাড়া কঞ্চিপাড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সোহেল রানা শালু ও তার ২য় স্ত্রী মোছা. জেমি আক্তার, বোনারপাড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও সাঘাটা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিরুল আলম স্বপন ও তার স্ত্রী আলো বেগম, ভরতখালী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. ফারুক হোসেন ও তার স্ত্রী মোছলেমা আক্তার তিশি, মুক্তিনগর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আহসান হাবীব ও তার স্ত্রী ম হেলেনা বেগমসহ আরো অনেকেই।
এ বিষয়ে নৌকার প্রার্থী মাহমুদ হাসান রিপন বলেন, নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রভাব হুমকি ও কালো টাকা ছড়ানোর বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে স্বতন্ত্র প্রার্থী ফারজানা রাব্বী বুবলীর মোবাইল ফোনে কল করা হলে ফোন রিসিভ করেন সাথী নামের একজন। তিনি জানান, ফারজানা রাব্বী বুবলী ব্যস্ত আছেন। বিষয়টি নিয়ে পরে কথা বলবেন।
জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা কাজী নাহিদ রসুল বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিরুদ্ধে করা অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।