লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কয়েকটি ভোটকেন্দ্র ঘুরেও ভোটার উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো ছিল না। কেন্দ্রে আসতে যেন অনীহা ভোটারদের! এতে ভোটের আমেজও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
কেন্দ্রে ভোটারের চেয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বেশি দেখা গেছে।
চেয়ারম্যান প্রার্থী একেএম সালাহ উদ্দিন টিপুর (কাপ-পিরিচ) সঙ্গে হেভিওয়েট প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী না থাকায় ভোটাররাও কেন্দ্রে আসছেন না বলে জানিয়েছেন অনেকে।
বুধবার (২৯ মে) সকাল ৮টা থেকে একটি পৌরসভা ও ২১টি ইউনিয়নের ১শ ৯২টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলছে।
সরেজমিন লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের মধ্য বাঞ্চানগর এন আহম্মদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, লক্ষ্মীপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, লাহারকান্দি ফরিদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও লামচরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র ঘুরে ভোটার উপস্থিতি কম দেখা গেছে। এন আহম্মদিয়া বিদ্যালয় চেয়ারম্যান প্রার্থী টিপুর কেন্দ্র।
সকাল থেকে ভোটারের চেয়ে কেন্দ্রটিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতি বেশি দেখা যায়।
এর মধ্যে প্রার্থী ভোট দিতে আসবেন বলে একদল নারী ও পুরুষকে এনে লাইনে দাঁড় করিয়েছেন সমর্থকেরা। ভোট শেষে ৯টার দিকে প্রার্থী চলে যেতেই লাইনের ভোটারাও চলে যান। এর মধ্যে ভোট শেষে দুই-তিনজন নারীকে পরে লাইনে দাঁড়াতে দেখা গেছে। ভোটারের লাইন বড় দেখানোর জন্যই তারা লাইনে দাঁড়িয়েছেন বলে জানা গেছে।
এ উপজেলায় টিপুর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কাশেম চৌধুরী (আনারস), জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক রহমত উল্লাহ বিপ্লব (ঘোড়া), আবুল কাশেম (দোয়াতকলম) ও মিজান উদ্দিন নিজাম (মোটরসাইকেল)।
নির্বাচনি প্রচারণাকালীণ কাশেম চৌধুরী ‘কাপ পিরিচ’ প্রতীকের টিপুকে সমর্থন জানিয়েছেন। এরপর থেকে তিনি আর কোনো প্রচারণা চালাননি।
ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হুমায়ুন কবীর পাটওয়ারী চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালিয়েছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি মনোনয়ন ফরমই সংগ্রহ করেননি। তিনি টিপুকে সমর্থন জানিয়েছেন।
পরে তার নেতৃত্বেই নির্বাচনি মাঠে নেমেও কাশেম চৌধুরী একইভাবে টিপুকে সমর্থন জানিয়ে প্রচারণা বন্ধ করে দেন। ব্যালটে কাশেম চৌধুরী ‘আনারস’ প্রতীক এখন নিয়ম রক্ষার্থে। এতে কেন্দ্রে ভোটাররা যাচ্ছেন না।
নির্বাচনি প্রচারণায় কোনো আমেজ ছিল না। অন্যান্য নির্বাচনে কেন্দ্রে কেন্দ্রে প্রার্থীদের ব্যানার-ফেস্টুনে ভরপুর থাকলেও এখন কেন্দ্রগুলো দেখলে ভোট আছে কি না বলা মুশকিল হয়ে পড়েছে! কেন্দ্রে ভোটারের চেয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাই বেশি।
ভোটার উপস্থিতি নিয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী একেএম সালাহ উদ্দিন টিপু বলেন, আবহাওয়া খারাপের কারণে কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কম। তবে বেলা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিতি বাড়বে। সুষ্ঠুভাবেই উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হবে।
তবে নির্বাচন নিয়ে অন্যান্য প্রার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
নির্বাচনের সহকারী কর্মকর্তা ও সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ২২ জন ম্যাজিস্ট্রেট নির্বাচনি এলাকায় দায়িত্ব রয়েছেন। এছাড়া পর্যাপ্ত পুলিশ ও বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হবে।
প্রসঙ্গত, সদর উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন ও নারী ভাইস-চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ উপজেলায় একটি পৌরসভা ও ২১টি ইউনিয়নে ১শ ৯২টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলছে। এ উপজেলায় ভোটার সংখ্যা ৬ লাখ ১৯ হাজার ৬শ ৪৫ জন।