উপজেলা ভোটে বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে নিরাপত্তা ছক

বিবিধ, নির্বাচন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-30 16:28:24

আসন্ন পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনায় নিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সাধারণ এলাকা ও বিশেষ এলাকায় (পার্বত্য অঞ্চল, দ্বীপাঞ্চল ও হাওর) পৃথক সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ভোটের মাঠে থাকবেন। ইসির পরিকল্পনা অনুযায়ী ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করেছে।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা সংক্রান্ত পরিকল্পনায় দেখা গেছে, ভোট উপলক্ষে নির্বাচনী এলাকায় ভোটের দুই দিন আগে, ভোটের দিন ও ভোটের পরের দিন এবং যাতায়াত-অন্যান্য কাজের জন্য একদিন মোট পাঁচ দিন মাঠে থাকবে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে বিজিবি, কোস্ট গার্ড, র‌্যাব, পুলিশ, আর্মড পুলিশ। ব্যাটালিয়ন আনসার সহযোগী ফোর্স হিসেবে পুলিশের সঙ্গে মোবাইল টিমের দায়িত্ব পালন করবে।

এছাড়া ভোটের আগের পরে মোট চারদিন গ্রাম পুলিশ সার্বক্ষণিক ভোটকেন্দ্র পাহারায় থাকবে। পুলিশ সুপার গুরুত্ব বিবেচনায় রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে পরামর্শ করে ভোটকেন্দ্রে পুলিশ ও আনসার সদস্যের সংখ্যা কমাতে-বাড়াতে পারবেন।

ইসির পরিকল্পনা অনুযায়ী, সমতলের ভোটকেন্দ্রগুলোর মধ্যে সাধারণ ভোটকেন্দ্রে বিভিন্ন বাহিনীর ১৪ জন ও ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ১৬ জনের ফোর্স মোতায়েন থাকবে। এছাড়া পার্বত্য ও বিশেষ এলাকার সাধারণ ভোটকেন্দ্রে ১৫ জন এবং ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ১৭ জন ফোর্স মোতায়েন থাকবে।

ভোটকেন্দ্রের পাহারায় স্বাভাবিক এলাকার সাধারণ ভোটকেন্দ্রে একজন পুলিশ (অস্ত্রসহ), অঙ্গীভূত আনসার (অস্ত্রসহ) একজন, অঙ্গীভূত আনসার (অস্ত্র ও লাঠিসহ) একজন, লাঠিসহ অঙ্গীভূত আনসার সদস্য ১০ জন (মহিলা-৪, পুরুষ-৬) ও গ্রাম পুলিশ একজন থাকবে।

গুরুত্বপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে দুই জন পুলিশ (অস্ত্রসহ), অঙ্গীভূত আনসার (অস্ত্রসহ) একজন, অঙ্গীভূত আনসার (অস্ত্র ও লাঠিসহ) একজন, লাঠিসহ অঙ্গীভূত আনসার সদস্য ১০ জন (মহিলা-৪, পুরুষ-৬) ও গ্রাম পুলিশ একজন (ক্ষেত্র বিশেষ দুইজন) থাকবে।

বিশেষ এলাকার গুরুত্বপূর্ণ (পার্বত্য এলাকা, দীপাঞ্চল ও হাওর) দুইজন পুলিশ (অস্ত্রসহ), অঙ্গীভূত আনসার (অস্ত্রসহ) একজন, অঙ্গীভূত আনসার (অস্ত্র ও লাঠিসহ) একজন, লাঠিসহ অঙ্গীভূত আনসার সদস্য ১০ জন (মহিলা-৪, পুরুষ-৬) ও গ্রাম পুলিশ একজন।

আর বিশেষ এলাকার গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে তিনজন পুলিশ (অস্ত্রসহ), অঙ্গীভূত আনসার (অস্ত্রসহ) একজন, অঙ্গীভূত আনসার (অস্ত্র ও লাঠিসহ) একজন, লাঠিসহ অঙ্গীভূত আনসার সদস্য ১০ জন (মহিলা-৪, পুরুষ-৬) ও গ্রাম পুলিশ একজন (ক্ষেত্র বিশেষ দুইজন) নিয়োগ করা হবে।

নিরাপত্তা পরিকল্পনা: নির্বাচন কেন্দ্রের নিরাপত্তায় সকল আইনশৃঙ্খলা নিয়োগের দায়িত্বে থাকবেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। তবে নির্বাচনী এলাকায় মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োগ এ সংশ্লিষ্ট পুলিশ সুপার রিটার্নিং অফিসারের সাথে পরামর্শক্রমে এ সংক্রান্ত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করবেন।

সার্বিক নির্দেশনা প্রদানের লক্ষ্যে জননিরাপত্তা বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সকল আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার প্রতিনিধিদের সাথে সভা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ করবে। জেলা-উপজেলা পর্যায়ে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তার অধিক্ষেত্রে আইন মোতাবেক সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করবেন।

আইনশঙ্খলা সমন্বয় সেল: নির্বাচন কমিশন সচিবালয় জননিরাপত্তা বিভাগ এবং সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে আইন-শৃঙ্খলা সমন্বয় ও মনিটরিং সেল স্থাপন করা হবে। এ সেলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একজন করে প্রতিনিধি থাকবেন নির্বাচন পূর্ববর্তী দুই দিন, নির্বাচনের দিন ও নির্বাচনের পরবর্তী একদিনসহ মোট চার দিন। তারা সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কাজ করবে। তবে প্রত্যেকটি পর্যায়ের ভোটগ্রহণের দিন ফলাফল ঘোষণার শেষ না হওয়া পর্যন্ত কাজ করবে। তারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে। ভোটের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্ক নির্বাচন কমিশন এবং সংশ্লিষ্টদের অবহিত করবে।

এদিকে আসন্ন পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে সকল প্রকার বৈধ অস্ত্র বহন ও প্রদর্শন ১৫দিনের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। যার আলোকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক আদেশও জারি করেছে। আদেশে বলা হয়েছে- নির্বাচনী এলাকায় ভোটগ্রহণের পূর্ববর্তী সাত দিন থেকে ভোট গ্রহণের পরবর্তী সাতদিন পর্যন্ত সকল বৈধ অস্ত্রের লাইসেন্সধারীদের অস্ত্র বহন ও প্রদর্শন নিষদ্ধ।

প্রসঙ্গত আগামী ১০, ১৮, ২৪ ও ৩১ মার্চ চার ধাপে পঞ্চম উপজেলা পরিষদের ভোট হবে। এর মধ্যে প্রথম ধাপে ৮৬ উপজেলা ও দ্বিতীয় ধাপে ১২৪ উপজেলায় মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন প্রার্থীরা। তৃতীয় ধাপে ১২৭ উপজেলা ও চতুর্থ ধাপে ১২২ উপজেলায় ভোট হবে। পঞ্চম ধাপে বাকি উপজেলার ভোট হবে ১৮ জুন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর