রাজশাহীতে গল্প-আড্ডায় সময় কাটাচ্ছেন নির্বাচনী কর্মকর্তারা

বিবিধ, নির্বাচন

হাসান আদিব, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেট, রাজশাহী, বার্তা২৪.কম | 2023-08-25 13:19:38

রাজশাহীতে চলছে উপজেলা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। রোববার (১০ মার্চ) সকাল ৮টা থেকে রাজশাহীর আটটি উপজেলায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। দুপুর পর্যন্ত কোনো কেন্দ্রে অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে সব উপজেলাতেই নিরুত্তাপ ভোটের মাঠ। অধিকাংশ ভোটকেন্দ্রই ভোটারশূন্য। সকালে নারী ভোটারদের কেন্দ্রে দেখা গেলেও বেলা বাড়ার পর কেন্দ্রগুলোও ফাঁকা হয়ে পড়েছে।

এদিকে, ভোটার না থাকায় কেন্দ্রে দায়িত্বরত প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার, পুলিশ ও আনসার সদস্য থেকে শুরু করে পোলিং এজেন্টদের অলস সময় পার করতে দেখা গেছে। ভোটকেন্দ্রে কর্মরত অনেককেই গল্প-আড্ডা দিতে দেখা গেছে। 

রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জেলার বাগমারা, দুর্গাপুর, তানোর, পুঠিয়া, গোদাগাড়ী, বাঘা, চারঘাট, মোহনপুর উপজেলার ভোটকেন্দ্রগুলো ঘুরে প্রায়ই একই দৃশ্য চোখে পড়েছে। ফলে কেন্দ্রের ভেতরে দায়িত্বরতদের বসে খোশ গল্পে মেতে থাকতে দেখা যায়।

বেলা ১১টার দিকে বাগমারা উপজেলার মচমইল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে একজন ভোটারও নেই। বাইরে একটি কাঠের বেঞ্চে বসে থেকে সময় পার করছেন নির্বাচনে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা। উপজেলার অন্য আরও অন্তত ১০ কেন্দ্রে গিয়েও একই দৃশ্য চোখে পড়ে।

অন্যদিকে সকাল ১০টার দিকে গোদাগাড়ী পৌরসভার মহিষালবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ২ হাজার ৭৭ ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন মাত্র ৫৮ জন। কেন্দ্রটির প্রিজাইডিং অফিসার খন্দকার মাহফুজুল হক বলেন, 'ভোটার কম এটা ঠিক। তবে শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ চলছে।'

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত জেলার ৮টি উপজেলার ৫২২টি কেন্দ্রের মধ্যে সর্বোচ্চ ভোট পড়েছে গোদাগাড়ীর সারেংপুর সরকারি বিদ্যালয় কেন্দ্রে। এখানে ২ হাজার ৯০০ ভোটারের মধ্যে ওই সময়ের মধ্যে প্রায় ৪০০ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন বলে জানান প্রিজাইডিং অফিসার মিজানুল হক।

এদিকে, যেসব উপজেলায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন সেসব উপজেলায় ভোটাররা আতঙ্কে রয়েছেন। ফলে সংঘর্ষের শঙ্কায় অধিকাংশ ভোটার বাড়ি থেকে বের হয়ে ভোটকেন্দ্রে যাচ্ছেন না। বিশেষ করে দুর্গাপুর, বাগমারা, তানোর ও গোদাগাড়ীতে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এসব উপজেলায় আওয়ামী লীগের একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন বলে জানা গেছে।

তবে ভোটের মাঠে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক অবস্থানে দেখা গেছে। জেলার ৮টি উপজেলায় প্রায় দুই হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। সাধারণ ভোটকেন্দ্রে একজন পুলিশ সদস্যের সাথে ১২ জন আনসার এবং ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে দুই জন পুলিশ ও ১২ জন আনসার রাখা হয়েছে।

জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, 'শনিবার (৯ মার্চ) সকাল থেকে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী জেলা জুড়ে তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলেছে। এখনও পর্যন্ত আমরা কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাইনি। তানোরে পারিবারিক দ্বন্দ্বে মারামারি হয়েছে। সেটা নির্বাচনী কোনো সহিংসতা নয়।'

তিনি বলেন, 'ভোট সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে প্রতি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকায় দুটি করে মোট ১০৯টি মোবাইল টিম দায়িত্ব পালন করছে। থানায় থানায় রাখা হয়েছে একটি করে স্ট্রাইকিং ফোর্স। প্রস্তুত রয়েছে জেলা পুলিশের কুইক রেসপন্স টিমও (কিউআরটি)। এছাড়া তিন প্লাটুন বিজিবি ভোটকেন্দ্রের আশেপাশে সার্বক্ষণিক টহল অব্যাহত রেখেছে।'

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বার্তা২৪.কম-কে বলেন, 'সুষ্ঠুভাবে ভোট হচ্ছে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। সকালে ভোটার উপস্থিতি কিছুটা কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার বেড়েছে।'

জানা গেছে, জেলার ৮টি উপজেলার মধ্যে বাঘা ও মোহনপুর উপজেলায় বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় দুই জন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া গোদাগাড়ীতে মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান প্রার্থীও বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন।

ফলে ছয় উপজেলায় ভোটের মাঠে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৬ জন, ৮ উপজেলাতে ভাইস-চেয়ারম্যান পদে ভোট করছেন ৩০ জন এবং ৭ উপজেলায় মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ১৯ জন প্রার্থী।

এ সম্পর্কিত আরও খবর