ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার বৈধ প্রার্থী ঘোষণা দেয়াকে দলের প্রাথমিক বিজয় বলে মনে করছেন বিএনপির সমর্থিত মেয়র পদ প্রার্থী তাবিথ আউয়াল।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত জাতীয় স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউট (এনআইএলজি) ভবনে উত্তর সিটির মনোনয়ন পত্র যাচাই-বাছাই শেষে তিনি এ কথা জানান।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ঘোষিত উত্তরের বৈধ মেয়র প্রার্থীরা হলেন-বিএনপির তাবিথ আউয়াল, আওয়ামী লীগের আতিকুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের শেখ মো. ফজলে বারী মাসউদ, পিডিপির শাহীন খান, এনপিপির মো. আনিসুর রহমান দেওয়ান ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির আহম্মেদ সাজ্জাদুল হক।
তাবিথ আউয়াল বলেন, বৈধ হিসেবে ঘোষণা দেয়াটাকে আমার দলের প্রাথমিক বিজয় হিসেবে ধরে নিচ্ছি। গতকাল গভীর রাত পর্যন্ত অনেক তথ্য পেয়েছি। সরকারের অনেক সংস্থা তড়িঘড়ি করে অনেক চেষ্টা করেছিল কোনো খুঁত বের করার জন্য। আমাকে ঋণখেলাপি বলে প্রচার করারও চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তারা পারেনি। আমরা আইন ও প্রচার বিধি মেনেই নির্বাচনী প্রচারে আগাব। আমি আশাবাদী, নির্বাচন কমিশনে যে অভিযোগগুলো করেছি, সেগুলো সংলাপের মাধ্যমে সমাধান হবে আগামীতে।
এদিকে ডিএনসিসির ভোটার না হওয়ায় জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী জিএম কামরুল ইসলামের মনোনয়ন পত্রটি বাতিল করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে কামরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আমি প্রথমবারের মতো মেয়র পদে প্রার্থী হতে এসেছিলাম। এটা আমার জন্য খুব দুঃখজনক। আমি ডিওএইচএস এলাকায় থাকি বলে আমার মনোনয়ন বাতিল করা হলো। আমার যে ভোটার তালিকা আছে, দুই নম্বর ওয়ার্ড এবং সিটি করপোরেশন দেখানো হয়েছে। সেহেতু আমি যোগ্য ভোটার হিসেবে জমা দিয়েছি। এখন আমি আইনি পদক্ষেপ নেব। আমি নির্বাচন করার জন্য এসেছি। সাধ্যমত চেষ্টা করব থাকতে।
সিপিবির প্রার্থী আহম্মেদ সাজ্জাদুল হক বলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড মানে আওয়ামী লীগ আর বিএনপি নয়। যে টাকা জামানত ওয়ার্ড কমিশনারদের জন্য করেছে, তাতে একজন সৎ মানুষের পক্ষে এ নির্বাচনে অংশ নেওয়া কঠিন। আমাদের সে দাবি তারা গ্রাহ্য করেনি। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সিপিবির যে লড়াই, জনগণের ভোটের অধিকার আদায়ের যে লড়াই, সে লড়াইয়ের অংশ হিসেবে সিপিবি লড়ছে।
এদিকে এ সময় রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল কাশেম বলেন, মেয়র প্রার্থীদের বলছি, আপনারা আচরণবিধি মেনে চলবেন। সাংবাদিক ভাইদের সামনেই আমরা বলছি, আমরা দেখেছি, আপনারা যখন মনোনয়ন পত্র জমা দেন, আমার কক্ষে যখন এসেছেন, তখন পাঁচজনের বেশি ছিলেন না। কিন্তু বাইরে আমরা দেখেছি, পত্রিকাতে দেখেছি, সেখানে আপনাদের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী ছিল। এটা আমরা চাই না। আমরা আগেই বলেছি, নির্বাচন হবে ফেস্টিভ মোডে। সে জায়গা যাতে কখনই সংঘর্ষে রূপ না নেয়। রাস্তাঘাট বন্ধ করে কোনো রকম প্রচার প্রচারণা আপনারা চালাতে পারবেন না। আমাদের ম্যাজিস্ট্রেটরা সক্রিয় আছে। আমি নিজেও মাঠে যাব, এটা যদি দেখি।
তিনি বলেন, আমরা নির্বাচন কমিশন, আমাদের কোনো দল নেই। আপনারা সবাই আমাদের কাছে প্রার্থী। আমরা চাইব, আপনারা সবাই শহরের নাগরিকদের কথা বিবেচনা করে, নাগরিকদের যেন কোনো অসুবিধা না হয়, এ বিষয়টি দেখবেন। যদি আপনারা আচরণবিধি মেনে না চলেন, তাহলে আমরা আপনাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।
আমাদের নির্বাচন কমিশনের এ ক্ষমতাও আছে, আচরণবিধি বেশি লঙ্ঘিত হলে কমিশনকে লেখব। আর আপনাদের মনোনয়ন বাতিল করার ক্ষমতা কমিশনের আছে বলেও হুঁশিয়ার করেন তিনি।