আসন্ন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনের আগে কাউন্সিলর প্রার্থীদের হুমকি, গ্রেফতার এবং হয়রানির বিষয়ে অভিযোগ জানিয়ে গায়েবি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে চিন্তিত বলে জানিয়েছেন বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর গোপীবাগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ জানান তিনি। তার লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) যুগ্ম সচিব ও রিটার্নিং অফিসার আবদুল বাতেন।
অভিযোগের বিষয়ে ইশরাক হোসেন রিটার্নিং অফিসার আবদুল বাতেনকে বলেন, আমাদের কাউন্সিলর প্রার্থীগণ হুমকি, গ্রেফতার এবং নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছে। এজন্য আপনার কাছে আমরা লিখিত অভিযোগ জানাতে এসেছি।
অভিযোগ গ্রহণ করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন রিটার্নিং অফিসার আবদুল বাতেন।
আইনশৃংখলাবাহিনী কর্তৃক কাউন্সিলর পদ প্রার্থী তাজউদ্দিন আহমেদ তাজুকে গ্রেফতার প্রসঙ্গে লিখিত অভিযোগে ইশরাক বলেন, গত ২ জানুয়ারি আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বাছাই প্রক্রিয়া শেষে বিএনপি মনোনীত ৩২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী তাজউদ্দিন আহমেদ তাজুকে বৈধ প্রার্থী ঘোষণা করার পর নিজ এলাকায় যাওয়ার সময় গোপীবাগে (দেশবন্ধু হোটেলের সামনে থেকে) সাদা পোশাকে আইনশৃংখলাবাহিনী গ্রেফতার করে। এ খবর শুনে আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে যায়। তৎক্ষণাৎ আমি থানায় গিয়ে তার গ্রেফতারের বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ বলে তাকে পূর্ববর্তী মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। অথচ কিছুদিন আগেই জামিনে বের হয়েছেন তিনি।
গ্রেফতারের বিষয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, তাকে তখন কেন গ্রেফতার দেখানো হয়নি? এভাবে অজানা (গায়েবি) মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে আমরা চিন্তিত। এছাড়াও ৪৪নং ওয়ার্ডের বিএনপি মনোনীত কাউন্সিলর প্রার্থী আবদুস সাহেদ মন্টুকে একই ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ মনোনীত কাউন্সিলর প্রার্থী মো. নিজামউদ্দিনের ছেলে ইমন ও তার ভাই কাইয়ুমের নেতৃত্বে ৪০/৫০ জন লোক কাউন্সিলর অফিসে গিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোসহ নানারকম হুমকি ধামকি ও ভয়-ভীতি প্রদান করে।
‘এভাবে অতি উৎসাহী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু সদস্য কর্তৃক বিএনপি দলীয় কাউন্সিলর প্রার্থীকে গ্রেফতারের দ্বারা বিএনপি মনোনীত ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীদেরকে হুমকি প্রদান ও গ্রেফতার করে জনমনে ভীতি সৃষ্টি করা ও দলীয় কর্মীদের মনোবল ভেঙে দিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ ব্যহত করার পায়তারা করছে’ বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।
রিটার্নিং কর্মকর্তার প্রতি আবেদন জানিয়ে বলা হয়, প্রচারে নামার পূর্বেই এ ধরনের পরিবেশ সৃষ্টি ও বিনা কারণে গ্রেফতার করা হলে সুষ্ঠু ও সুন্দর নিরপেক্ষ নির্বাচনের সম্ভাবনা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছি। অতি শিগগিরই গ্রেফতারকৃত কাউন্সিলর প্রার্থীর মুক্তি ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের নিরাপত্তা এবং নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করছি।
ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, দুই সিটির মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ছিল ৩১ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ছিল ২ জানুয়ারি। প্রার্থিতা প্রত্যাহার ৯ জানুয়ারি, প্রতীক বরাদ্দ হবে ১০ জানুয়ারি। আর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ৩০ জানুয়ারি।