যে কারণে মেয়র পদে লড়তে চায় না জাপা

বিবিধ, নির্বাচন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-26 17:29:50

ডিএসসিসির মেয়র পদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে যাওয়াকে সম্মানজনক মনে করছে জাতীয় পার্টি। সে কারণে সরে যাওয়ার মানসিক প্রস্তুতি নিলেও শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের অনাপত্তি না মেলায় মাঠে থাকছে প্রধান বিরোধী দল জাপা।

পার্টির সূত্র জানিয়েছে, নেতাকর্মীরা মনে করছেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) জাতীয় পার্টির প্রার্থী সেভাবে মাঠে আওয়াজ তুলতে ব্যর্থ হয়েছে। বিগত নির্বাচনেও একই প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে লজ্জাজনক পরাজয় বরণ করেছিলেন। সে কারণে লজ্জাজনক পরাজয় এড়াতে আগেই নির্বাচনী মাঠ ছাড়তে চায় জাপা। কিন্তু এটাকে ইস্যু বানিয়ে সমঝোতার মাধ্যমে কিছু কাউন্সিলর বাগিয়ে নেওয়ার ফন্দি করেছিল জাপা। সেভাবেই মনস্থির করে মেয়র পদ থেকে সরে যাওয়ার বিনিময়ে জাপার পাঁচজন কাউন্সিলরকে সমর্থন দেওয়ার প্রস্তাব তুলেছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগের আপত্তির কারণে সেই প্রস্তাব ঝুলে গেছে। উল্টো জাতীয় পার্টিকে মাঠে থাকতে অনুরোধ করেছে আওয়ামী লীগ। কৌশলগত কারণেই নাকি আওয়ামী লীগের এ অবস্থান বলে জানা গেছে। আওয়ামী লীগ মনে করছে, বিএনপি যে কোনো ধাপে গিয়ে নির্বাচন ভন্ডুল করার জন্য সরে যেতে পারে। জাপা থাকলে সেই সুযোগ অনেকটা কমে যাচ্ছে।

জাপা যেদিন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলর পদে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিতরণ শুরু করে, সেদিন পার্টির কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ বলেছিলেন, আমি বিগত সিটি নির্বাচনের আগে বলেছিলাম, সমঝোতার মাধ্যমে কিছু কাউন্সিলর আদায় করতে। আমি তৎকালীন মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলাপ আলোচনাও করেছিলাম, তারা রাজিও হয়েছিল। কিন্তু তখন তা করতে দেওয়া হয়নি। তৎকালীন মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বিরোধিতা করে বলেছিলেন, সমঝোতা ছাড়াই আমাদের বেশ কিছু কাউন্সিলর বেরিয়ে আসবেন। মেয়র পদ প্রার্থীও ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। কিন্তু লজ্জাজনক পরাজয় হয়েছে আমাদের। বারবার একই প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়ে পরীক্ষা করার কোনো মানে হয় না। আমার মনে হয়, সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলনের পরিবর্তে জগন্নাথের সাবেক ভিপি আলমগীর সিকদার লোটনকে দিলে ভালো করবেন।

সেদিন পার্টির চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের উপস্থিতিতেই কাজী ফিরোজ রশীদের এমন বক্তব্যের পর অন্যরা নড়েচড়ে বসেছিলেন। মনে করা হয়েছিল, এবার মেয়ার প্রার্থী পরিবর্তন হচ্ছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিগত নির্বাচনে জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়া প্রার্থীকে আবার মেয়র প্রার্থী করেছে জাতীয় পার্টি। বিষয়টি এখন অনেকটা গলার কাটার মতো হয়েছে।

রংপুর সিটি করপোরেশনে জাপার প্রার্থী বিপুল ভোটে বিজয়ী হওয়ার পর পার্টির মধ্যে চাঙ্গা ভাব চলে আসে। এখন ক্ষমতার স্বপ্নে বিভোর জাপার প্রার্থী যদি চরম ভরাডুবি হয়, তাহলে তাদের গলাবাজি বন্ধ হয়ে যাবে। এ শঙ্কা থেকেই তারা মেয়র পদ থেকে সরে যেতে চাইছে। সে কারণে বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) বিকেলে ধানমন্ডিতে একটি অফিসে আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমুর সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন জাপা নেতারা। কিন্তু বৈঠকের মাঝামাঝি সময়ে একটি ফোন আসে আমির হোসেন আমুর কাছে। আর এতেই হতাশ মনোরথে ফিরতে হয় জাপা নেতাদের।

অন্যদিকে উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র পদে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল পার্টিতে সদ্য যোগদানকারী বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) জিএম কামরুল ইসলামকে। পরে অবশ্য সিটি করপোরেশনের ভোটার না হওয়ায় তার প্রার্থিতা বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর