সিটি নির্বাচনে প্রচারণার সুযোগ ১৯ দিন

, নির্বাচন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-09-01 12:43:57

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের পর প্রচারে নেমেছে প্রার্থীরা। নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী এখন থেকে পুরোদমে প্রচারে নামতে পারবেন প্রার্থীরা। বিধি অনুযায়ী ১৯ দিন প্রচার চালাতে পারবেন প্রার্থী ও তার সমর্থকরা।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্বাচন পরিচালনা শাখা-২ যুগ্ম সচিব মো. ফরহাদ আহাম্মদ খান জানান, আচরণ বিধি অনুযায়ী, ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার ৩২ ঘণ্টা পূর্বে প্রচার কাজ বন্ধ করতে হবে। ভোটগ্রহণ শুরু হবে ৩০ জানুয়ারি সকাল ৮টায়। এক্ষেত্রে প্রচার বন্ধ করতে হবে ২৮ জানুয়ারি রাত ১২টায়। আর প্রচার শুরু হবে প্রতীক বরাদ্দের দিন অর্থাৎ ১০ জানুয়ারি থেকে। তাই এবার প্রার্থীরা প্রচার কাজের জন্য ১৯ দিন সময় পাচ্ছেন।

এর আগে আজ সকালে শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়। রাজধানীর এনআইএলজি মিলনায়তনে ঢাকা উত্তর সিটির এবং গোপীবাগে সাদেক হোসেন খোকা কমিউনিটি সেন্টারে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। এরপরই শুরু হয় আনুষ্ঠানিক প্রচারণা।

যদিও বিধি লঙ্ঘন করে আগে থেকেই বিভিন্ন প্রার্থী প্রচার চালাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আতিকুলের বিরুদ্ধে বিএনপির তাবিথ আউয়াল আর শেখ ফজলে নূর তাপসের বিরুদ্ধে বিএনপির ইশরাক হোসেন লিখিত অভিযোগ করেন।

নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী, দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত লাউড স্পিকারে প্রচার চালানোর বিধান আছে। এ ক্ষেত্রে প্রতি ওয়ার্ডে প্রচার কাজ বা পথসভার জন্য একটি মাইক ব্যবহার করতে পারবেন প্রার্থীরা।

মেয়র পদপ্রার্থী প্রতি থানায় একের অধিক ক্যাম্প স্থাপন করতে পারবেন না। কাউন্সিলর প্রার্থীরা ৩০ হাজার ভোটারের জন্য একটি ক্যাম্প, তবে সর্বোচ্চ তিনটি ক্যাম্প স্থাপন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে ক্যাম্প অফিসে টেলিভিশন, ভিসিআর, ভিসিডি ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারবেন না। ভয়ভীতি প্রদর্শন, ধর্মীয় উপাসনালয়, সার্কিট হাউজ, সরকারি স্থাপনা ব্যবহার করে প্রচার চালানো যাবে না। প্রচার কাজে যান চলাচলে বাধাগ্রস্ত করা কিংবা কারো ব্যক্তিগত সম্পদের ক্ষতিসাধন থেকে বিরত থাকতে হবে।

পোস্টার ঝুলিয়ে প্রচার চালাতে হবে। দেওয়ালে বা কোনো স্থাপনায় সাঁটানো যাবে না। পোস্টারের সাইজ দৈর্ঘ্যে ৬০ সেন্টিমিটার ও প্রস্থে ৪৫ সেন্টিমিটার এবং ব্যানার কোনো ভাবেই তিন মিটারের বেশি হবে না।

সরকারি সুবিধাভোগী অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী, সংসদের স্পিকার, মন্ত্রী, চিফ হুইপ, ডেপুটি স্পিকার, বিরোধী দলীয় নেতা, সংসদ উপনেতা, বিরোধী দলীয় উপনেতা, প্রতিমন্ত্রী, হুইপ, উপমন্ত্রী বা তাদের সম-পদমর্যাদার কোনো ব্যক্তি, সংসদ সদস্য এবং সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রচারে অংশ নিতে পারবেন না। তবে এদের কেউ ভোটার হলে ভোট দিতে পারবেন।

কোনো প্রকার বিলবোর্ড বা মিছিল করা থেকেও বিরত থাকতে বলা হয়েছে আচরণ বিধিতে। বিদ্যুৎ ব্যবহার করে কোনো প্রকার আলোকসজ্জা, সরকারি প্রচারযন্ত্র কিংবা প্রচারে সরকারি কর্মচারীকে ব্যবহার করা যাবে না। নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতীক হিসেবে জীবন্ত কোনো প্রাণী ব্যবহার নিষিদ্ধ।

নির্বাচনী আচরণ বিধির ৬ (১) উপবিধি অনুযায়ী, প্রার্থী বা প্রার্থী পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি পথসভা ও ঘরোয়া সভা ব্যতীত কোনো জনসভা বা শোভাযাত্রা করতে পারবেন না। এছাড়া যানবাহন সহকারে মিছিল কিংবা মশাল মিছিল বা কোনোরূপ শোভাযাত্রা করা যাবে না।

নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের শাস্তি হিসেবে অনধিক ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা ছয়মাসের কারাদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে। আর দল বা দলের পক্ষে কোনো প্রতিষ্ঠান বিধিমালা লঙ্ঘন করলে ৫০ হাজার পর্যন্ত অর্থদণ্ড দেওয়ার বিধান আছে। এছাড়া কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হলে নির্বাচনের পরেও সেই প্রার্থীর প্রার্থিতাও সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে বাতিল করতে পারে নির্বাচন কমিশন।

উত্তর সিটির রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল কাসেম বার্তা২৪.কমকে বলেন, আজ থেকে প্রার্থীরা প্রচারণা চালাতে পারবেন। তবে প্রার্থীদের আচরণ বিধি মেনে প্রচারণা চালাতে নির্দেশনা দিয়েছি। আচরণ বিধি না মানলে শাস্তি দেয়া হবে। এমনকি প্রার্থিতাও বাতিল হতে পারে।

এদিকে গতকাল মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে কেউই প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। ফলে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ১৩ প্রার্থী চূড়ান্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন। তবে দুই সিটিতে সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদ থেকে ২৬৮ জন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন। এতে সংরক্ষিত ওয়ার্ডসহ ১৭২ পদের বিপরীতে ৭৪৫ জন কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সব মিলিয়ে ভোটের চূড়ান্ত লড়াইয়ে থাকলেন ৭৫৮ প্রার্থী।

নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল ৯ জানুয়ারি। ১০ জানুয়ারি প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়। আর ভোটগ্রহণ করা হবে আগামী ৩০ জানুয়ারি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর