দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় অভিযুক্ত বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেনের নির্বাচনী কাজে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর হোসেন।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে নির্বাচন ভবনের নিজ দফতরে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
গত বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুদকের মামলায় ইশরাকের বিচার শুরু হয়েছে, এ বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইসির সিনিয়র সচিব বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে নির্দেশনা ছিল কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে যদি নির্বাচন পরিচালনা বা সমর্থন যারা করবেন তাদের যেন গ্রেফতার বা হয়রানি করা না হয়। কিন্তু উনার বিরুদ্ধে যে মামলা সেটা পুরোনো মামলা। এটা একটা দুর্নীতির মামলা। তবে বিষয়টি এ ধরনের না যে এখনই গ্রেফতার করতে হবে। মামলার বিষয়ে আদালতে শুনানি হয়েছে, এটা আমাদের বা পুলিশের পক্ষ থেকে না। এটা আদালতে শুনানি হয়েছে, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে একটি তারিখ ঠিক হয়েছে তখন শুনানি দেবেন তারা। এর ফলে তো নির্বাচনের প্রচারণায় কোনো বাধা নেই।’
আরও পড়ুন: দুর্নীতি মামলায় বিএনপির মেয়র প্রার্থী ইশরাকের বিচার শুরু
বলেন, ‘তাকে (ইশরাক) গ্রেফতারও করা হচ্ছে না, এমনকি কোনো বাধার সৃষ্টিও করা হচ্ছে না। এটা প্রক্রিয়াগতভাবে হবে। তিনি নির্বাচন করবেন, প্রচারণাও করবেন। এটার কারণে তো নির্বাচন প্রক্রিয়ার কোনো বাধা নেই।’
অবিভক্ত ঢাকার সর্বশেষ মেয়র প্রয়াত সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাক ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আগামী ৩০ জানুয়ারি এই নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে।
সম্পদের তথ্য-বিবরণী চেয়ে দুদক ২০০৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর ইশরাক ও তার বোন সারিকা সাদেককে আলাদা নোটিস দিয়েছিল। নোটিসে তাদের নিজের নামে এবং তাদের ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের ‘স্বনামে বা বেনামে’ বা তাদের পক্ষে অন্য কোনো নামে অর্জিত যাবতীয় স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ-সম্পত্তির দায়-দেনা, আয়ের উৎসসহ বিস্তারিত বিবরণ সাত কার্যদিবসের মধ্যে জমা দিতে বলা হয়েছিল।কিন্তু তারা তা না দেওয়ায় দুদকের সহকারী পরিচালক মো. সামছুল আলম ২০১০ সালের ২৯ ও ৩০ আগস্ট রমনা থানায় দুটি মামলা করেন। ইশরাক ও সারিকা দুদকের নোটিস চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে রিট আবেদন করলেও বিফল হন।
২০১৮ সালের ২৫ নভেম্বর এই মামলায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক। ২০১৯ সালের ৫ মে অভিযোগপত্র আমলে নেওয়ার জন্য দিন ধার্য ছিল। ওই দিন ইশরাক আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় ইশরাকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল।
এরপর ২০১৯ সালের ২৫ নভেম্বর হাইকোর্টে আগাম জামিনের জন্য যান ইশরাক। তখন চার সপ্তাহের মধ্যে তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই অনুযায়ী গত ৯ ডিসেম্বর ইশরাক আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।