‘মুজিব বর্ষে’ সুষ্ঠু নির্বাচন হবে জাতির জনকের প্রতি সর্বোত্তম শ্রদ্ধা

, নির্বাচন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-09-01 23:21:00

নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন, ঢাকার উভয় সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মুজিববর্ষে। আমি মনে করি, এই নির্বাচন সুন্দর সুষ্ঠু অবাধ নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত করার মাধ্যমে আমরা জাতির জনকের প্রতি সর্বোত্তম উপায়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করতে পারি।

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে বুধবার (২২ জানুয়ারি) লিখিত বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

নির্বাচন প্রক্রিয়ার সংস্কার প্রয়োজন উল্লেখ করে এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমরা সম্ভবত আত্মসমালোচনা বিমুখ। কেন নির্বাচন নিরপেক্ষ শুদ্ধ ও স্বচ্ছ হয় না, এ প্রশ্নের উত্তর আত্মজিজ্ঞাসার কারণেই আমাকে খুঁজতে হয়েছে। আমার অভিজ্ঞতা হচ্ছে, নির্বাচন কমিশন আইনত স্বাধীন কিন্তু বাস্তবক্ষেত্রে সেই স্বাধীনতা নির্বাচন প্রক্রিয়ার কাছে বন্দী। এই বন্দীত্ব থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় নির্বাচন প্রক্রিয়ার সংস্কার। তবে সংস্কার কার্যক্রম সার্বিকভাবে নির্বাচন কমিশনের উপর নির্ভর করে না। অনেক সময় রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের স্বার্থে সংস্কার করতে চায়, জনগণের স্বার্থে নয়।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশে তিনি বলেন, নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আমাদের সবচেয়ে বড় সহায়ক শক্তি। আমি বিশেষভাবে পুলিশবাহিনীর কথা বলি। মুক্তিযুদ্ধে পুলিশ বাহিনীর অবদান সমগ্র জাতি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করে। কিন্তু নির্বাচনকালে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যে নির্বাচন কমিশনের অধীন, তা দৃশ্যমান নয়। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর যারা নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট থাকবেন, তাদের কাছে প্রত্যাশা, তারা নিজেদের কার্যক্রমে আইন ও শৃঙ্খলা শব্দদুটির বিশেষ তাৎপর্য অনুধাবন করবেন। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতি উৎসাহী কোনো কোনো সদস্যকে আইন ও শৃঙ্খলা ভঙ্গ করতে কিংবা প্রয়োজনের সময় নিষ্ক্রিয় থাকতে দেখা যায়।

তিনি আরো বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে রাজনৈতিক দলের মধ্যে মতভেদ আছে। ইভিএম ব্যবহারে সকল রাজনৈতিক দল ও অংশীজনের মধ্যে ঐক্যমত্য প্রয়োজন ছিল। কিন্তু আমাদের নির্বাচনী ব্যবস্থায় এ ধরনের সমঝোতার রীতি গড়ে ওঠেনি। ইভিএম নিয়ে পূর্বে আমি ক্রিটিকাল থাকলেও দুটি কারণে আমি এখন ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে। একটি হচ্ছে, এতে ভোটের আগের রাতে ব্যালট পেপারে বাক্স ভর্তি করার সংস্কৃতির অবসান ঘটতে পারে। দ্বিতীয় কারণটি হচ্ছে, নির্বাচনে কোনো কোনো কেন্দ্রে শতকরা একশত ভাগ ভোট পড়ার যে অভিজ্ঞতা আমরা অর্জন করেছি, ইভিএম ব্যবহারে তারও অবসান হবে।

তিনি বলেন, রাতে ব্যালট পেপারে বাক্স ভর্তি ও কেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়ার অপবাদ থেকে আমরা মুক্ত হতে চাই। যা হোক, ইভিএম-এর বিরুদ্ধবাদীদের বলতে চাই, বর্তমানের রূঢ় বাস্তবতা হচ্ছে, যে কোনো অবস্থাতেই আসন্ন দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সবগুলো কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহৃত হবে। এর কোনো অন্যথা হবে না। যারা ইভিএম ব্যবহারের বিরোধিতা করছেন, তাদের বক্তব্য অনেক সময় তাদের সমর্থক ভোটারদের মনেও বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছে।

এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ বা সবার জন্য সমান সুযোগ প্রতিটি নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতার পূর্বশর্ত। নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে এই দায়িত্ব সুসম্পন্ন করা সম্ভব নয়। এজন্য সরকার, সরকারী দল ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলসমূহ এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা একান্ত অপরিহার্য। নির্বাচনে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিত না হলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে। নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হলে তার দায় আমাদের ওপর বর্তাবে। আমরা প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন করে কলঙ্কিত হতে চাই না।

এ সম্পর্কিত আরও খবর