প্রতিটি মানুষের গুরুত্ব অনুধাবন করে প্রচার প্রচারণার অনুরোধ জানিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী মো. আতিকুল ইসলাম আতিক বলেছেন, প্রচারণা করতে গিয়ে জনদুর্ভোগ যেনো না হয়, কোনো রাস্তা বন্ধ করে যেনো মিটিং না করি। কোনো গাড়ি আটকে বা রাস্তা ব্লক না করি। আমরা যেনো সবাইকে গুরুত্ব দেই এবং গুরুত্ব অনুধান করে চলতে পারি। ভুলে গেলে চলবে না হয়তো একটি রাস্তা আটকে দিলে অ্যাম্বুলেন্স নাও যেত পারে, এর ফলে আমাদের একটি বোন বা ভাই পরীক্ষা দিতে পারবে না।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গলি থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর আগে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর পরিচিত সভায় তিনি একথা বলেন।
মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের কাছে অনেক অভিযোগ আসছে, জনদুর্ভোগের। এজন্য আমি আমার কর্মী সমর্থকদের বলব প্রচারণায় যেন জনদুর্ভোগ না হয়। আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন দরকার। সুশৃঙ্খল প্রচারণা করে দেখিয়ে দেই আমরা নির্বাচনে সুশৃঙ্খল। একইভাবে সুশৃঙ্খল সুন্দর ঢাকা গড়তে পারব।
পোস্টারবিহীন প্রচারণার পক্ষে মত দিয়ে আতিক নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, এমন কোনো ডিজিটাল পদ্ধতি বের করতে পারি কি না? যে পদ্ধতিতে নগরীতে কোনো পোস্টার লাগানো লাগবে না। ডিজিটাল মাধ্যমে যেন আমরা আমাদের ক্যাম্পেইন করতে পারি। নগরটা যেন সুন্দর করি। এমন কোনো সিস্টেম চালু করি, যে সকল রাজনৈতিক দলগুলো পার্টিকুলার ওয়াল যে সকল ওয়াল আমরা নির্দিষ্ট করে দেব সেই ওয়ালে যেন পোস্টার লাগাই। সেই ওয়ালেই যেন বিলবোর্ডের মাধ্যমে প্রচার প্রচারণা করতে পারি।
নব সংযুক্ত ১৮টি ওয়ার্ড নিয়ে বৃহৎ পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে বলেন, আমি সরেজমিনে দেখেছি। নতুন ১৮টি ওয়ার্ডের বাসিন্দারা অবহেলিত, অমানুষিকভাবে দিনযাপন করছে। রাস্তার অবস্থা খারাপ, নাই কোনো বাজার, নাই খেলার মাঠ একটু বৃষ্টি হলেই অন্ধকার নেমে আসে, পানি জমে যায়। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ১৮টি ওয়ার্ডের জন্য ৪২০০ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদনের অপেক্ষায়।
তিনি বলেন, একনেক সভায় অনুমোদন হলে সেখানে রাস্তা প্রশস্তকরণ, পয়নিষ্কাশন, এলইডি বাতিসহ সকল উন্নয়ন কাজ শুরু হবে। যদি বিজয়ী হই ৬ মাসের মধ্যে সেখানে রাস্তার কাজ শুরু হবে। নতুন ওয়ার্ডের জন্য বিরাট বাজেট এটি তাদের জন্য স্বপ্নের বাজেট।
সোহরাওয়ার্দী এলাকায় আসার আগে সেখানে শ’ খানেক মেডিকেল শিক্ষার্থী ও হাসপাতলের স্বেচ্ছাসেবক অবস্থান করছিল এবিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আতিক বলেন, অবশ্যই আমি এটা সাপোর্ট করি না। আমি কোনো সময় বলি নাই আমার জন্য কেউ অপেক্ষা করুক। আমি সময় দিয়েছি ১১ থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে। যারা ১০টার সময় আসছেন তারা হয়তো দেখতে আসছেন। বা শিফটিং ডিউটি করে এখানে আসছেন। অবশ্যই রোগী বাদ দিয়ে আমার ভাষণ শুনবে, আমাদের জনসভায় আসবে এটি কোনো সময় কাম্য নয়। এটাকে আমি আমলে নিতে পারি না। হাসপাতাল বাদ দিয়ে এখানে থাকবে, আমিও এটা পছন্দ করি না, আমার দলও পছন্দ করে না।আগামী ২৬ জানুয়ারি আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নিজের ভাবনা সম্বলিত ইশতেহার তুলে ধরবেন বলেও জানান তিনি।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের পাশের সড়ক থেকে শুরু করে মনিপুরী পাড়া, টিএনটি মাঠ, পশ্চিম রাজাবাজার, পূর্ব রাজাবাজার, গ্রীন সুপার মার্কেট, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, মগবাজার,নয়াটোলা ওয়ারলেস, আসাদুজ্জামান কমিউনিটি সেন্টার, মধুবাগ, হাতিরঝিল, ঝিলপাড় এলাকায় গণসংযোগের মাধ্যমে নৌকার পক্ষে ভোট চাইবেন আতিকুল ইসলাম।
এর আগে গত ১০ জানুয়ারি থেকে মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম উত্তরা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে গণসংযোগ শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার তার ১৪তম দিনের মত গণসংযোগ পরিচালিত হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, নতুন তারিখ অনুযায়ী আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। দুই সিটির প্রতিটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে ইভিএমের মাধ্যমে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ।