আসন্ন ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, জনগণ পরিবর্তন চায়। আর এই পরিবর্তনের জন্যই আমরা সিটি নির্বাচনকে গুরুত্ব দিচ্ছে।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক নেতাদের সঙ্গে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন দেখা করতে আসলে তিনি এ কথা বলেন।
খন্দকার মোশারফ হোসেন বলেন, এই সিটি করপোরেশন নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচনে দুই সিটি করপোরেশনের জনগণ মতামতের মাধ্যমে তাদের পছন্দের এবং ঢাকা শহরকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে নিয়ে যাওয়ার জন্য যোগ্য ব্যক্তিকে নির্বাচিত করবেন।
তিনি বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। সেই নির্বাচনের পর এই সিটি করপোরেশন একটি বৃহৎ নির্বাচন, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। আমি নিজে গণসংযোগে গিয়ে দেখেছি, ধানের শীষের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এই গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে অনেকগুলো কারণে। গত ১০/১১ বছর ধরে ঢাকা শহরকে যারা পরিচালনা করেছেন তারা সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারেন নাই। যার জন্য ঢাকা শহর সারা পৃথিবীর মধ্যে বসবাসের অযোগ্য শহরে পরিণত হয়েছে। আপনারা জানেন এই মহানগর যানজটের নগর। এই মহানগর বৃষ্টির সময় জলাবদ্ধতার মহানগর। এই নগর ডেঙ্গু আতঙ্কের মহানগরে পরিণত হয়েছে। এই জন্য আমরা সিটি নির্বাচনকে গুরুত্ব দিচ্ছি। সরকার এবং গত ১০ বছর ধরে যারা এই মহানগরকে পরিচালনা করেছে তাদের প্রতি জনগণ অসন্তুষ্ট, বিক্ষুব্ধ, তাই জনগণ পরিবর্তন চায়। এই জন্য আমরা নির্বাচনকে গুরুত্ব দিচ্ছি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, এই পরিবর্তনের জন্য আমরা যে প্রার্থী দিয়েছি তিনি একজন তরুণ, শিক্ষিত। তিনি নগরী ও দেশ নিয়ে সুদূরপ্রসারী চিন্তা করেন। সেই প্রেক্ষাপটে জনগণ আজ পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত। আমরা আশা করি অতীতে যাই হয়েছে এই নির্বাচনে জনগণ যেনো নিজের মতামতকে প্রয়োগ করতে পারে। তাদের মতামতের ভিত্তিতে যেনও মেয়র নির্বাচিত হয়, সেই প্রত্যাশা আমরা করি। আমরা ইতিমধ্যে দেখেছি আমাদের নেতাদের ওপরে, প্রার্থীদের ওপরে আক্রমণ হয়েছে, চাপ ও নানাভাবে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে।
ইশরাক হোসেনের গণসংযোগে হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, উত্তর এবং দক্ষিণের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা হচ্ছে। এটা কোনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না। নির্বাচনের যে পরিবেশে সেখানে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হওয়ার কথা, কিন্তু সেটা হয় নাই। প্রত্যেকটি ঘটনার ব্যাপারে আমরা নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। আমরা মধ্যমপন্থী গণতান্ত্রিক দল। আমরা ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতার পরিবর্তন চাই। জনগণের মতামতকে আমরা শ্রদ্ধা জানাই।
ইভিএম সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের দল মনে করে ইভিএম ব্যবস্থা এখন পর্যন্তও কোনো গ্রহণযোগ্য ব্যবস্থা নয়। বিশ্বের উন্নত দেশে যারা ইভিএম ব্যবস্থা চালু করেছিল তারাও এর ভুলত্রুটি দেখে ইভিএম ব্যবস্থা বাতিল করেছে। আমাদের অনুরোধের পরেও নির্বাচন কমিশন ইভিএম বাতিল করে ব্যালটের মাধ্যমে ভোটের ব্যবস্থা করছে না। এতে আমরা উদ্বিগ্ন, কারণ আমাদের দেশের মানুষ ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে অভ্যস্ত। যেখানে ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দেওয়া যাচ্ছে না সেখানে ইভিএম কেউ মানছে না। অর্থাৎ এটি বিশ্বাসযোগ্য কোনো মেশিন নয়। আহ্বান জানাবো ব্যালটের মাধ্যমে যাতে নির্বাচন হয়। নির্বাচন যেনো সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়। জনগণ যেনো ভোট দিতে পারে। জনগণ ঠিক করবে কারা ভবিষ্যতে এই শহরের দায়িত্ব নিবে।