ইসি সৃষ্টি হয়েছে বাংলাদেশের নাগরিকের ভোট নিশ্চিত ও সুরক্ষার জন্য। কিন্তু এখন ইসি হয়ে গেছে আওয়ামী লীগের ভোট সুরক্ষা জন্য। তাদের ভোট সুরক্ষার দায়িত্ব অনেকটা ইসির বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
ভোটের পরিস্থিতি ইসির নিয়ন্ত্রণে আছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুর ৩টায় নির্বাচন কমিশনে (ইসি) প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বসে বিএনপির প্রতিনিধিদল।
বৈঠক শেষে আমীর খসরু বলেন, আসন্ন ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে নিয়ন্ত্রিত পরিস্থিতি সৃস্টি করে আওয়ামী লীগ জয় পেতে চায়। বিগত দিনে যে সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেছি কিংবা আজ পর্যন্ত যে ভায়োলেশন ও আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়েছে সেগুলো সম্পর্কে বার বার বলেছি সমাধান হয়নি। শুধু সমাধান হয়নি তা নয়, আরো বেশি লঙ্ঘন হয়েছে।
আমির খসরু বলেন, ফুটপাতের ওপর আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের ক্যাম্পের বিষয়ে আমরা বলেছিলাম। তারা বলেছিল ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভাঙা হবে। এখন পর্যন্ত কোনো অফিস ভেঙেছে বলে আমার জানা নেই। সবগুলো অফিসই এখনও আছে, রিটার্নিং অফিসার দু:খ প্রকাশ করেছেন, তারা এক্সিকিউট করতে পারছেন না। তাদের প্রার্থীর পোস্টারের মাপের ক্ষেত্রেও নিয়ম মানা হয়নি, সেগুলোও নামানোর কথা কিন্তু তা হয়নি। কোনো পরিবর্তনই হয়নি।
আমির খসরু বলেন, নির্বাচন পর্যন্ত দৃশ্যমান অপরাধ না হলে গ্রেফতার হবে না বলে জানিয়েছিল, কিন্তু গ্রেফতার চলছে। বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে হয়রানি করা হবে না বলেছিল, কিন্তু সেটিও শুরু হয়ে গেছে। গ্রেফতারও হচ্ছে নতুনভাবে। আমাদের প্রার্থীদের ওপর হামলার বিষয়ে তারা নাকি কিছু পায়নি। নির্বাচনের যে পরিবেশের কথা বলে আসছি, আওয়ামী লীগের দক্ষিণের প্রার্থীর একজন এমপি, সিনিয়র নেতা সেখানে বসে ছিলেন; এটা ক্লিয়ারলি ভায়োলেশন। ঢাবিতে বসে একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেছেন কেন্দ্রের ভিতরে বাইরে আশেপাশে দখলের জন্য। আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি বলেছেন, বিএনপি নাকি বাইরে থেকে লোক এনে কেন্দ্রে দখল করবে, দেশের একটি মানুষও কি তা বিশ্বাস করবে, উনি নিজে কি বিশ্বাস করবে।
বিদেশি পর্যবেক্ষকদের বিষয়ে তিনি বলেন, তাদের (আওয়ামী লীগ) কনসার্ন আমরা বুঝতে পারছি। দেশীয় দলীয় পর্যবেক্ষকদের ২২টার মধ্যে ১৮টির ওয়েবসাইট নেই। আবার দুইটির একই ব্যক্তি চেয়ারম্যান ও অরেকটিতে চিফ এক্সিকিউটিভ। সেই প্রতিষ্ঠানের স্পন্সর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃদ্ধ। আওয়ামী লীগের অবজারভারদের দিয়ে সবকিছু করতে চায়, বাইরের কেউ দেখবে তারা চায় না। নিয়ন্ত্রণের নির্বাচনের মাধ্যমে ফল পেতে চায়। অবজারভার, ইভিএম সেভাবেই করেছে। তবে কমিশনকে অসহায় বলতে পারব না, তাদের দায়িত্ব তাদের নিতে হবে বলে জানান তিনি।
বৈঠকে নির্বাচন কমিশনের পক্ষে থেকে সিইসি কে এম নুরুল হুদা, নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব:) শাহদাত হোসেন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য বিজন কান্তি ও যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল উপস্থিত ছিলেন।