নির্বাচনী প্রচারণা শেষে ফেসবুক লাইভে ভোটারদের উদ্দেশ্যে ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম আতিক বলেছেন, আপনার একটি ভোট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভোট। আপনি ঢাকাকে কিভাবে দেখতে চান? আপনার প্রত্যাশিত ঢাকা গড়তে আপনার ভোট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই আগামী ১ ফেব্রুয়ারি সবাই ভোটকেন্দ্রে আসুন উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিন। আমার ওপর আস্থা রাখুন, আমি আপনাদের সুস্থ সচল আধুনিক ঢাকা দেব।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাতে বনানীতে তার নির্বাচনী অফিসে বসে ফেসবুক লাইভে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন এবং নির্বাচিত হলে করণীয় তুলে ধরেন। এসময় তার পাশে ছিলেন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, নায়ক ফেরদৌস ও অভিনেত্রী শমী কায়সার।
নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়া রাজনৈতিক নেতাকর্মী, ব্যবসায়ী, শিল্পী, সাধারণ ভোটারসহ সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, আমরা বসে আছি ১ ফেব্রুয়ারির জন্য। আমি ভোটারদের অনুরোধ করব ১ ফেব্রুয়ারিতে আপনারা সবাই আসবেন। উৎসবমুখর পরিবেশে আপনারা সবাই আসবেন। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ভোট। কিভাবে ঢাকাকে দেখতে চান সেটা নির্ভর করবে আপনার সুচিন্তিত মতামতের ওপর। আপনারা আমার ওপর আস্থা রাখুন, আমি একটি সুস্থ সচল আধুনিক ঢাকা দেব।
ফেসবুক লাইভে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমরা চাই জবাবদিহিতামূলক সিটি কর্পোরেশন গড়তে। এখানে প্রতিটি নাগরিক মেয়রের ভূমিকা পালন করতে পারবে। আমরা সবার ঢাকা অ্যাপস চালু করব। কোনো এলাকায় লাইট না জ্বললে বা বর্জ্য পড়ে থাকতে দেখলে ছবি তুলে এই অ্যাপসের পাঠিয়ে দিলে সঙ্গে সঙ্গে মেয়র অফিসের ড্যাসবোর্ডে চলে আসবে, আর পাগলা ঘণ্টা বেজে উঠবে। তখন সংশ্লিষ্ট অফিসারকে জবাবদিহি করতে হবে। এজন্য সবাইকে এগিয় আসতে হবে।
তিনি বলেন, ওই অ্যাপসে একটি প্যানিক বাটন থাকবে। যার মাধ্যমে কেউ কোথাও কোনো বিপদে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে পরিচিত ৫ জনকে মেসেজটি জানাতে পারবে ওই বাটনে চাপ দেওয়ার মাধ্যমে। শুধু তাই না আমরা যে বাস নামাতে চাচ্ছি সেই বাসের ভাড়া, টিকিট সব ওই অ্যাপসের মাধ্যমেই কিনতে পারবে। বাসটি কখন আসবে তাও জানা যাবে অ্যাপসের মাধ্যমে।
সবার জন্য সবার ঢাকা গড়তে বিশেষ সুবিধাবঞ্চিত ও বয়স্ক বা যারা হুইল চেয়ারে চলাচল করেন তাদের জন্য ডিএনসিসির ৪২টি মার্কেটেই হুইল চেয়ারবান্ধব করার ব্যবস্থা থাকবে বলে জানান আতিক। এছাড়া বড় বড় শপিংমলে হুইল চেয়ার ব্যবস্থা ও ছোট বাচ্চাদের জন্য পৃথক ব্রেস্ট ফিডিং জোন করার দিকে তাগিদ দেবেন।
সচল ঢাকা গড়তে ডিএনসিসির ২৬ খেলার মাঠকে আধুনিক রূপে সাজাতে নকশা করা হয়েছে জানিয়ে বলেন, আমরা সব বয়সীদের কথা চিন্তা করে ২৬টি খেলার মাঠের নকশা করেছি। কোনো কোনো মাঠ বয়সভিত্তিক ভাগ করে দিচ্ছি। সেখানে ১-৬ বছরের বাচ্চাদের জন্য পৃথক জোন থাকবে আবার ৬-১৪ বছরের ছেলে-মেয়েদের জন্য পৃথক জোন থাকবে। তাছাড়া প্রতিটি মাঠে সিসি ক্যামেরা ও এলইডি বাতি থাকবে। যেন রাতেও চাইলে কেউ মাঠে খেলাধুলা করতে পারে।
তিনি বলেন, যেহেতু আমাদের মাঠ-পার্কের অভাব রয়েছে। তাই আমি সার্ভে করে দেখেছি ডিএনসিসি এলাকায় ৮৮টি মাঠ আছে বিভিন্ন সংস্থার যেগুলো সবার প্রবেশাধিকার নেই। সেগুলো কিছু সময়ের জন্য উন্মুক্ত রাখতে ওইসব সংস্থার সঙ্গে আলাপ করেছি। আমরা দলমত নির্বিশেষে মাঠগুলো দখলমুক্ত করব।
আলোকিত ঢাকা গড়তে আগামী ৫-৬ মাসের মধ্যে ডিএনসিসির ৩৬টি ওয়ার্ডে ৪২ হাজার এলইডি লাইট লাগানোর কাজ শুরু হবে। তাছাড়া আমরা ডিএনসিসি দোতলায় একটি কমান্ড সেন্টার করছি। আগামী এক বছরের মধ্যে সেই কমান্ড সেন্টারের কাজ শেষ হয়ে যাবে। অর্থাৎ কমান্ড সেন্টারের মাধ্যমে জানা যাবে কোথায় লাইট বন্ধ কোথায় পানির সমস্যা, কোথায় রাস্তার সমস্যা। তাই ভোটারদের বলব আপনার দেখুন এই ঢাকা কি রূপ নিচ্ছে।