দুই সিটির ভোটে থাকছে অর্ধলক্ষ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা

, নির্বাচন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-30 03:27:16

আসন্ন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন দু’জন রিটার্নিং অফিসার মোট ৪৩ জন সহকারী রিটার্নিং অফিসারকে সঙ্গে নিয়ে পরিচালনা করবেন। আর ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন অর্ধলক্ষাধিক ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা।

ইসি সূত্রে জানা গেছে, প্রতি ভোটকেন্দ্রে ১ জন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, প্রতি ভোটকক্ষে ১ জন সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও ২ জন পোলিং অফিসার দায়িত্বে থাকবেন। দুই সিটিতে সব মিলিয়ে ২ হাজার ৪৬৮ জন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, ১৪ হাজার ৪৩৪জন সহকারি প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও ২৮ হাজার ৮৬৮জন পোলিং কর্মকর্তা রয়েছেন। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন তাদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। এছাড়া কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবস্থাপনায় সশস্ত্র বাহিনীর ৫ হাজার ২৮০ জন সদস্য থাকবেন। তারা শুধু ইভিএম পরিচালনার দায়িত্বে পালন করবেন। সবমিলিয়ে দুই সিটির ভোটে ভোটগ্রহণ কমর্কতা দায়িত্ব পালন করবেন অর্ধলক্ষ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা।

ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দুই সিটির ভোটে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অর্ধলক্ষ সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। ভোট কেন্দ্রগুলোতে পুলিশ ও আনসার-ভিডিপির সদস্য থাকছে ৪১ হাজার ৯৫৬ জন। সাধারণ ভোটকেন্দ্রে ১৬ জন ও ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ১৮ জন করে সদস্য মোতায়েন থাকবে। পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে গঠিত ১২৯টি মোবাইল ফোর্সে থাকবেন ১ হাজার ২৯০ জন, ৪৩টি স্ট্রাইকিং ফোর্সে থাকবেন ৪৩০ জন, রিজার্ভ স্ট্রাইকিং ফোর্সে থাকবেন ৫২০ জন। আর দুই সিটিতে র‌্যাবের টিম থাকবে ১৩০টি। প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে টিম দায়িত্ব পালন করবে। গড়ে ১১ জন করে এতে মোট ১ হাজার ৪৩০ জন র‌্যাব সদস্য থাকবেন। দুই সিটিতে র‌্যাবের ১০টি রিজার্ভ টিম থাকবে, তাতে ১১০ জন সদস্য থাকবেন। রিজার্ভসহ দুই সিটিতে ৭৫ প্লাটুন বিজিবি দায়িত্বে পালন করবেন। প্রতি প্লাটুনে গড়ে ৩০ জন করে মোট ২ হাজার ২৫০ জন বিজিবি সদস্য থাকবেন ভোটের দায়িত্বে।

এছাড়াও ৩০ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নির্বাচনী অপরাধ দমন ও সংক্ষিপ্ত বিচার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দুই সিটিতে থাকবেন ১৭২ জন নির্বাহী এবং ৬৪ জন বিচারিক হাকিম।

জানা গেছে, ঢাকা উত্তর সিটিতে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে ৪৭০জন মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও চূড়ান্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন ৩৩৪জন। বাকি ১৩৬ জনের অনেকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন আবার যাচাইয়ে অনেকের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে। বর্তমানে মেয়র পদে ৬ জন, ৫৪টি সাধারণ ওয়ার্ডের বিপরীতে ২৫১ জন কাউন্সিলর ও ১৮টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৭৭ জন নারী কাউন্সিলর ভোটের মাঠে রয়েছেন।

অপরদিকে ঢাকা দক্ষিণে চূড়ান্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন ৪১৬ জন। এ সিটিতে ৭ জন মেয়র পদে মনোনয়পত্র দাখিল করেছেন। তারা সবাই চূড়ান্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন। তবে কমেছে সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর সংখ্যা। এ সিটিতে ৭৫টি ওয়ার্ডে ৪৬০ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও চূড়ান্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন ৩২৭ জন ও সংরক্ষিত ২৫টি ওয়ার্ডে ১০২ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও ভোটের মাঠে রয়েছেন ৮২ জন।

ঢাকা দুই সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দুই সিটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ৫৪ লাখ ৬৩ হাজার ৪৬৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২৮ লাখ ৪৩ হাজার ৮ জন ও নারী ভোটার ২৬ লাখ ২০ হাজার ৪৫৯ জন। সিটি কর্পোরেশন হিসেবে ঢাকা উত্তর সিটিতে মোট ভোটার রয়েছেন ৩০ লাখ ১০ হাজার ২৭৩ জন; যার মধ্যে পুরুষ ১৫ লাখ ৪৯ হাজার ৫৬৭ জন ও নারী ১৪ লাখ ৬০ হাজার ৭০৬জন। অপরদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে ভোটার সংখ্যা ২৪ লাখ ৫৩ হাজার ১৯৪ জন; যার মধ্যে পুরুষ ১২ লাখ ৯৩ হাজার ৪৪১জন ও নারী ১১ লাখ ৫৯ হাজার ৭৫৩ জন।

ঢাকার দুই সিটিতে ২ হাজার ৪৬৮টি ভোটকেন্দ্র ও ১৪ হাজার ৪৪৫টি ভোটকক্ষ রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটিতে ১ হাজার ৩১৮টি ভোটকেন্দ্র ও ৭ হাজার ৮৫৭টি ভোটকক্ষ এবং দক্ষিণ সিটিতে ১ হাজার ১৫০টি ভোটকেন্দ্র ও ৬ হাজার ৫৮৮টি ভোটকক্ষ রয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটিতে ৬৩৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এবং দক্ষিণে ৬৪৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসব কেন্দ্র অবস্থিত।

একক হিসাবে এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সবচেয়ে বেশি ১১টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। ওই প্রতিষ্ঠানটি হচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি আওতাধীন মিরপুরের আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়। একই সিটির তেজগাঁওয়ের সিভিল এভিয়েশন স্কুল এন্ড কলেজে রয়েছে ১০টি ভোটকেন্দ্র। অপরদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কদমতলীর এ, কে হাই স্কুল কেন্দ্রে সর্বোচ্চ ৮টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে।

প্রসঙ্গত আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর