রাত পোহালেই ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। বিভিন্ন রকম প্রচার-প্রচারণার মধ্য দিয়ে প্রার্থীরা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর চেষ্টা করেছেন। নির্বাচন নিয়ে প্রার্থীরা যেমন দিনরাত এক করে প্রচারণা চালিয়েছেন। তেমনি নগরবাসীরও জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। আছে বিভিন্ন প্রত্যাশাও।
আর এসব প্রত্যাশা পূরণে ভোটাররা চান যোগ্যপ্রার্থী। প্রার্থীরা কিছুদিন আগেই দিয়েছেন তাদের নির্বাচনী ইশতেহার। মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর যেন ইশতহারে উল্লেখ করা প্রতিশ্রুতির সাথে কাজের মিল থাকে এমন প্রত্যাশা করছেন সব বয়সী ভোটাররা। তরুণদের প্রত্যাশা মাদকমুক্ত-পরিচ্ছন্ন নগরী।
বয়োজ্যেষ্ঠদের চাওয়া মশামুক্ত বাসযোগ্য সিটি। এমন প্রত্যাশা যার যার ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের প্রতিও। পূর্বের মেয়র-কাউন্সিলররা যেসব দায়িত্ব পালন করেননি বা অসম্পূর্ণ রেখে গেছেন তা যেন নির্বাচিতরা সম্পূর্ণ করে এমন পরামর্শও অনেকের। এবার ঢাকা সিটি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে ইভিএমে তাই অনেক ভোটার সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কিনা তা নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করছেন। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে গণপরিবহন সবখানেই আলোচনা হচ্ছে শুধু নির্বাচন নিয়েই।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) ঢাকা উত্তর সিটির আওতাধীন তেজগাঁও, ফার্মগেট, গুলশান, রামপুরাসহ বেশ কিছু এলাকার ভোটারদের সঙ্গে শেষ সময়ের প্রত্যাশা নিয়ে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন তেজগাঁও ২৫ নং ওয়ার্ডের ভোটার শফিউল আলম বলেন, আমরা যোগ্য এবং সৎ প্রার্থী চাই। ঢাকা নগরীতে বিভিন্ন রকম সমস্যা আছে, নির্বাচিত হবার পর প্রার্থীরা আর সেদিকে নজর দেন না। যেখানে সেখানে মাদকের আখড়া।
মেয়র বা উক্ত এলাকার কাউন্সিলারা কী ইচ্ছা করলে পারে না এসব নিয়ন্ত্রণ করতে? ঢাকা উত্তর সিটির পূর্ব তেজতুরী বাজার ২৬ নং ওয়ার্ডের সাকিল সুমন বলেন, নির্বাচিত প্রার্থী যেই হোক শুরুতেই নগরীর পরিষ্কার পরিছন্নতা এবং মশা নিধনে তৎপর হতে হবে। ডেঙ্গু নিয়ে কিছুদিন আগে আমরা অনেক সাফার করেছি।
এলাকার আশপাশ অনেক নোংরা থাকে দীর্ঘদিন ধরে পরিষ্কার করা হয় না বলেই এই সমস্যায় পড়তে হয়। নগরপিতাদের কাছে আমাদের খুব বেশি প্রত্যাশা নেই। তবে পূর্বের তুলনায় আমাদের এলাকায় মাদকের সমস্যা কিছুটা কমেছে। পুরোপুরি নির্মূল করতে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
আব্দুল গফুর নামে উত্তর সিটির গুলশান এলাকার এক ভোটার বলেন, আমরা কিছুই চাই না যানজট আর মশার হাত থেকে বাঁচতে চাই। আমার মেয়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘ দিন বিছানায় পড়েছিল। তাই মশাকে আমরা অনেক ভয় পাই। মেয়র যেসব প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন তা যেন পালন করেন এটুকুই চাওয়া।
উল্লেখ্য, এবার দুই সিটি নির্বাচনে ১৩ জন মেয়র প্রার্থীসহ কাউন্সিলর পদে প্রায় সাড়ে ৭শ’ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে ৫৪টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ১৮টি সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ড নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি গঠিত। এছাড়া দুই সিটিতে মোট ভোটার ৫৪ লাখ ৬৩ হাজার ৪৬৭ জন।
এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটিতে মোট ভোটার রয়েছে ৩০ লাখ ১০ হাজার ২৭৩ জন। আর ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ভোটার রয়েছে ২৪ লাখ ৫৩ হাজার ১৯৪ জন। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী বর্তমান মেয়র আতিকুল ইসলাম এবং বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল।