ইভিএমে ভোট দিতে ব্যাপক আগ্রহ ভোটারদের

, নির্বাচন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-31 16:19:14

প্রথমবারের মতো ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন(ইভিএম) এর মাধ্যমে ভোট দিতে যাচ্ছেন ভোটাররা। শনিবার (০১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলবে এ ভোট গ্রহণ।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ভোট কেন্দ্রে ভোর থেকে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন বলে দিচ্ছে আধুনিক এ প্রযুক্তিতে ভোট দিতে আগ্রহের কমতি নেই তাদের। বয়োজেষ্ঠ্য থেকে শুরু করে তরুণ ও মধ্যবয়স্ক সব বয়সী ভোটারদের মধ্যে ইভিএমে ভোট দিতে উৎসাহ- উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে।    

এদিকে ভোর থেকে প্রার্থীদের কর্মীরা টেবিলে বসে ভোটারদের মাঝে ভোটার স্লিপ বিতরণ ও  কার ভোট কোন কেন্দ্রে তা বলে দিতে সাহায্য করছেন।

নাজিরা বাজার ইসলামিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা আব্দুস সাত্তার বলেন, প্রথমবার ইভিএমে ভোট দিতে যাচ্ছি। দেখি যন্ত্রে ভোট দিলে কেমন হয়। 

তফসিল ঘোষণার পর থেকে ভোটারদের ইভিএমে ভোটদানে যাতে অসুবিধায় পড়তে না হয় তার জন্য মক ভোটিং, বিভিন্ন প্রশিক্ষণ, লিফলেট ও প্রচারপত্র বিলি, পত্রিকা ও টিভিতে বিজ্ঞাপন প্রচারের ব্যবস্থা করেছিল নির্বাচন কমিশন।

এছাড়া কেন্দ্রে পৌঁছানোর পর যাতে জোরপূর্বক পছন্দের প্রার্থীর বাইরে অন্যজনকে ভোটদানে বাধ্য না করতে পারে, সেজন্য কেন্দ্রের অভ্যন্তরে দায়িত্ব পালন করবেন দুজন করে সেনাসদস্য। নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং সব প্রার্থীর জন্য সমান-সুযোগ প্রদানে কোনো ধরনের কার্পণ্য করবে না নির্বাচন কমিশন।

ইভিএমে ভোটদানের ব্যবস্থা রাখতে প্রচলিত নিয়মের মধ্যে থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত রয়েছে কমিশনের। তবে ভোটের পরিবেশ পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে সেক্ষেত্রে বাড়তি ফোর্স মোতায়েন করে নির্বাচন সম্পন্ন করবে কমিশন।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, একটি ইভিএমে প্রায় চার হাজার পর্যন্ত ভোট দেওয়া যায়। সর্বোচ্চ ৬৪ জন প্রার্থীর নাম দেওয়া যায়। অশিক্ষিত কিংবা অল্প শিক্ষিতরাও খুব সহজে বাটন চেপে ভোট দিতে পারেন। একটি ভোট দিতে প্রায় ১৪ সেকেন্ডের মতো সময় লাগে।

ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে একটির বেশি ভোট দিতে পারবেন না। ইভিএমেও প্রার্থীর পক্ষে পোলিং এজেন্টরা ভোটকেন্দ্রে থাকবে। মেশিনটিতে একটি পূর্ব-প্রোগ্রামিং করা মাইক্রোচিপ থাকে, যা প্রতিটি ভোটের ফল তাৎক্ষণিকভাবে হিসাব করে প্রদর্শন করে।

ইভিএমে ভোট দেবেন যেভাবে

ভোটকেন্দ্রের নির্ধারিত কক্ষে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র বা স্মার্টকার্ড, আঙুলের ছাপ, ভোটার নম্বর যাচাইয়ের উদ্দেশে কার্ডটি একটি মেশিনে প্রবেশ করাবেন। এ সময় আপনার ছবি ও তথ্যাবলি একটি মনিটরে প্রদর্শিত হবে। প্রার্থীর পোলিং এজেন্টও আপনার তথ্যাবলি দেখতে পারবেন।

ভোটার হিসেবে চিহ্নিতকরণ হয়ে গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইভিএম মেশিনগুলো ভোট প্রদানের জন্য সচল হবে। মেশিনের ওপরে প্রার্থীদের প্রতীক বাম দিকে থাকবে। ডান পাশে প্রার্থীর নাম থাকবে। যতগুলো পদের জন্য ভোট প্রদান করতে হবে কক্ষের ভেতরে ঠিক ততগুলো ডিজিটাল ব্যালট ইউনিট রাখা থাকবে।

ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে চাইলে নামের পাশে থাকা সাদা বাটনে চাপ দিতে হবে। এ সময় প্রতীকের পাশে একটি বাতি জ্বলতে দেখা যাবে। ভোট নিশ্চিত করতে চাইলে নিচে থাকা সবুজ বাটনে চাপ দিলে ভোট প্রদান প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।

তবে ভুল প্রার্থী বা প্রতীককে বেছে নিলে সেটাও সংশোধনের ব্যবস্থা রয়েছে। তবে সেটা অবশ্যই সবুজ বাটন চাপ দেওয়ার আগে করতে হবে। ভুল সংশোধনের ক্ষেত্রে নিচে থাকা লাল বাটনে চাপ দিলেই ভুল হওয়া ভোটটি বাতিল বলে গণ্য হবে। এরপর আগের দেওয়া পদ্ধতি অনুসরণ করেই পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন ভোটাররা।

সবুজ বাটন চাপ দেয়ার পর আপনার ভোট দেয়া প্রতীক ছাড়া বাকি সব প্রতীক অদৃশ্য হয়ে যাবে। এতে আপনি নিশ্চিত হবেন যে, ওই প্রতীকে আপনার ভোট প্রদান প্রক্রিয়া সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

তবে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে ভোটারদের, ইভিএম মেশিনের নিচের দিকে থাকা সবুজ বাটন চাপ দেওয়ার পরে কোনো অবস্থাতেই আর ভোট সংশোধন করা যাবে না।

এ সম্পর্কিত আরও খবর