ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) নির্বাচনে বেসরকারিভাবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী আতিকুল ইসলাম। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত ডিএনসিসি নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ইভিএম ভোটে নির্বাচিত হন তিনি।
পাঁচ বছর আগের ভোটে ঢাকা উত্তরে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন প্রয়াত পোশাক ব্যবসায়ী আনিসুল হক। তার মৃত্যুর পর গেল বছরের ফেব্রুয়ারিতে উপ-নির্বাচনে জিতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়রের দায়িত্বে আসেন মো. আতিকুল ইসলাম। তৈরি পোশাক ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজিএমইএ-এর সাবেক এই সভাপতি এর আগে ব্যবসায়ী হিসেবেই পরিচিত ছিলেন।
আতিকুল ইসলাম পারিবারিক ঐতিহ্য, পরিচ্ছন্ন ব্যবসায়ী নেতা এবং সামাজিক অবস্থানের কারণে ক্লিন ইমেজ রয়েছে তার। এছাড়া আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পছন্দের মানুষ তিনি।
১৯৬১ সালের ১ জুলাই নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর শহরের অভিজাত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। আতিকুলের পৈতৃক নিবাস কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলায় (বর্তমান তিতাস উপজেলা)। তার পিতার নাম মমতাজউদ্দিন আহমেদ ও মাতার নাম মাজেদা খাতুন। আতিকুলের জন্মের সময় তার পিতা সৈয়দপুরে কর্মরত ছিলেন। আতিকুল বিএএফ শাহীন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন।
১৯৮৫ সালে আতিকুল ইসলাম তৈরি পোশাক খাতে ব্যবসা শুরু করেন। দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে কঠোর পরিশ্রম করে গড়ে তুলেছেন ইসলাম গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ। তিনি ২০১৩-১৪ মেয়াদে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমিএ) সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
নবনির্বাচিত এই মেয়রের বাবা ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা। তারা পাঁচ ভাই ও ছয় বোন। তিনি সবার ছোট। ১১ ভাইবোনের মধ্যে তার এক ভাই বিচারপতি তাফাজ্জল ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি। তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায়ে অন্যতম ভূমিকা পালন করেন। আতিকুলের আরেক ভাই লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মঈনুল ইসলাম।
একটি আধুনিক, সচল, গতিময় ঢাকা উপহার দিতে সর্বাত্মক কাজ করবেন। উন্নত বিশ্বের মতো আইভিএম পদ্ধতিতে সকল সংস্থাকে সঙ্গে নিয়ে বছরব্যাপী মশক নিধন কার্যক্রম উন্নয়ন, সকলের জন্য নানা সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন একাকাভিত্তিক দৃষ্টিনন্দন উন্মুক্ত পার্ক ও আধুনিক খেলার মাঠ নির্মাণ, টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আমিনবাজারে আরআরএফ স্থাপনের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে বর্জ্য অপসারণ ও জ্বালানি শক্তিতে রূপান্তর, নগরীর বিভিন্ন এলাকায় আধুনিক পশু জবাইকেন্দ্র স্থাপন, তারুণ্যকে অনুপ্রাণিত করতে এবং প্রতিবেশীদের মধ্যে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি বাড়াতে শহরের সকল ওয়ার্ডে নিয়মিত পাড়া উৎসব উদযাপন, ডিএনসিসির প্রতিটি স্থাপনায় মার্তৃদুগ্ধ কক্ষ নির্মাণ, বস্তিবাসীদের জন্য নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণেও কাজ করবেন আতিকুল।
এছাড়া রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসন, বিশেষভাবে সক্ষম এবং নারী-পুরুষ-শিশু নির্বিশেষে সকলের জন্য পর্যাপ্ত আধুনিক পাবলিক টয়লেট নির্মাণ, ঢাকা উত্তরের উন্নয়ন প্রকল্পসহ বিভিন্ন জায়গায় মিস্ট ব্লোয়ার এবং অন্যান্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে বায়ুদূষণ কমানো, ডিএনসিসির বর্ধিত এলাকায় সিআরএইচসিসি এবং পিএইচসিসি নির্মাণ, ডিএনসিসির প্রতিটি ওয়ার্ডে নানা সুবিধা সম্বলিত ওয়ার্ড কমপ্লেক্স তৈরি করা এবং মিরপুরে ডিএনসিসির নিজস্ব জায়গায় বৃক্ষ অনুরাগীদের জন্য বৃক্ষ ক্লিনিক ও পোষ্য প্রাণী ক্লিনিক নির্মাণ করারও প্রচেষ্টা থাকবে তার।