ভোটকেন্দ্রে বিরোধীপক্ষের দৃশ্যমান অনুপস্থিতি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর তিনটায় নির্বাচন ভবনে নিজ দফতরে লিখিত বক্তব্যে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
মাহবুব তালুকদার বলেন, বাংলাদেশে নির্বাচন ও গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কি? এই প্রশ্নের সামনে আমাদের দাঁড় করিয়েছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচন। নির্বাচনবিমুখতা গণতন্ত্রহীনতার নামান্তর। এই নির্বাচনে ভোটের প্রতি জনগণের অনীহা দেখে মনে প্রশ্ন জাগে, জাতি কি ক্রমান্বয়ে গণতন্ত্রহীনতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে? ভোটকেন্দ্রে বিরোধীপক্ষের দৃশ্যমান অনুপস্থিতি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। তাই নির্বাচন প্রক্রিয়ার সংস্কার ও নির্বাচন ব্যবস্থাপনার পরিবর্তন অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচন শেষ হওয়া পর্যন্ত যেভাবে আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে, তাতে আচরণবিধি রাখা না-রাখা সমান। আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগগুলো যাচাইয়ের কোনো লক্ষণ পরিলক্ষিত হয়নি। আচরণবিধি না মানা এবং এ বিষয়ে ব্যবস্থা গৃহীত না হওয়া ফ্রি-স্টাইল নির্বাচনের মূল উপাদান।
মাহবুব তালুকদার বলেন, ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অস্বাভাবিক কম ভোট পড়া আমার কাছে স্বাভাবিক বলেই মনে হয়। এটা গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত হতে পারে, কিন্তু এটাই বাস্তবচিত্র। জনগণ নির্বাচন বা ভোটের প্রতি নিরাসক্ত হলে নানাপ্রকার ব্যাখ্যা বা অপব্যাখ্যা দিয়ে এই বাস্তব অবস্থার চিত্রটি খণ্ডন করা যাবে না।
তিনি বলেন, গণতন্ত্রকে সুরক্ষা দেয়ার জন্য কর্তৃত্ববাদী শাসনের প্রয়োজন, কোনো কোনো বিজ্ঞজন এমন বক্তব্য রেখেছেন। কিন্তু গণতন্ত্র আপন মহিমায় বিকশিত ও উদ্ভাসিত হতে পারে, যদি অবাঞ্ছিত উপায়ে তাকে বন্দী করা না হয়।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থা ব্যর্থ হলে ক্ষমতা হস্তান্তরের স্বাভাবিক পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। সেই অবস্থা কোনোভাবেই কাম্য নয়। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে সকল রাজনৈতিক দল আলোচনার টেবিলেই নির্বাচন ও গণতন্ত্রের ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে পারে। তা না হলে অনিশ্চিত গন্তব্যের পথে পা বাড়াবে বাংলাদেশ।