চট্টগ্রাম থেকে: বন্দরনগরী চট্টগ্রামের প্রথম নির্বাচিত সিটি করপোরেশনের মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী। যিনি নির্বাচনে সাধারণ জনগণকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন।
এরপর বাকি যারাই মেয়র পদে এসেছেন সবাই দলীয় নেতাকর্মী বা স্বজনদের অথবা নিজের পকেট ভারী করেছেন—এমনটাই বলছিলেন চট্টগ্রাম নগরীর আসকার দিঘীরপাড় এলাকার শত বছর বয়সী বৃদ্ধ মোহাম্মদ ইউনূছ। আগামী ২৯ মার্চ অনুষ্ঠেয় চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলতেই বার্তা২৪.কমের কাছে তার এ অনুভুতি প্রকাশ করেন তিনি।
মোহাম্মদ ইউনূছ বলেন, “সিটি নির্বাচন আসলেই বড্ড মনে পড়ে চট্টলবীর এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর কথা। গরিবের কাছে যিনি প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা বাস্তবায়ন করতেন। তার পরে যারা চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে বিজয়ী হয়ে এসেছেন, সবাই নানা প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়ন করেননি। বরং কেউ নেতাকর্মীদের আবার কেউ নিজের পকেট ভারী করেছেন। একমাত্র মহিউদ্দিন চৌধুরী গরিবের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতেন। যার মধ্যে ছিল না কোন ছোট-বড় ভেদাভেদ।”
ইউনূছ আরও বলেন, “সিটি মেয়র হওয়ার পর আওয়ামী লীগ নেতা থেকে চট্টলবীর হিসেবে পরিচিত হন তিনি। অসংখ্য গরিব-দুঃখী মানুষের মনে স্থান করে নেন প্রয়াত এ নেতা। যার উন্নয়ন, কথা-বার্তা এখন খুব মিস করি আমি। যাকে শতবার ভুলার চেষ্টা করেও পারব না কেউ ভুলতে। কারণ, তিনি আমাদের নেতা, আমাদের বীর ছিলেন।”
“এখন নির্বাচন এলে ভয় করে” মন্তব্য করে মোহাম্মদ ইউনূছ বলেন, “এখন নির্বাচনে যারা আসে তাদের নিয়ে কথা বলাও মুশকিল। কারণ, সঠিকটা বলে দিলে মারধর শুরু হয়। স্বাধীন দেশে এখন আর সমালোচনাও করা যায় না।”
মেয়র থাকাকালে আপনাকে দেওয়া কী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করেছেন চট্টলবীর— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমার চোখের আলো ফিরিয়েছেন, ছেলেকে চাকরি ও স্ত্রীকে চাকরি দিয়েছেন। ভোট চাইতে এসে এসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আমাকে। তার সবকিছু খুব মিস করি।”
১৯৪৪ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হন এ বি এম মহিউদ্দীন চৌধুরী। স্বাধীনতার পর থেকে মৃত্যু অবধি চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি, ১৯৯৩ সাল থেকে ২০০৯ পর্যন্ত কয়েক দফায় বন্দরনগরীর মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছেন।
এছাড়াও ১৮৬৩ সালের ২২ জুন চট্টগ্রাম পৌরসভা গঠিত হয়। তারপর পৌরসভাকে সিটি করপোরেশনে উন্নীত করা হয় ১৯৯০ সালের ৩১ জুলাই। তখন একজন মনোনীত মেয়র ও পরবর্তীকে প্রথম চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত মেয়র হন চট্টলবীর। এরপর ২০১৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর বার্ধক্যজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে ৭৩ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন জনপ্রিয় এ আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা।