১৯৭১ সাল, চারদিকে যুদ্ধের ডামাডোল। আমঝুপি নামে এক গ্রাম। সে গ্রামেরই মানুষ সয়ফর আর ময়ূরজান। প্রচণ্ড ভালোবাসে একে অপরকে। দেশকে শত্রু মুক্ত করার যুদ্ধে সয়ফর তো আর ঘরে বসে থাকতে পারে না। সিদ্ধান্ত নেয় যুদ্ধে যাবার। কিন্তু ময়ূরজানের কী হবে? অজানা শংকায় নিজেকে ঠিক রাখতে পারে না সয়ফর।
যুদ্ধে যাবার আগে ময়ূরজানকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেয় সয়ফর। মসজিদের ঈমাম ডেকে ময়ূরজানকে বিয়ে করে। ঠিক সেই রাতেই গ্রামে হানা দেয় পাক আর্মি। ময়ূরজানকে নিয়ে পালায় সয়ফর। আশ্রয় নেয় ময়ূরজানের খালা মতিবানুর বাড়ি। সেখানেই এক রকম আতঙ্কে বাসর রাত কাটে তাদের। পরদিন খালার কাছে ময়ূরজানকে রেখে যুদ্ধে চলে যায়। এরপর অন্য ইতিহাস। দেশ স্বাধীন হয়। পাকিস্তানী ক্যাম্প থেকে মুক্ত হন বন্দী ময়ূরজান। তখন তিনি গর্ভবতী। এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। সন্তানকে নিয়ে শুরু হয় আরেক যুদ্ধ। সমাজের নানা লাঞ্ছনা, গঞ্জনা আর অবহেলা। সে এক করুণ কাহিনী। স্বাধীন দেশে ময়ূরজান যেন পরাধীন। এভাবেই এগিয়ে চলে নাটকের গল্প।
লেখক টিপু আলম মিলন বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে বীরাঙ্গনারা আজও অবহেলিত। সমাজে বসবাসরত কিছু মানুষের তাচ্ছিল্যের তীর বিদ্ধ করে তাদের। অন্তর-দ্বন্দ্বে দগ্ধ এসব বীরাঙ্গনার ত্যাগের কি কোনোই মূল্য নেই? তাদেরই একজন বীরাঙ্গনা ময়ূরজান। তার জীবনের গল্পই তুলে ধরা হয়েছে নাটকে। হৃদয়ষ্পর্শী এ কাহিনী দর্শকদের ভালো লাগবে বলে আমার বিশ্বাস।
এমনই এক গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে নাটক ‘বীরাঙ্গনা’। এতে বীরাঙ্গনা চরিত্রে অভিনয় করেছেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী অপর্ণা ঘোষ।
নাটকের গল্প লিখেছেন পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক বৈশাখী টিভির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক টিপু আলম মিলন। আনন জামানের চিত্রনাট্যে এটি পরিচালনা করেছেন শুদ্ধমান চৈতন।
মিড এন্টারপ্রাইজের প্রযোজনায় নাটকটিতে অপর্ণা ছাড়াও আরো অভিনয় করেছেন রওনক হাসান, মনোজ প্রামানিক, রিয়া খান, মনির জামান, সানজিদা মিলা।
২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বৈশাখী টিভিতে রাত সাড়ে ৮টায় প্রচার হবে একক নাটক ‘বীরাঙ্গনা’।