করোনায় আক্রান্ত হয়ে চলে গেলেন বরেণ্য অভিনেত্রী, নির্মাতা ও সাবেক এমপি সারাহ বেগম কবরী।
শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) রাত ১২টা ২০মিনিটে রাজধানীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭০ বছর।
কিংবদন্তি এই তারকার মৃত্যুতে বিনোদন অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। ফেসবুক যেনো হয়ে উঠেছে শোক বই।
সামাজিক এই যোগাযোগ মাধ্যমে প্রয়াত এই তারকার সঙ্গে কাটানো মুহূর্ত তুলে ধরছেন তারকারা। সেই সঙ্গে প্রকাশ করছেন শোক।
শোক প্রকাশ করে ঢালিউড কিং শাকিব খান লিখেছেন, চলচ্চিত্রের যারা পথপ্রদর্শক তারা একে একে চলে যাচ্ছেন। সেই পথে পাড়ি দিলেন আমাদের চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরী আপা। তিনি আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্নাইলাহি রাজিউন)। চলচ্চিত্রের প্রাজ্ঞজনের একজন ছিলেন কবরী আপা। তিনি সোনালি অতীতে সমুজ্জ্বল সাক্ষী ছিলেন। সুতরাং, হীরামন, ময়নামতি, চোরাবালি, পারুলের সংসার, বিনিময়, আগন্তুক, সুজন সখী, তিতাস একটি নদীর নাম, সারেং বউ, নীল আকাশের নিচেসহ অসংখ্য জনপ্রিয় চলচ্চিত্রের নায়িকা ছিলেন কবরী আপা। অভিনেত্রী পরিচয়ের বাইরে পরিচালনাতেও সুনাম অর্জন করেছিলেন তিনি। পর্দার মিষ্টি মেয়ে হিসেবে খ্যাতি পেলেও ব্যক্তি জীবনে কবরী আপা ছিলেন অত্যন্ত ব্যক্তিত্ববান একজন মানুষ। কিংবদন্তি এই মানুষটির সাথে আমার অসংখ্য স্মৃতি। যখনই দেখা হতো আমাকে স্নেহ করতেন। তাঁর সময়কার বিভিন্ন স্মৃতি শেয়ার করতেন। কবরী আপার মৃত্যুতে প্রিয় অভিনেত্রী হারানোর পাশাপাশি একজন অভিভাবক হারানোর শোক অনুভব করছি। যেখানেই থাকুন, ভালো থাকুন কবরী আপা”
বুবলি শোক প্রকাশ করে লিখেছেন, “মৃত্যু সবচেয়ে বড় সত্য কিন্তু এতো অবিশ্বাস্য কেনো? আমাদের সবার মৃত্যু হবে জেনেও মানতে ইচ্ছে করে না কেনো? পৃথিবীতে হয়তো এমন অনেক কেনোর কোনো উত্তর নেই। ওপারে ভালো থাকবেন কবরী ম্যাডাম। আপনার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।”
শোক প্রকাশ করে সিয়াম আহমেদ লিখেছেন, “অবশেষে ঢাকাই চলচ্চিত্রের অন্যতম সেরা অভিনেত্রী চলচ্চিত্রের 'মিষ্টি মেয়ে' খ্যাত সারাহ বেগম কবরী চলে গেলেন করোনা আক্রান্ত হয়ে (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আমি তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।”
অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা লিখেছেন, “আপনার হাসি, আপনার অভিনয়, আপনার মিষ্টিমুখ- সকল বয়সের শ্রোতাদের মন্ত্রমুগ্ধ করেছে। রূপালি পর্দার সেরা অভিনেত্রী...। আমি কিভাবে আপনাকে বিদায় জানাবো...! দমবন্ধ লাগছে ...! শান্তিতে থাকুন কবরী ফুপু।”
শোক প্রকাশ করে ফাহমিদা নবী লিখেছেন, আজ আর কোন ছবি নয়, মনের ভেতর থাকুক সেই ছবি, যে ছবি চির অমলিন। কিন্তু এই ছবিটা না দিয়ে পারলামনা।কেমন যেন মায়া আর কষ্ট মাখা আত্মবিশ্বাসী ছবিটা!ছবিটাতে একজন সংগ্রামী, কষ্টকে জয় করা এবং আবার স্বপ্ন দেখবার প্রত্যয়ে নিজেকে তৈরী করবার একজন নতুন সাহসি নারীকে দেখলাম, মনে হলো উনাকে নিয়ে লিখে কিছুটা হারানোর বেদনা ভুলি.... !মিষ্টি মেয়ে “খ্যাত চিত্রনায়িকা কবরী চিরনিদ্রায় চলেই গেলেন!
মনে হচ্ছে অনেক বৃষ্টি হোক, ঝড় হোক
ঝরে যাক অব্যক্ত বেদনা এই ভোর রাতে!
মৃত্যু যার যখন হবে ,তার তখনি চলে যেতে হবে।এ নিয়ে আর কিছু বলবোনা।পবিত্র মাসে
চলে গেলেন..সেটাই ভালো হলো।
আব্বার কথা মনে পড়ছে.....কাঁদতে পারিনা আর.........!
কবরী আন্টিকে আমার বকুল ফুল মনে হলো।
জানিনা কেন! বকুল ফুলকে খুব দুখী ফুল মনে হয় সেই ছোটবেলা থেকে। যখনি কুড়াতাম ,তখনি মনে হতো , এই ফুল তো ছেড়া যায়না, বিশাল গাছে ছোট্ট ছোট্ট ফুল।ঝোরে ঝোরে পড়ে ,বৃষ্টি ফোটার মতো। বোধহয় কাদেঁ আর সুখ বিলায়!
শুকিয়ে যায় কিন্তু গন্ধ ছড়াতেই থাকে আজীবন ,কি আশ্চর্য !
তাই বকুল ফুল অন্যরকম প্রিয় দামি সংগ্রামি ফুল আমার কাছে।
যে দুখি ,সেই তো সংগ্রামী
কষ্টের চোখই তো ,এতো মিষ্টি হাসি বহন করতে পারে! আমার কেন যেন তাই মনে হয়েছে তার এই স্হির চিত্রটি দেখে।অনেক যুদ্ধ করেছেন নিজের সাথেই নিজেই বোধহয়! অনেক ক্লান্ত ছিলেন।অনেক বেদনাকে ছাপিয়ে আবার হাঁটতে পথ খুঁজেছিলেন হয়তো!
আপনার স্বপ্নের ছবিটা বানানো হলোনা!
থাক , চির নিদ্রায় আপনার আত্মার শান্তি হোক।
আপনার জন্য বকুল ফুলের ভালোবাসা।
আল্লাহ আপনাকে জান্নাত দান করুন। আমিন
মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ ঐশী কবরীর সঙ্গে তোলা বেশ কয়েকটি ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, “আপনার সঙ্গে একই মঞ্চ শেয়ার করাটা আমার সৌভাগ্য ছিলো। আপনার প্রতিটি শব্দ যেনো ছিলো মধুর এবং আপনার হাসি বাস্তবে দেখাটা যেসো আমার কাছে স্বপ্ন ছিলো। কিন্তু আপনার চলে যাওয়া সত্যি মেনে নিতে পারছি না। ম্যাডাম আল্লাহ আপনাকে জান্নাত দান করুক। আপনি কতো সৌভাগ্যবতী ম্যাডাম। আমি শুনেছি আল্লাহ যাদের বেশি ভালোবাসেন তাদের এই পবিত্র রমজান মাসে মৃত্যুর ভাগ্য হয়। সবাই আপনাদের দোআতে তাকে রাখবেন।”
সংগীতশিল্পী কনকচাঁপা লিখেছেন, “আসলেই আর পারছিনা! কবরী আপা নেই। ঘন্টা পাঁচেক আগে দোয়া চেয়ে স্ট্যাটাস দিলাম আর এখনই এটা শুনলাম ! এভাবেই আমরা একে একে হারাবো আমাদের প্রিয়জনকে! আবারও বলি আমরা অবশ্যই জানি আমরা একান্তই তোমার আল্লাহ!এবং তোমার দিকেই প্রত্যাবর্তনকারী। তারপর ও আমরা মানুষ।আপনজনকে ভালোবাসা আমাদের স্বভাবজাত স্বভাব। প্রিয়জন চলে গেলে পাঁজরটাই মনে হয় ভেঙে যায় আর যদি মোটামুটি নিয়মিত হয় তখন তা সহ্যের বাইরে চলে যায়। আল্লাহ, এই রমজানে চলে যাওয়া মানুষটিকে এবং আরও যারা চলে যাচ্ছেন সবাইকে তুমি দয়া কোরো। বিশেষ অনুগ্রহ কোরো।আমাদের সবাইকে মাফ করে দাও আল্লাহ। এই করোনার ভয়াবহ থাবা তুমি তুলে নাও।তোমার রহমানুর রাহিম নামের শান দেখাও আল্লাহ! তুমি তো সব পারো!”
এছাড়াও শোক প্রকাশ করেছেন অপু বিশ্বাস, মমতাজ বেগম, আঁখি আলমগীর, জায়েদ খান, বিজরী বরকতুল্লাহ, বেলাল খান, শাহনাজ খুশি, বিদ্যা সিনহা মিম, ইমন সাহাসহ বিনোদন ও রাজনীতি অঙ্গনের অনেকেই।