অমিতাভ সম্পর্কে জানার আছে অনেক

সিনেমা, বিনোদন

বৃষ্টি শেখ খাদিজা, নিউজরুম এডিটর | 2023-12-11 14:27:16

রূপালি পর্দা ও বাস্তবে অমিতাভ বচ্চনের রয়েছে বর্ণাঢ্য জীবন।

প্রতিদিনই ভক্তদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকেন বচ্চন পরিবারের কর্তা।

আজ ১১ অক্টোবর বিগ বি’র ৭৬তম জন্মদিন।

কিংবদন্তি এই অভিনেতা সম্পর্কে অনেক কিছুই পাঠকদের জানা।

তবে অজানা ব্যাপারও কম নয়।

অমিতাভের জানা-অজানা তথ্য নিয়ে বার্তা২৪-এর জন্মদিন স্পেশাল—


উচ্চতা
** বলিউডে অমিতাভ বচ্চনই সবচেয়ে লম্বা অভিনেতা। তার উচ্চতা ৬ ফুট ২ ইঞ্চি।

পদবি পরিবর্তন
** অমিতাভের পদবি ছিলো ‘শ্রীবাস্তব’। কিন্তু বাবা হরিবংশ রাই বচ্চন নামের শেষে `বচ্চন' ব্যবহার করায় তিনি আর তা বদলাননি।

নাম পরিবর্তন
** হরিবংশ রাই বচ্চন ছেলের নাম রাখতে চেয়েছিলেন ‘ইনকিলাব’। কিন্তু কবি সুমিত্রা নন্দন পান্তের পরামর্শে তিনি বেঝে নেন ‘অমিতাভ’।

রূপালি পর্দায় পছন্দের নাম
** রূপালি পর্দার জন্য ‘বিজয়’ নামটি বেশি পছন্দ করতেন বিগ বি। অন্তত ২০টি ছবিতে এই নামের চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।

পড়াশোনা-চাকরি
** দিল্লি থেকে পড়াশোনা শেষ করে কলকাতার একটি শিপিং ফার্মের নির্বাহী হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন অমিতাভ। এটাই ছিলো তার প্রথম চাকরি। তখন ৫০০ রুপি বেতন পেতেন তিনি।

বেতন
** চলচ্চিত্র জগতে পা রাখার আগে অমিতাভের সবশেষ চাকরির বেতন ছিলো ১৬৮০ রুপি।

প্রথম গাড়ি
** কলকাতায় চাকরি করার সময় একটি সেকেন্ডহ্যান্ড ফিয়েট গাড়ি কিনেছিলেন অমিতাভ।

 

বিশেষ কারণ
** সুনীল দত্ত পরিচালিত ও অভিনীত ‘রেশমা অউর শেরা’য় (১৯৭১) বিশেষ কারণে জায়গা পেয়েছিলেন অমিতাভ। সুনীলের স্ত্রী অভিনেত্রী নার্গিস ছিলেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর বান্ধবী। আর অমিতাভ ছিলেন ইন্দিরা গান্ধীর ছেলে রাজীব গান্ধীর বন্ধু। সেই সুবাদে অমিতাভকে সুযোগ দিতে নার্গিসকে চিঠি লেখেন ইন্দিরা।

বাংলা ছবির মধ্য দিয়ে রূপালি পদায় অভিষেক
** হিন্দি ছবির অভিনেতা হলেও অমিতাভের অভিষেক হয়েছিল বাংলা চলচ্চিত্রের মাধ্যমে! ১৯৬৯ সালে মৃণাল সেনের বাংলা ছবি ‘ভুবন সোম’-এ ধারাবর্ণনা দিয়ে চলচ্চিত্রাঙ্গনে পা রাখেন তিনি। একইবছর হিন্দি ছবিতে অভিনয়ে অভিষেক হয় তার।

পারিশ্রমিক
** ‘সাত হিন্দুস্তানি’ ছবির মাধ্যমে ১৯৬৯ সালে অভিনয় জগতে পা রাখেন অমিতাভ। এতে কাজ করার বিনিময়ে পারিশ্রমিক হিসেবে তাকে দেওয়া হয়েছিলো এক হাজার রুপি।

সাদাকালো ছবি
** রূপালি পর্দার তারকা অমিতাভ একটি সাদাকালো ছবিতে অভিনয় করেছেন। সেটি হলো তার প্রথম ছবি ‘সাত হিন্দুস্তানি’।

ছিলো না ঘর
** অমিতাভকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। শুরুতে মুম্বাইয়ে থাকার ঘর ছিলো না তার। সেই সময় মেরিন ড্রাইভ এলাকায় রাত কাটতো তার। অমিতাভের দুরবস্থায় পাশে ছিলেন সংগীত পরিচালক কল্যাণজি আনন্দজি।

ফ্লপের পর ফ্লপ
** ক্যারিয়ারের শুরুতে অমিতাভের পরপর ১২টি ছবি চলে যায় ফ্লপের খাতায়। তার প্রথম হিট ছবি ‘জঞ্জির’ (১৯৭৩)।

ধারাভাষ্য
** ১৯৭৭ সালে ‘শতরঞ্জ কি খিলাড়ি’ ছবির ধারাবর্ণনায় অমিতাভের কণ্ঠ ব্যবহার করেছিলেন কিংবদন্তি চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়।

পছন্দ হয়নি অমিতাভের কণ্ঠ
** অল ইন্ডিয়া রেডিওতে সংবাদ পাঠক হিসেবে কাজ করতে চেয়েছিলেন অমিতাভ। সত্যজিৎ রায়ের ছবিতে কাজ করার অভিজ্ঞতাও ছিলো তার। অথচ কণ্ঠটা পছন্দ হলো না রেডিও কর্তৃপক্ষের!

বাবার কাজ
** যশ চোপড়া পরিচালিত ‘সিলসিলা’ (১৯৮১) ছবিতে অমিতাভের গাওয়া ‘রঙ বারসে’ গানের কিছু কথা লিখেছিলেন হরিবংশ রাই বচ্চন। এছাড়া ‘অগ্নিপথ’ ছবিতে অমিতাভের আবৃত্তি করা কবিতাও তার বাবার লেখা।

 

গুরুতর আঘাত
** ১৯৮৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘কুলি’র একটি অ্যাকশন দৃশ্যে অভিনয় করতে গিয়ে পেটে গুরুতর আঘাত পেয়েছিলেন অমিতাভ। এ কারণে দুই সপ্তাহ হাসপাতালে থাকতে হয়েছে তাকে।

অমিতাভের রোগবালাই
** অ্যাজমা রোগ আছে অমিতাভের। এছাড়া মাংসপেশি দুর্বল হয়ে যাওয়ার বিরল রোগ মায়াসথেনিয়া গ্রেভিস রোগেও ভুগছেন তিনি।

কিছুদিনের বিরতি
** ১৯৯২ সালে কিছুদিনের জন্য রূপালি পর্দার আড়ালে চলে গিয়েছিলেন অমিতাভ। এরপর ১৯৯৭ সালে ‘মৃত্যুদাতা’র মধ্য দিয়ে প্রত্যাবর্তন করেন তিনি।

ছিলো না কোনো কাজ
** ক্যারিয়ারের মধ্যবর্তী সময়ে হাতে কোনো কাজ ছিলো না অমিতাভের। তখন যশ চোপড়ার সঙ্গে কাজ করতে চেয়েছিলেন তিনি। তার প্রযোজিত ‘মোহাব্বাতে’ (২০০০) ছবির মাধ্যমে সেটি পূরণ হয়। এটি পরিচালনা করেন যশ চোপড়ার ছেলে আদিত্য চোপড়া।

লেখার দক্ষতা
** ডান-বাম দুই হাত দিয়েই সমানভাবে লিখতে পারেন সিনিয়র বচ্চন।

দ্বৈত চরিত্র
** মোট ১০টি ছবিতে দ্বৈত চরিত্রে হাজির হয়েছেন অমিতাভ। আর ‘মহান’ (১৯৮৩) ছবিতে তিনটি চরিত্রে দেখা গেছে তাকে।

৩০ ফুট ঝরনা থেকে লাফ
** ‘আকস’ (২০০১) ছবির জন্য বিশেষ কারিগরি সহায়তায় অভিনেতা মনোজ বাজপেয়িসহ ৩০ ফুট উঁচু ঝরনা থেকে লাফিয়ে পড়েন বিগ বি।

টানা শুটিং
** ২০০৬ সালে ‘শুটআউট অ্যাট লোখান্ডওয়ালা’য় টানা পাঁচ ঘণ্টায় ২৩টি দৃশ্যে অভিনয় করে ইউনিটের সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন অমিতাভ।

একমাত্র অভিনেতা
** অমিতাভ ভারতের একমাত্র অভিনেতা যিনি নিজের ছবির রিমেকেও অভিনয় করেছেন। সত্তর দশকের মাঝামাঝি মুক্তি পাওয়া ধ্রুপদী ছবি ‘শোলে’র রিমেক হয় ২০০৭ সালে। এর নাম ছিল ‘রাম গোপাল ভার্মা কি আগ’। এতে অবশ্য খলচরিত্রে বড় পর্দায় এসেছেন তিনি।

সর্বাধিক মনোনয়ন
** বলিউড তারকাদের মধ্যে ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডে সেরা অভিনেতা বিভাগে সর্বাধিক ৪১বার মনোনয়ন পেয়েছেন অমিতাভ।

বেসামরিক সম্মাননা
** ভারত সরকারের কাছ থেকে বেসামরিক সম্মাননা হিসেবে ১৯৮৪ সালে পদ্মশ্রী, ২০০১ সালে পদ্মভূষণ ও ২০১৫ সালে পদ্মবিভূষণ খেতাব পান অমিতাভ।

অমিতাভ প্রথম
** এশিয়ার প্রথম অভিনেতা হিসেবে অমিতাভের মোমের মূর্তি স্থান পায় লন্ডনের বিখ্যাত মাদাম তুসো মিউজিয়ামে।

বাড়ির মূল্য
** অমিতাভ বচ্চনের দুই বাড়ি ‘জলসা’ ও ‘প্রতীক্ষা’র মূল্য ২০০ কোটি রুপি। ‘জলসা’ অমিতাভকে উপহার দিয়েছিলেন ‘শোলে’র পরিচালক রমেশ সিপ্পি।

আরামপ্রিয়
** অমিতাভ আরামপ্রিয় মানুষ। তার বাড়ির মেঝের জন্য ইতালি থেকে মার্বেল পাথর আনা হয়। বাথরুমের ফিটিংস এসেছে ফ্রান্স ও জার্মানি থেকে।

নামি-দামি ব্র্যান্ডের স্যুট
** স্যুট পরা পছন্দ করেন অমিতাভ। এক্ষেত্রে তার প্রিয় ব্র্যান্ড গাবানা। প্রতিষ্ঠানটি ৩০ বছর ধরে তার স্যুট তৈরি করে আসছে। পছন্দের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছে ফ্র্যাটেলি রসেটিটি ব্র্যান্ড। স্যুট বানানোর জন্য ইতালি থেকে স্যুটের কাপড়, ফ্রান্স থেকে সুতা ও ইংল্যান্ড থেকে বোতাম আনান তিনি।

বিলাসবহুল গাড়ি
** ১১টি বিলাসবহুল গাড়ি আছে অমিতাভের। পরিচালক বিধু বিনোদ চোপড়া ‘একলব্য: দ্য রয়েল গার্ড’ (২০০৭) ছবিতে অভিনয়ের পারিশ্রমিক হিসেবে তাকে একটি রোলস রয়েস ফ্যান্টম উপহার দেন। তবে তার পছন্দের গাড়ি লেক্সাস। কারণ এটি বুলেটপ্রুফ।

ঘড়ির নেশা
** ঘড়ির প্রতি বেশ আগ্রহ রয়েছে বিগ বি’র। এজন্য প্রতিটি উৎসব ও অনুষ্ঠানে একটি করে ঘড়ি কেনেন তিনি।

অমিতাভের শখ
** কলম সংগ্রহ করা অমিতাভের শখ। তার কাছে আছে হাজারের বেশি কলম। চমকপ্রদ তথ্য হলো, জার্মানির মম ব্লা কোম্পানি প্রতি বছর অমিতাভের জন্মদিনে তাকে একটি করে কলম উপহার দেয়।

পছন্দের জায়গা
** যুক্তরাজ্যের লন্ডন ও সুইজারল্যান্ডে বেড়াতে ভালো লাগে অমিতাভ বচ্চনের।

১০ দিনের জন্য ১০ কোটি
** একবার একটি বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠান ১০ দিন শুটিংর জন্য অমিতাভকে ১০ কোটি রুপি পারিশ্রমিক দিয়েছে।

ভালোবাসার শুরু
** পুনের ফিল্ম ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউটে অমিতাভ ও জয়া ভাদুড়ির প্রথম দেখা হয়েছিলো। তারাই একমাত্র দম্পতি, যারা একসঙ্গে ৩০টিরও বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন। বিয়ের পর জয়া ভাদুড়ি হয়ে যান জয়া বচ্চন। তাদের মেয়ে শ্বেতা নন্দা ও ছেলে অভিষেক বচ্চন। অমিতাভ-জয়ার পুত্রবধূ সাবেক বিশ্বসুন্দরী ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন ও নাতনি আরাধ্য বচ্চন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর