ঢাকার মঞ্চে নতুন নাটক ‘এ নিউ টেস্টামেন্ট অব রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট’। উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের ‘দা ট্রাজেডি অফ রোমিও এন্ড জুলিয়েট’ এর আখ্যানকে প্রশ্নবিদ্ধ করে লেখা হয়েছে ‘এ নিউ টেস্টামেন্ট অব রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট’ নাটকটি।
‘এম্পটি স্পেস’ নাট্যদল প্রযোজিত নাটকটি লিখেছেন সাইমন জাকারিয়া। কোভিড মহামারির দীর্ঘ বিরতির পর আগামী ২২ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মঞ্চে নাটকটির সপ্তম মঞ্চায়ন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
এর আগে দেশ ও দেশের বাইরে নাটকটির ৬টি প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। একঝাঁক তরুণ নাট্যশিল্পীদের সাথে নিয়ে নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন দলের শিল্প নির্দেশক নূর জামান রাজা।
নাটকের মঞ্চ সজ্জা, আলোক ও পোশাক পরিকল্পনাসহ আবহ সঙ্গীত পরিকল্পনাও করেছেন তিনিই।
নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র এখনকার একজন কবি। পূর্ণিমা রাতে সমাধিতে ফোঁটা ফুলের গন্ধে যিনি মাতোয়ারা হন, গেয়ে ওঠেন নিষ্ঠাপ্রেমের গান। সে রকম এক রাতে তাঁর গানে রোমিও আর জুলিয়েট এসে হাজির হয় কবির সামনে। কবি জুলিয়েটকে জানিয়ে দেন, রোমিও আসলে জুলিয়েটের আগে ভালোবাসত রোজালিনকে। তাঁকে দেখার জন্য বন্ধুদের সঙ্গে রাতের এক ভোজসভায় যায় সে। সেখানেই জুলিয়েটের রূপে মুগ্ধ হয়ে ভুলে যায় রোজালিনকে। এ কথায় অসহায় বোধ করে প্রেমিক যুগল। তাঁরা সাহায্য চান ফাদার ফায়ারের।
এই ফাদার গোপনে রোমিও-জুলিয়েটের বিয়ে সম্পন্ন করেছিলেন। সত্য প্রকাশ না করে তিনিই আবার প্যারিসের সঙ্গে জুলিয়েটের বিয়ে দিতে রাজি হয়েছিলেন। নিজের এ গোপন কর্মকে আড়াল করতে জুলিয়েটকে আত্মহত্যায় বাধ্য করেছিলেন। কবি সেটাও মনে করিয়ে দেন। কবির এসব কাণ্ডে ফাদার আহ্বান করেন উইলিয়াম শেক্সপিয়ারকে। কবি শেক্সপিয়ারকেও ছাড়েননি। প্রশ্নবাণে জর্জরিত করে তিনি শেক্সপিয়ারের দ্য ট্র্যাজেডি অব রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট নাটকের গঠন ভেঙে দেন।
তিনি বলেন, “রোমিও জুলিয়েটের বিখ্যাত বিয়োগান্তক প্রেমোপাখ্যানকে নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখেছেন এর রচয়িতা সাইমন জাকারিয়া। একজন সমালোচকের অবস্থান থেকে তিনি রোমিও জুলিয়েটের প্রেম পরিণয় ও বিয়োগের ঘটনা প্রবাহগুলোকে দেখিয়েছেন একজন কবির চরিত্রের মধ্য দিয়ে। ধর্ম থেকে রাজনীতি কিংবা সংস্কৃতি যে ক্ষমতার প্রভাব বলয়ের বাইরে নয় তা উঠে এসেছে নাটকিয়তার মাধ্যমে। ”
নাটকে জুলিয়েট চরিত্রে অভিনয় করেছেন লোবা আহম্মেদ। তিনি বলেন, “জুলিয়েট একজন আদর্শ প্রেমিকা। বিখ্যাত এ চরিত্রটিতে অভিনয়ের জন্য নিজেকে অনেক প্রস্তুত করতে হয়েছে। দেশে যতোটা প্রশংসিত হয়েছি, ভারতেও একাধিক শো তে দর্শকের প্রশংসা আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে। কোভিড মহামারির পর আবারও মঞ্চের আলোয় দাঁড়াতে পারছি এটা খুব আনন্দের। সকলকে আমন্ত্রণ জানাই প্রাণের মঞ্চে।”
তিনি ছাড়াও এ নাটকে অভিনয় করেছেন গোলাম শাহরিয়ার সিক্ত, স্বাধীন বিশ্বাস, নুরজামান রাজা, লোবা আহম্মেদ, নাসিমুল হোসাইন বাধন, বাপ্পি সরদার, শুভ্র আহম্মেদ ও আরিফুল ইসলাম। আবহ সঙ্গীত প্রক্ষেপন ও সার্বিক ব্যবস্থাপনা ইসমাইল হোসেন নয়ন। নাটকটির উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হয় ২৯ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মঞ্চে।