অবশেষে বড়পর্দায় টুটুলের স্বপ্নের ‘কালবেলা’

সিনেমা, বিনোদন

বিনোদন রিপোর্ট, বার্তা ২৪.কম | 2023-08-27 03:49:06

অনুষ্ঠিত হলো প্রয়াত সাইদুল আনাম টুটুল নির্মিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ‘কালবেলা’ চলচ্চিত্রের প্রিমিয়ার। আগামীকাল (১০ ডিসেম্বর) ঢাকার স্টার সিনেপ্লেক্স, যমুনা ব্লকবাস্টার এবং চট্টগ্রামের সিলভার স্ক্রিন প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শিত হতে যাচ্ছে চলচ্চিত্রটি।

চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট সুধীজন ও গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য রাজধানীর ফিল্ম আর্কাইভের বড়পর্দায় বুধবার বিকেল পাঁচটায় চলচ্চিত্রটির প্রথম বড়পর্দায় প্রদর্শিত হয়।

এ সময় গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন সাইদুল আনাম টুটুলের স্ত্রী অধ্যাপক মোবাশ্বেরা খানম। ২০১৮ সালে টুটুলের আকস্মিক প্রয়াণে তিনিই চলচ্চিত্রটির হাল ধরেন। তিনি বলেন, “আমি টুটুলের মতো করে বানাতে পারিনি। সেটা সম্ভব নয়। আমরা চেষ্টা করেছি। মুক্তিযুদ্ধের পাকিস্তানের প্রভাব এই দেশে পড়েছে তা দেখানো হয়েছে। অসহায়-গৃহহীন মানুষের ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প পর্দায় তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। সিনেমাটি একজন সংগ্রামী নারীর গল্প।”


চলচ্চিত্রটির প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, “সাধারণত এ ধরনের সিনেমা এক ধরনের স্থুলতা থাকে, কতগুলো তথাকথিত ব্যাপার থাকে। ওই বিভৎস জিনিসগুলো থাকে। সেগুলো না দেখিয়ে একটি মেয়ের জীবনে এ যুদ্ধ কতটা প্রভাব ফেলেছিল, কীভাবে সে সংগ্রাম করেছিল তা শৈল্পিকভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এক কথায় এ মেয়ে যেন আমাদের একাত্তরের বাংলাদেশ।”

সংস্কৃতিজন নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু বলেন, “টুটুল আমার বন্ধু সে-ই ১৯৬৮ সাল থেকে। আমরা এক সঙ্গে অনেকটা পথ হেঁটেছি। সিনেমাতে যেমনটা দেখানো হয়েছে, একদল মানুষ পায়ে হেঁটে ভারত চলে গিয়েছিল। তেমনি আমরাও ভারতে গিয়েছিলাম, যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলাম। বারবারই আমার সে সব স্মৃতি মনে পড়ছিল। আমার মনে হয় আমাদের তরুণদের সিনেমাটি দেখা উচিত। তাদের জানা উচিত সেই সময়ে কী রকম নিরন্তন যাত্রার মধ্য দিয়ে আমরা গিয়েছিলাম।”


সরকারি অনুদানে এ নির্মাতার প্রথম চলচ্চিত্র ‘আধিয়ার’ মুক্তি পায় ২০০৩ সালে। ১৯৪৬-৪৭ সালের বাংলার চাষীদের তেভাগা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে নির্মিত এই চলচ্চিত্র সমালোচক ও দর্শক উভয়ের কাছে নন্দিত হয়। তার ১৪ বছর পর ফের সরকারি অনুদানে (২০১৭-১৮) নির্মাণ করছিলেন তার দ্বিতীয় চলচ্চিত্র ‘কালবেলা’। ২০০১ সালে প্রকাশিত গবেষণা গ্রন্থ ‘নারীর ৭১ ও যুদ্ধপরবর্তী কথ্যকাহিনী’ বই থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধের সময়কালে একজন নারী সানজিদার অত্যাচার, নির্যাতনের গল্প তুলে ধরতে চাইছিলেন সাইদুল টুটুল।

কিন্তু ২০১৮ সালে তার অকস্মাৎ মৃত্যুতে থেমে যায় চলচ্চিত্রটির নির্মাণ কাজ।সেই অসমাপ্ত চলচ্চিত্রটির নির্মাণ সম্পন্ন করেন তার স্ত্রী ও চলচ্চিত্রটির প্রযোজক অধ্যাপক মোবাশ্বেরা খানম। তবে, সাইদুল আনাম টুটুল প্রায় নব্বই শতাংশ নির্মাণ কাজ নিজেই শেষ করে যেতে পেরেছিলেন।


এর কেন্দ্রিয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন তাহমিনা অথৈ এবং শিশির আহমেদ। অন্যান্য চরিত্রে রয়েছেন মাসুম বাশার, মিলি বাশার, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, লুৎফর রহমান জর্জ, শেখ মাহবুবুর রহমান, সায়কা আহমেদ, জুলফিকার চঞ্চল, কোহিনুর আলম, তানভীর মাসুদ ও আরও অনেকে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর