খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব বড়দিন। সবার মতো এই দিনটি বিশেষভাবে উদযাপন করবেন জনপ্রিয় অভিনেতা কল্যাণ কোরাইয়া। প্রথমবারের মতো এই অভিনেতা যুক্তরাষ্ট্রে বড়দিন উদযাপন করছেন।
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে এই প্রথমবার বড়দিন উদযাপন। প্রতি বছরই এক দুইবার যুক্তরাষ্ট্রে আসা হয়। আমার স্ত্রী তো এখানে থাকে। শ্বশুরবাড়ি এখানেই। আমি এসে তিন চার মাস থাকি। বিয়ে করেছি চার বছর হয়ে গেল। প্রথমবার বড়দিন উদযাপন করছি শ্বশুর বাড়ি। বাংলাদেশ থেকে শ্বশুরবাড়ির সবার জন্য গিফট নিয়ে এসেছিলাম। ক্রিসমাসের দিন সবাইকে গিফট দিবো। যেটাকে আমরা গিফট এক্সচেঞ্জ বলি। আত্নীয় স্বজন ছাড়াও এখানে কিছু বন্ধুবান্ধব আছে। তাদেরকে গিফট দিতে হবে সেই প্ল্যানিং করে রেখেছি। বিষয়টা সারপ্রাইজের মতো।’
তবে বাংলাদেশের বড়দিনের উৎসব ভীষণভাবে মিস করছেন কল্যাণ। কারণটা জানালেন এই অভিনেতা,‘ঢাকায় মা-বোনরা আছেন। এবারই প্রথম ঢাকার বাইরে বড়দিন উদযাপন করছি। পরিবার মিস করছি। বাংলাদেশে বড়দিনে পিঠা উৎসব হয়, আমাদের দেশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। এখানে তো আমাদের দেশের মতো হয় না। আমি যেভাবে অভ্যস্থ সেভাবে তো হয় না। সবই বিদেশি স্টাইল বলা যায়।’
যুক্তরাষ্ট্রে বড় দিনের উৎসব কিভাবে পালন হচ্ছে?
কল্যাণ বলেন,‘এদেশে তো অধিকাংশই খ্রিষ্টান ধর্মালম্বী। শতকরা ৯০ ভাগ বাড়ি বড়দিন উপলক্ষে সাজানো হয়। বড়দিনের উৎসব লেগেই আছে। ডিসেম্বর শুরু হওয়ার সাথে সাথে এই উৎসব আরো বড় আয়োজনে শুরু হয়। ঢাকায় বিশেষ কিছু স্থানে সাজ সজ্জায় বড়দিনের আয়োজন হয়। বিশেষ করে বড় হোটেলগুলোতে। এখানে সব জায়গায় বড়দিনের আমেজটা পাওয়া যায়। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষেই এই উৎসব পালন করে। এখানে প্রচুর বাঙালি আছে। তাদের মধ্যেও এই উৎসব নিয়ে উৎফূল্ল হতে দেখছি। বিশেষ করে শিশুরা তো আরও বেশি উৎসাহি থাকে।’
প্রায় প্রতিবছরই বড়দিন উপলক্ষ্যে বিশেষ নাটকগুলোতে অভিনয় করেন কল্যাণ। গত বছর অভিনয় করেছিলেন ‘তাঁর প্রত্যাবর্তন’ নাটকে। এবার কোনো নাটকে দেখা যাবে না।
কল্যাণ বলেন,‘ এটাও একটা খারাপ লাগা আছে। অভিনেতা হিসেবে এই উৎসবে কোনো নাটকে অভিনয় করতে পারলে অন্যরকম তৃপ্তি লাগতো। করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর এবারই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রে আসতে পারলাম। তাই থাকাও হচ্ছে কিছু বেশি সময়। বড়দিনের কোনো কাজ করা হয়নি। তবে বাংলাদেশ থেকে আমার হাতে থাকা সিরিয়ালগুলোর টানা কাজ করে দিয়ে এসেছি। কথা চলছে গিয়ে আবার কাজ করবো। এভাবেই আসলে ম্যানেজ করে কাজ করতে হয়।’
যুক্তরাষ্ট্রে অনেক বাংলাদেশি তারকার বসবাস। বেশিরভাগই নিউ ইয়র্ক থাকেন। কল্যাণ নিউ ইয়র্ক থেকে একটু দূরে মেরীল্যান্ডে আছেন। তিনি বলেন,‘সবার সঙ্গে কথা হয়। টনি দা, রিচি আপা, হিল্লোল, নওশীন, তমালিকা, নাফিসা- এরা সবাই নিউ ইয়র্কে। একসঙ্গে যে উদযাপন করবো সেটা মনে হয় এবার হবে না। হয়তো জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারির দিক তাঁদের সঙ্গে দেখা হবে।’
বিশেষ এই দিবসে কল্যাণের প্রত্যাশা, ‘এই করোনায় মানুষ অনেকভাবেই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সবাই স্বাভাবিক জীবনে ফেরার জন্য ফাইট করছি। অনেকে আত্নীয় স্বজন হারিয়েছি। সেই লসটা যেন দ্রুত রিকোভার করতে পারি। এই দিনে এটাই প্রার্থনা যে মানুষের মধ্যে সৃষ্টিকর্তা যেন নতুন করে শক্তি দেয়, আমাদের ধৈর্য শক্তি যেন আরও বাড়ায়।’