পড়াশোনার খুব একটা সুযোগ হয়নি। কিশোরগঞ্জ থেকে শহরে এসে মুখোমুখি হয়েছিলেন বাস্তবতার নির্মম কষাঘাতের। মাত্র ১৩ বছর বয়সে ১৯৯৩ সালে মিডিয়ায় প্রথম মেক আপ আর্টিস্ট হিসেবে কাজ শুরু করেন মানিক। তারপর আর পেছনে তাকাননি। একনিষ্ঠভাবে কাজ করে গেছেন। প্রায় আটাশ বছরের ক্যারিয়ারে মানিক হয়ে উঠেছেন বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় মেক আপ আর্টিস্ট।
মেকআপ আর্টিস্টদের মধ্যেই যাকে সুপারস্টার ধরা হয়। বুধবার (১৯ জানুয়ারি) একটি বিজ্ঞাপনচিত্রের শুটিংয়ে অংশ নিতে গিয়ে কাজের অবসরে সেই মানিককে সবার সামনে তুলে ধরলেন জনপ্রিয় অভিনেতা ও উপস্থাপক শাহরিয়ার নাজিম জয়। শুটিং সেটের মেকআপ রুমে বসেই মানিকের মুখোমুখি হন তিনি।
একান্ত আলাপচারিতায় মানিক জানান, তার হাতে মেকআপ করেই দর্শকনন্দিত হয়েছেন দেশের খ্যাতিমান অসংখ্য তারকা। দেশের প্রখ্যাত ও জনপ্রিয় অনেক শিল্পীর প্রথম মেক আপ আর্টিস্টও তিনিই। শুধু সততা ও বিনয়ের সঙ্গে সকলের সঙ্গে মেশার মূলমন্ত্র নিয়ে মেকআপ করেই তিনি রাজধানীর মহানগর প্রজেক্টে নিজের একটি ফ্ল্যাটের মালিক হয়েছেন।
শুধু তাই নয়, তার হাতে তৈরি ৬৫ জন মেক আপ শিল্পী বর্তমানে মিডিয়ায় কাজ করছেন। অভাবে পীড়িত এসব তরুণদের তিনি নিজ উদ্যোগে বাসস্থান ও খাদ্যের সংস্থান করে কাজ শিখিয়ে স্বনির্ভর করেছেন।
রাজধানীতে মানিক যখন আসেন তখন তাকে অনেক কষ্ট ও দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। সে কষ্ট ভোলেননি তিনি। নিজের জন্মস্থান কিশোরগঞ্জের মানুষদের জন্য তিনি রাজধানীতে একটি মেসের ব্যাবস্থা করেছেন। যাতে, রাজধানীতে আসা কোন দুর্গত কিশোরগঞ্জবাসী নিশ্চিন্তে তিনদিন সেখানে থাকতে পারে। শুধু তাই নয় যাওয়ার সময় তার হাতে তুলে দেন তিনশ টাকা। প্রয়োজনে সাধ্য অনুযায়ি ব্যবস্থা করে দেন চাকরির।
মেক আপ আর্টিস্ট মানিকের মতে, ইন্ডাস্ট্রিতে বর্তমানে কাজের সংখ্যা বাড়লেও মানের দিক থেকে কম সংখ্যক কাজই হচ্ছে। তার মেক আপের এত প্রশংসা ও জনপ্রিয়তার মূল কারণ মানসম্পন্ন মেক আপ উপকরণ-যা নিয়ে তিনি কখনোই আপোষ করেন না।
মানিকের বর্তমান স্বপ্ন একটি বৃদ্ধাশ্রম করার। এ জন্য তিনি সহযোগিতা চান সরকার ও সামর্থবানদের।
শাহরিয়ার নাজিম জয় জানান, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পেশার মানুষদের তিনি এমন করেই সবার সামনে উপস্থিত করতে চান তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে।
মানিক ও জয়ের কথপোকথন...