শিল্পী সমিতির নির্বাচনে অর্থ প্রদানের মাধ্যমে ভোট কেনার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বাতিল হয়েছে জায়েদ খানের প্রার্থীতা। ফলে এ পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন চিত্রনায়িকা নিপুন।
এর আগে টাকা দিয়ে ভোট কেনাসহ নানাবিধ অভিযোগ এনে জায়েদ খানের পদ বাতিল চেয়ে সংবাদ সম্মেলন ও মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন নিপুন। তারই প্রেক্ষিতে, সমাজ কল্যান মন্ত্রণালয়ের বিশেষ নির্দেশে আপিল বিভাগ থেকে শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বাদী-বিবাদীকে বিকেল ৪টায় এফডিসিতে উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানানো হয়। তবে বিকাল ৪টা থেকে বাদী উপস্থিত থাকলেও বিবাদী জায়েদ খান অনুপস্থিত ছিলেন।
নির্দিষ্ট সময়ের পর আরও ৩০ মিনিট অপেক্ষা করে আপিল বিভাগের দায়িত্বে থাকা সোহানুর রহমান সোহান নিপুনকে নিয়েই বসেন আলোচনায়। পরবর্তীতে জায়েদ খানের বিরুদ্ধে নিপুনের আনিত সকল অভিযোগের সত্যতা যাচাই বাছাই করে সাংবাদিকদের সামনে রায় ঘোষণা করেন সোহান।
রায় ঘোষণায় তিনি বলেন, “নির্ধারিত সময়ের পরও নির্বাচনের ভোট গণনা ও রায় প্রকাশ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা হারুন। ২৯ তারিখ ভোর সাড়ে পাঁচটায় ফল ঘোষণা করলেও কাগজপত্রে ২৮ জানুয়ারি ফল ঘোষণার তারিখ উল্লেখ করা হয়। এটি নিয়মের সুস্পষ্ট ব্যাত্যয়। এ ছাড়াও নির্বাচন চলাকালীন অর্থের বিনিময়ে ভোট কেনার বেশকিছু মৌখিক অভিযোগ পাওয়ার পরও তাৎক্ষণিক কোন ব্যবস্থান নেননি তিনি। তিনি পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করেছেন। আপিল বিভাগের যাচাই বাছাইয়ে দু’জন ভোটার লিখিতভাবে তাদের কাছে জায়েদ খানের টাকা দেয়ার অভিযোগ ও প্রাপ্তি স্বীকার জানিয়েছেন। মৌখিকভাবেও জানিয়েছেন একাধিক ভোটার।
সকল কিছু যাচাই বাছাইয়ের পর নির্বাচন বিধি লঙ্ঘন করায় সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান ও সদস্য চুন্নুর প্রার্থীতা বাতিল করা হল। এ পদে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বিকে নির্বাচিত ঘোষণা হল।”
এ ঘোষণার ফলে কার্যনির্বাহি সদস্য পদে নির্বাচিত হন চলচ্চিত্র অভিনেতা নাদির খান।
যদিও প্রার্থিতা বাতিল হওয়া জায়েদ খান গণমাধ্যমে আগেই জানিয়েছেন, নির্বাচন শেষ হয়ে যাওয়ায় আপিল বিভাগের কার্যকারিতা এখন আর নেই। ফলে আপিল বিভাগের এই বিচারে তিনি উপস্থিতি হওয়ার প্রয়োজন মনে করছেন না। তিনি প্রয়োজনে আদালতের সম্মুখীন হবে। রায় ঘোষণা পরবর্তীতে সংবাদ সম্মেলনে সোহান বলেন, “উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সরকারের নির্দেশেই এই পদক্ষেপ নিয়েছি আমরা। জায়েদ খান কি বললেন না বললেন তাতে আমাদের কিছুই যায় আসে না।”
এর আগে বহুল আলোচিত এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২৮ জানুয়ারি। এতে মিশা সওদাগরকে হারিয়ে ইলিয়াস কাঞ্চন সভাপতি পদে নির্বাচিত হন। অন্যদিকে, জায়েদ খানের কাছে হেরে আপিল বিভাগের কাছে তাৎক্ষণিক ভোট পুনঃগণনার আবেদন করেন নিপুন। তাতেও ফল একই রইলে জায়েদ খানের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনে করে ভোট কেনা ও নির্বাচনকে প্রভাবিত করার বেশকিছু প্রমাণ হাজির করেন গণমাধ্যমের সামনে।
যদিও জায়েদ খান জানিয়েছেন এসব ‘সুপার এডিটেড’। সংবাদ সম্মেলন করে তার মানহানি করায় নিপুনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা করবেন বলেও জানান।