বড় পর্দায় দর্শকদের নিয়মিত হাসিয়েছেন, আনন্দ দিয়েছেন। কিন্তু সেই টেলিসামাদ এখন ভালো নেই। দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন অসুখে ভুগছেন জনপ্রিয় এই অভিনেতা। গত ২১ ডিসেম্বর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউতে) ভর্তি করা হয় তাকে।
খবরটি নিশ্চিত করেছেন টেলিসামাদের বড় মেয়ে সোহেলা সামাদ কাকলী। তিনি জানান, শ্বাসকষ্ট নিয়ে দুই সপ্তাহ আগে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন তার বাবা। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, টেলিসামাদের বুকে সংক্রমণ হয়েছে। রক্তে হিমোগ্লোবিনও কমে যাচ্ছে। এছাড়া আরও কিছু বার্ধক্যজনিত সমস্যা দেখা দিয়েছে।
চিকিৎসকদের পরামর্শে গত ১৯ ডিসেম্বর উন্নত চিকিৎসার জন্য বিএসএমএমইউ’তে স্থানান্তর করা হয় ৭৯ বছর বয়সী এই অভিনেতাকে। তার মেয়ে জানান, এখানে আসার পর প্রথম দুই দিন একটু উন্নতি হয়েছে। তবে ২১ ডিসেম্বর শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করেন চিকিৎসকরা।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রে টেলিসামাদের বাইপাস সার্জারি হয়। এরপর থেকে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছেন তিনি।
মুন্সীগঞ্জের নয়াগাঁও এলাকায় ১৯৪৫ সালের ৮ জানুয়ারি টেলিসামাদের জন্ম। তিনি পড়াশোনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায়। তার প্রকৃত নাম আবদুস সামাদ হলেও বড় পর্দায় এসে তিনি হয়ে যান টেলিসামাদ। চার দশকের অভিনয় জীবনে প্রায় ৬০০টি চলচ্চিত্রে দেখা গেছে তাকে।
নজরুল ইসলামের পরিচালনায় ১৯৭৩ সালে ‘কার বৌ’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে রূপালি পর্দায় যাত্রা শুরু করেন টেলিসামাদ। ‘পায়ে চলার পথ’ ছবির মাধ্যমে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন তিনি। আমজাদ হোসেনের ‘নয়নমণি’ তাকে ব্যাপক পরিচিতি এনে দেয়। ২০১৫ সালে মুক্তি পায় তার অভিনীত সবশেষ ছবি অনিমেষ আইচের ‘জিরো ডিগ্রী’।
সংগীতেও রয়েছে এই গুণী মানুষের পারদর্শিতা। অভিনয়ের বাইরে ৫০টির বেশি চলচ্চিত্রে গান গেয়েছেন টেলিসামাদ। এছাড়া ‘মনা পাগলা’ ছবির সংগীত পরিচালনা করেছেন তিনি।