‘ইত্যাদি’তে বিগত প্রায় দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে বিদেশিদের নিয়ে তাদের মাতৃভাষার বদলে বাংলা ভাষায় গ্রামের সহজ সরল মানুষের চরিত্রে অভিনয় করিয়ে তুলে ধরা হয় আমাদের লোকজ সংস্কৃতি, গ্রামীণ কুসংস্কার, বিভিন্ন অসঙ্গতি, সামাজিক সমস্যা, গ্রামীণ খেলাধুলা ইত্যাদি। এসব ঘটনার পরিসমাপ্তি ঘটে চমৎকার একটি বক্তব্যের মাধ্যমে। ফলে আমাদের সংস্কৃতি ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বের নানা প্রান্তে।
তারই ধারাবাহিকতায় এবারের ঈদেও বিদেশি পর্বে অংশগ্রহণ করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, জার্মানি, ইটালি, চীন, আয়ারল্যান্ড, নাইজেরিয়া, নরওয়ে, ফিলিপাইনসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক। যারা এ দেশে বিভিন্ন দূতাবাস ও বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন। শত ব্যস্ততার মধ্যেও বিদেশিরা তাদের ছুটির দিনগুলোতে ইত্যাদির জন্য মহড়া করেন।
বাজারে কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণে মধ্যসত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য এবং প্রান্তিক কৃষকদের নানা সমস্যার উপর করা হয়েছে এবারের পর্ব। পাশাপাশি রয়েছে বিদেশিদের অংশগ্রহণে একটি গানের সাথে চিত্ত দোলানো নৃত্য।
বিদেশিদের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা জানালেন ইত্যাদির উপস্থাপক হানিফ সংকেত, ‘ওরা অপেশাদার হলেও অনেক পেশাদার শিল্পীরও ওদের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। বিশেষ করে বিদেশিদের সময়জ্ঞান, নিষ্ঠা, একাগ্রতা, কষ্ট সহিষ্ণুতা, আন্তরিকতা দেখে আমি মুগ্ধ। মাত্র কয়েকদিনের পরিচয়ে বিদেশিদের সাথে যে আত্মীক বন্ধন তৈরি হয় তা কখনোই ভোলার নয়। আশাকরি প্রতিবারের মত এবারও এই পর্বটি দর্শকদের অনেক আনন্দ দেবে।’
শুরুর দিকে বিষয়টি ১০/১২ জন বিদেশিদের নিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে শতাধিক বিদেশি অংশ নেন ইত্যাদিতে। বিদেশিরা মনে করেন এটি তাদের জীবনে একটি নূতন অভিজ্ঞতা, অন্যরকম আনন্দ। যা মানুষকে সচেতন করতে ভূমিকা রাখে।
তাই তারা উৎসাহের সঙ্গে এই পর্বটির জন্য অপেক্ষা করেন এবং অংশগ্রহণ করেন। তাছাড়া ইত্যাদি প্রচারের পর ইত্যাদিতে অংশগ্রহণ করা বিদেশিরা বাইরে বের হলে দর্শক যখন তাদের চিনতে পারেন, তাদের করা চরিত্র নিয়ে সুন্দর সুন্দর মন্তব্য করেন-তখন তাদের ভালো লাগে। একটি অনুষ্ঠানের ছোট্ট একটি পর্বে স্বল্প সময়ের উপস্থিতিতে তাদের এই পরিচিতি তাদেরকে বিস্মিত করে, আনন্দিত করে।
প্রতিবারের মত এবারও ঈদের বিশেষ ইত্যাদি একযোগে বিটিভি ও বিটিভি ওয়ার্ল্ডে প্রচারিত হবে ঈদের পরদিন রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর। ইত্যাদি রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত। নির্মাণ করেছে ফাগুন অডিও ভিশন।