অনিন্দিতা মিমি এ সময়ের টিভি পর্দার প্রিয় মুখ। শুরুটা মডেলিং দিয়ে হলেও এখন অভিনয় করছেন নাটক ও টেলিছবিতে। ঈদেও তার একাধিক কাজ প্রচারিত হবে। সমসাময়িক বিষয়ে বার্তা২৪.কমের মুখোমুখি হয়েছেন তিনি। কথা বলেছেন মাসিদ রণ
শোবিজে পথচলা কবে থেকে?
কোভিডের মধ্যে পড়াশুনা বা আনুষাঙ্গিক অনেক কিছুই বাধাগ্রস্ত হচ্ছিল। সেই সময়টা কাজে লাগানোর জন্য ফটোশুট করা শুরু করি। ২০২০ সালে ফ্যাশন ফটোশুট দিয়ে কাজ শুরু করি। আর অভিনয় শুরু ২০২২ সাল থেকে। প্রথম কাজ ছিল ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বঙ্গ’র ওয়েব সিরিজ ‘গার্লস স্কোয়াড’। ছয় পর্বের এই সিরিজটি দর্শকের মধ্যে বেশ সাড়া ফেলে। এজন্য আমার পথচলা মসৃন হয়েছে অনেকখানি। অনেকেই কাজের প্রস্তাব দিতে থাকেন। এভাবেই একের পর এক কাজ করছি।
নাটকের অঙ্গন আপনার জন্য নতুন একটি মাধ্যম। এই অঙ্গনে নিজেকে মানিয়ে নেওয়া কতোটা চ্যালেঞ্জিং মনে হচ্ছে?
নাটকের অঙ্গনে জায়গা করে নেওয়া অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং। কারণ আমাদের এখানে মেধাবী ছেলে-মেয়ের কমতি নেই। সেই অনুযায়ি কাজের সুযোগ খুব কম। তাই নিজেকে যতোক্ষণ না কেউ প্রমাণ করতে পারছে, ততোক্ষণ তার দিকে কেউ ফিরেও তাকায় না। কাজ পাওয়া ভীষণ শক্ত, কম্পিটিশন অনেক বেশি। আমার ক্ষেত্রেও প্রথম কাজটা পাওয়া ছিল অনেক চ্যালেঞ্জিং। কিন্তু একটি ভালো কাজে সুযোগ পেয়েছিলাম বলে তারপর থেকে বেশ মসৃনভাবে কাজ করছি। তবে আরও ভালো কাজের সুযোগ চাই। কেবল তো শুরু।
সেদিক থেকে প্রথম দিন অভিনয় করতে গিয়ে কোন জটিলতায় পড়তে হয় কি না?
‘গার্লস স্কোয়াড’ ওয়েব সিরিজ দিয়েই তো শুরু। মাহিদুল রাকিব ছিলেন পরিচালক। আমি ভীষণ নার্ভাস ছিলাম। আমার মনে আছে, ভয়ের চোটে প্রথম দৃশ্যটি ওকে করতে আমাকে ১৮টি শট দিতে হয়েছিল! সহশিল্পী ছিলেন সেমন্তী সৌমি। তারসঙ্গে আমার আগে থেকেই আমার পরিচয় ছিল। ফলে তিনি আমাকে ভীষণ সহযোগীতা করেছিলেন। এজন্য খুব একটা মানসিক চাপ নিতে হয়নি।
‘গার্লস স্কোয়াড’-এ সামিরা খান মাহি, সৌমি, রুকাইয়া জাহান চমক, নাবিলাসহ অনেকগুলো নারী তারকা অভিনয় করবেন। আপনার কাছে কার অভিনয় সবচেয়ে ভালো লাগে?
সৌমির সঙ্গে আমার যেহেতু আগে থেকেই পরিচয়, আর সে আমার ভালো বন্ধু এখন, তাই তার প্রতি আলাদা দুর্বলতা আমার আছে। তবে দর্শক হিসেবে বলতে গেলে সামিরা খান মাহির অভিনয় আমার সবচেয়ে ভালোলাগে। আমার ধারণা, দর্শকও এ ব্যাপারে আমার সঙ্গে একমত হবেন।
এরমধ্যে অনেকের সঙ্গেই কাজ করা হয়েছে। কার সঙ্গে কাজ করতে সবচেয়ে ফ্যাসিনেটিং লেগেছে?
নিঃসন্দেহে অপূর্ব ভাইয়ার কথা বলব। তপু খানের নির্দেশনায় ‘ডার্ক জাস্টিস’ নামের একটি কাজ করেছিলাম। সেখানে অপূর্ব ভাইয়ার সঙ্গে অভিনয় করা ছিল আমার জন্য খুবই রোমাঞ্চকর। একে তো এতো বড়মাপের তারকা, তারওপর আমি তার ফ্যান। বলতে গেলে, আমার নাটক দেখাই শুরু অপূর্ব আর নিশো ভাইয়ার নাটক দেখে। কিন্তু কাজের সময় দেখলাম দৃশ্যটি ভালো করার জন্য যা যা করা দরকার উনি তাই করেন। আমাকে এতোটাই সহজ করে ফেলেছিলেন যে আমার মধ্যে আর কোন জড়তা কাজ করেনি অভিনয় করার সময়। অপূর্ব ভাইয়ার সঙ্গে কাজ করার স্বপ্ন ছিল, পূরণ হয়েছে। এখন স্বপ্ন দেখি নিশো ভাইয়ার সঙ্গে কাজ করার। তবে তিনি এখন নাটক করছেন না। যেহেতু সিনেমা করছেন, আমার সুযোগ আসলে সিনেমাতেই তার সঙ্গে কাজ করবো।
কাজ নিয়ে কি পরিকল্পনা সামনে?
আমি কিন্তু গড়পড়তা যা পাচ্ছি তাই করছি না। একটু বেছে বেছে ভালোমানের কাজগুলোই করছি। কারণ অভিনয় নিয়ে আমার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। আমি হারিয়ে যেতে চাই না। সিনেমায় ভালো ভালো চরিত্রে কাজ করতে চাই। এজন্য যতো পরিশ্রম করতে হয় করবো।
আপনাকে শোবিজের একটি সার্কেলের সঙ্গে বেশি দেখা যায়। তাদের কারও সঙ্গে কি ব্যক্তগত কোন সম্পর্ক আছে?
যে কোন জায়গায় নিজস্ব একটা ভূবণ তৈরী করে নেওয়া ভালো। আমিও তেমন কিছু বন্ধু পেয়েছি যাদের সঙ্গে আমার মনের মিল রয়েছে। এর বাইরে কোন সম্পর্ক নেই। এখন আমি একদম সিঙ্গেল। শুধুই কাজ নিয়ে থাকতে চাই। বিয়ে শাদীর কথাও ভাবছি না। বিয়ে করলে এমন কাউকে করব যিনি আমার কাজকে সাপোর্ট করবেন এবং মন থেকে সম্মান করবেন। কারণ অভিনয় আমি ছাড়তে পারবো না। কেউ তাতে বাঁধা দিলে তিনি আমার জীবনসঙ্গী হতে পারবেন না।
আপনার পছন্দের অভিনেতা-অভিনেত্রী এবং নির্মাতা কারা?
অপূর্ব, নিশো, শাকিব খান, আরিফিন শুভ, সিয়াম আহমেদ দেশের মধ্যে আমার প্রিয় অভিনেতা। প্রিয় অভিনেত্রীর তালিকায় রয়েছেন শাবানা, শাবনূর, মৌসুমী, নুসরাত ফারিয়া ও মেহজাবীন চৌধুরী। পছন্দের নির্মাতাদের মধ্যে অমিতাভ রেজা, শিহাব শাহীন আর মিজানুর রহমানের কথা এই মুহূর্তে সবার আগে মনে পড়ছে। বলিউডের সিনেমা খুব ভালো লাগে। দীপিকা, ক্যাটরিনা, শাহরুখ খান আর সিদ্ধার্থ মালহোত্রা আমার ভীষণ প্রিয়। কারিনা কাপুরের ‘হিরোইন’-এর মতো চরিত্র পেলে জানপ্রাণ দিয়ে কাজ করতাম। কোন চরিত্র ফুটিয়ে তোলার জন্য যদি আমাকে খোলামেলা দৃশ্যও করতে হয় তাতে আমার কোন ‘না’ নেই।