বহু কষ্টে অর্জিত বাংলাদেশের কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে, সেটার জন্য ‘আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি’ বলে মন্তব্য করেছেন একসময়ের জনপ্রিয় ব্যান্ড দল ‘আর্ক’-এর ভোকালিস্ট সৈয়দ হাসানুর রহমান হাসান।
আজ (৩ আগস্ট) বিকেল ৩টায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে রাজধানী ঢাকার ধানমণ্ডির রবীন্দ্র সরোবরে ‘গেটআপ, স্ট্যান্ডআপ’ ব্যানারে সঙ্গীতশিল্পীদের এই আয়োজনে এক কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা শিল্পী হাসান।
এ সময় হাসান আরও বলেন, ‘সবচেয়ে বড় কথা, যে সন্তান ঘর থেকে বেরিয়ে আর ফিরে না আসে, হারিয়ে যায়, সেই সন্তানের মায়ের মনের যে দুঃখ, যে যন্ত্রণা, সেটাকে আসলে কিছু দিয়ে পরিপূরণ করা যায় না। দেশের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, এটার জন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি ‘
হাসান এটাও বলেন, ‘বহু কষ্টে অর্জিত বাংলাদেশের কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে, সেটার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। এগুলো সবই পূরণ করা সম্ভব হবে কিন্তু যারা হারিয়ে গেছেন, তাদের তো আর কখনো ফিরে পাওয়া যাবে না। সুতরাং এই মুহূর্তে আমাদের একটাই কাম্য, ‘আর কত মৃত্যু, হাহাকার; নেই আধিপত্য, হবে কী বিকার!’
‘আমি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে অত্যন্ত ইতিবাচকভাবেই দেখছি’ মন্তব্য করে ‘আর্ক’-এর এই ভোকালিস্ট বলেন, ‘প্রতিটি ছাত্রই হচ্ছে আমাদের কারো না কারো সন্তান বা ছোটভাই। এরা নির্দলীয় নিরপেক্ষ একটি আন্দোলন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। এই জিনিসটা সবাইকে স্পর্শ করেছে, আমাকেও করেছে, শিল্পী সমাজকেও করেছে। এখানে আমি বলে কথা নিই- শিল্পী সমাজ এক হয়ে গেছে। যেহেতু শিল্পীরা অত্যন্ত আবেগপ্রবণ এবং মৌলিক অধিকারের বিষয়ে সোচ্চার, সুতরাং আমাকেও এটা স্পর্শ করেছে!’
ছাত্রদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবি কতটা যুক্তিযুক্ত মনে করছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে এই সঙ্গীতশিল্পী বলেন, ‘ছাত্রদের দাবি মৌলিক অধিকার আদায়ের দাবি। সেটা অবশ্যই সুপ্রতিষ্ঠিত হোক, সেটা আমরা চাই। এর জন্য যদি কোনো ত্যাগের, আত্মত্যাগের দরকার হয় বা কোনোকিছু সংশোধনের দরকার হয়, কোনো কিছু নতুন করে প্রণয়নের দরকার হয়, যা যা দরকার হবে, সেগুলোর সব কিছুই আমাদের কাম্য।‘
শেখ হাসিনার পদত্যাগের বিষয়ে অন্য আরেক প্রশ্নের জবাবে এক সময়ের জনপ্রিয় এই ব্যান্ডশিল্পী বলেন, ‘আমি এই বিষয়ে এইভাবে বলতে পারি না, যেহেতু আমি একজন শিল্পী। আমি তাদের মৌলিক অধিকারের প্রতি সম্পূর্ণ সমর্থন। এর মধ্যে যদি অন্য কোনো বিষয় থাকে, তাহলে আমি মন্তব্য করতে চাই না!’
আন্দোলনকালীন দেশের বাইরে ছিলেন জানিয়ে হাসান বলেন, ‘ইন্টারনেট আসার আগে এবং পরে এমন একটা অবস্থায় আমরা ফিরে এসেছি। সুতরাং মূল আন্দোলনের বিষয়বস্তু আমরা দেখতে পাইনি।’
'আওয়াজ উডা' র্যাপ গান গাওয়ার অপরাধে গ্রেফতার হওয়া এই গানের শিল্পী হান্নানকে নিয়ে হাসান বলেন, ‘শিল্পীদের অধিকার থাকা উচিত। শিল্পীরা গানে গানে অনেক আলোচনা-সমালোচনা করে থাকেন, এটা দীর্ঘদিন ধরে সারা পৃথিবীতেই হয়ে আসছে। সুতরাং, এটাকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখা উচিত। এটা নিয়ে এমন করা উচিত না।’