কথায় আছে, ‘আমও গেল, বস্তাও গেলো’! এই দশা হয়েছে ঢালিউডের অন্যতম জনপ্রিয় চিত্রনায়ক আরেফিন শুভর ক্ষেত্রে।
ব্যক্তিজীবন ও ক্যারিয়ার- উভয়দিকেই যেন শনির দশা লেগেছে! ক’দিন আগেই প্রায় এক দশকের সংসারজীবনে বিচ্ছেদ হয়েছে এই অভিনেতার। আর আওয়ামীঘেষা শিল্পী হিসেবে ছাত্র আন্দোলনের পর থেকেই অভিনয় ক্যারিয়ার নিয়েও হুমকির মুখে ছিলেন শুভ।
বিনে পয়সায় বঙ্গবন্ধুর বায়োপিকে অভিনয় করেছেন, বিনিময়ে বিশেষ কোটায় পেয়েছেন সরকারি প্লট। শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে সংঘটিত ছাত্র আন্দোলনে তিনি চুপ থাকবেন এটাই স্বাভাবিক।
ফলে সাধারণ জনগনের রোষানলে পড়েন এই চিত্রনায়ক। আর সরকার পতনের পর তো আওয়ামীঘেষা শিল্পীদের অস্তিত্ব নিয়েই সংকট শুরু হয়।
এবার জানা গেলো, সরকারি কোটায় পাওয়া প্লটটিও হারাচ্ছেন শুভ। অর্থাৎ যে বঙ্গবন্ধুর বায়োপিকের জন্য তিনি এতোদিন গর্ব করেছেন, সেই বায়োপিকই হয়ে উঠল শুভ’র ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বড় শত্রু!
বিভিন্ন সময়ে সংরক্ষিত কোটায় বরাদ্দ দেওয়া প্লট বাতিলের উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এরই মধ্যে মুজিব সিনেমায় বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করা অভিনেতা আরিফিন শুভকে সংরক্ষিত কোটায় বরাদ্দ দেওয়া রাজউকের প্লটটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তার সঙ্গে ছবিটির প্রযোজক লিটন হায়দারের প্লটও বাতিল হচ্ছে।
সম্প্রতি গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ পর্যায় থেকে এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা পাওয়ার পর রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ও জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ (জাগৃক) প্লট বরাদ্দের তালিকা তৈরি করেছে। প্রচলিত বিধিবিধান পর্যালোচনা করে তা বাতিলের জন্য খুব দ্রুত সংস্থা দুটির বোর্ড সভায় তোলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প থেকে শুভকে ১০ কাঠা আর প্রযোজক লিটন হায়দারকে ৩ কাঠা আয়তনের একটি প্লট গত বছরের ২৭ নভেম্বরে রাজউকের বোর্ড সভায় বরাদ্দ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর এ প্লটের বিপরীতে শুভ সরকার-নির্ধারিত টাকা জমা দিয়ে একটি চুক্তিপত্রও গ্রহণ করেন। কিন্তু সময় স্বল্পতায় তিনি এ প্লটের রেজিস্ট্রেশন বা নিবন্ধন করে নিতে পারেননি।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর শুভর প্লটসহ রাজনৈতিক বিবেচনায় বরাদ্দ দেওয়া প্লটগুলো নিয়ে নানা হিসাব-নিকাশ শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় আরিফিন শুভ ও লিটন হায়দারের প্লট বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজউক।
আরিফিন শুভর প্লট বাতিলের বিষয়টি নিশ্চিত করে গতকাল বুধবার রাজউকের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. ছিদ্দিকুর রহমান সরকার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে আমরা তালিকা প্রণয়নের কাজ শুরু করেছি। তবে কী পরিমাণ প্লট বাতিল হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। মূলত যেগুলো রেজিস্ট্রেশন হয় নাই, এমন শতাধিক প্লটের তালিকা তৈরি করা হয়েছে; যা বোর্ড সভায় উপস্থাপন করে বরাদ্দ বাতিল করা হবে।’