বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নায়ক ক্ষণজন্মা সালমান শাহ। সালমান শাহ মাত্র ২৫ বছর বেঁচে ছিলেন। অল্প কয়েক বছরের অভিনয় ক্যারিয়ারে ২৭টি ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। যে ছবিগুলোর মাধ্যমে এখনো ভক্তদের হৃদয়ে বেঁচে আছেন তিনি।
সোহানুর রহমান সোহানের হাত ধরে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ চলচ্চিত্রে প্রিয়দর্শিনী মৌসুমীর বিপরীতে সালমানের অভিষেক ঘটে রূপালী পর্দায়। প্রথম সিনেমাতে অভিনয় করে ভক্ত-অনুরাগীদের মাঝে ব্যাপক ক্রেজ সৃষ্টি করেছিলেন। বেঁচে থাকলে তার বয়স হতো ৫৩ বছর।
চিত্রনায়িকা শাবনূরের সঙ্গে সালমান শাহর জুটিকে ধরা হয় ঢালিউডের অন্যতম শ্রেষ্ঠ জুটি। দর্শকের কাছে এই জুটির চাহিদা এতোটাই বেশি ছিলো যে অল্প কয়েক বছরের ক্যারিয়ারে সালমান শাহ শাবনূরের সঙ্গে এক ডজনের বেশি ছবিতে অভিনয় করেন। তাদের নব্বইভাগ ছবিই সুপারহিট।
পর্দার প্রেম এক সময় বাস্তবেও এসেছিলো দুই তারকার জীবনে, এমন গুঞ্জন রয়েছে। তবে শাবনূর বরাবরই সালমানকে বড় ভাই, বন্ধু এবং দারুণ সহশিল্পী হিসেবেই ব্যাখ্যা করেছেন। তবে যে যাই বলুক তাদের পর্দার কেমেস্ট্রি নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারবেন না।
আজ ৬ সেপ্টেম্বর সালমান শাহর অকালে চলে যাওয়ার দিন। তাইতো নিজের পর্দার জুটিকে স্মরণ করতে ভোলেননি শাবনূর। তিনি এখন অস্ট্রেলিয়ায়। সেখান থেকে একটু নতুন ছবি তুলে নায়কের একটি পুরনো ছবির সঙ্গে কোলাজ করে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন এই নন্দিত অভিনেত্রী। ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘আজ চলচ্চিত্রের রাজপুত্র সালমান শাহর ২৮তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকাই চলচ্চিত্রে বিশাল শূন্যতা তৈরি করে বিদায় নিয়েছিলেন সবার প্রিয় নায়ক সালমান শাহ। ক্ষণজন্মা এ নক্ষত্রের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা, ভালোবাসা এবং তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। ওপারে ভালো থেকো সালমান।’
এদিকে গতকাল দেশের একটি টেলিভিশনের এক সাক্ষাৎকারে সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী ছেলে হত্যার বিচার দাবি করে বলেন, সালমান শাহ আত্মহত্যা করেনি, ভারত থেকে এজেন্ট এনে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
পিবিআই প্রধান বনজ কুমার সম্পর্কে নীলা চৌধুরীর ভাষ্য, ‘তাদের সঙ্গে বনজ কুমারের সম্পৃক্ততা ছিল। এই বনজ কুমারকে তারা অনেক টাকা দিয়েছে। সালমান শাহ মৃত্যুর পর আমরা জেনেছিলাম যে, ভারতীয় কাউকে ভাড়া করে এনে সালমান শাহকে হত্যা করিয়েছে তারা। সুকুমার রঞ্জন সে সময় সংসদ সদস্য ছিলেন, তিনি একজন ভারতীয় এজেন্ট, ‘র’। তিনি আমাকে হুমকি দিয়েছিলেন।
নীলা চৌধুরী বলেন, ‘আগে একটা মাফিয়ার আন্ডারে ছিলাম। এখন আমরা মুক্ত এ হত্যার বিচার প্রয়োজন। আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে দেশে ফিরিয়ে আনা হোক।’
সালমান শাহর সাবেক স্ত্রী সামিরার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সামিরা তিনটি বিয়ে করল। সে যে খারাপ তা প্রমাণ হয়ে গেছে। একটি ঘরে থাকতে পারেনি সে। তার বাবাও অনেক কিছু করেছে। ইদানীং তাদের দেখা যাচ্ছে না। তার মা, সে সালমান শাহ হত্যা মামলার আসামি। অথচ একটা আসামিকেও কখনো জিজ্ঞাসাবাদ করা হলো না। তাদের আটক করা হলো না। হত্যা মামলার আসামি হলে তো সঙ্গে সঙ্গে আটক করা হয়। এরপর আইন যা বলবে তাই হবে। কিন্তু তা হয়নি।’