কলকাতার পরিচালক ও অভিনেতা অরিন্দম শীল। তাকে এ দেশের দর্শক বেশি চিনে থাকেন জয়া আহসানকে কলকাতার ছবিতে প্রথম সুযোগ দেয়ার সুবাদে! জয়া বাংলাদেশের গণ্ডি পেরিয়ে এক যুগ আগে পশ্চিমবঙ্গের ‘আবর্ত’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন যার পরিচালক এই অরিন্দম শীল।
এবার যৌন হেনস্থার অভিযোগে বহিষ্কার হলেন সেই পরিচালক। অরিন্দম শীলকে সাসপেন্ড করেছে ডিরেক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত সাসপেনশন বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই বিষয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমকে ডিরেক্টর্স গিল্ডের সভাপতি সুদেষ্ণা রায় বলেন, ‘কয়েকদিন ধরেই ধরেই এই আলোচনা চলছিল এবং অবশেষে আমরা পর্যাপ্ত প্রমাণ পেয়েছি। কারণ গুজবের ওপরে ভিত্তি করে তো কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারব না। যেহেতু আমরা প্রমাণ পেয়েছি তাই সর্বসম্মতিক্রমে আমরা তার সদস্যপদ সাসপেন্ড করেছি যতদিন না পর্যন্ত এই সমস্যা মিটে যায়। অর্থাৎ নির্দোষ প্রমাণিত হওয়া পর্যন্ত।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই মুহূর্তে তাকে আমরা সাসপেন্ড করেছি এবং তার কোনও কাজের জন্য আমরা দায়ী নই। তিনি নিজেকে অপরাধ থেকে মুক্ত না করা পর্যন্ত এই সাসপেনশন বহাল থাকবে, কারণ আমরা যৌন হেনস্থার অভিযোগ খুব গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করি।’
এই বিষয়ে অরিন্দম শীল বলেন, ‘ডিরেক্টর্স গিল্ড আমার গিল্ড, যার ওপর আমার প্রভূত আস্থা ছিল। আজ আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি, আমার গিল্ড আমার সঙ্গে একবারও কথা বলেনি, ওখান থেকে কেউ কিছু জানতে চায়নি। তারা আমার বিরেুদ্ধে সই করা মহিলা কমিশনকে দেয়া একটা চিঠি পেয়েছে যার ভিত্তিতে আমাকে কোনও রকম প্রশ্ন না করে, আমার থেকে ক্লারিফিকেশন না চেয়ে এটা ইস্যু করেন এবং এই মেইল সর্বত্র পাঠিয়ে দেওয়া হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি গতকাল যখন মহিলা কমিশনকে এই চিঠি দিই, সামনে সকলেই ছিলেন। আমি বারবার বলি যে আমি কিন্তু আমার বিবেকের কাছে খুব পরিষ্কার। আমি যখন শুট করি তখন আমি অন্য মানুষ। আমি আমার কাজ নিয়ে এত প্যাশনেট, এটা কিছুই না। এটা কেবলমাত্র একটা শট ছিল। আমি আমার সমস্ত শিল্পীদের শট অভিনয় করে দেখিয়ে দিই, কারণ আমি নিজে অভিনেতা তাতে আমার সুবিধা হয়। শট বুঝিয়ে দেওয়ার আগেও জিজ্ঞেস করি ওই অভিনেত্রী কমফোর্টেবল কি না। তারপরে সাধারণ কথা হচ্ছে সেই ভিডিও-ও আছে। তারপরে শুনলাম এমন অভিযোগ এসেছে। আমি সেটা বলেছিও মহিলা কমিশনকে। আমি বলেছি অনিচ্ছাকৃত ভাবে যদি খারাপ লেগে থাকে আমি অন্তর থেকে দুঃখিত। তখন আমাকে বলা হয় অভিনেত্রী চাইছেন ‘অনিচ্ছাকৃত’ শব্দটা লিখবেন না আর ‘দুঃখিত’র জায়গায় ‘ভুল’ লিখুন। সেটাকেই পাবলিশ করে দেওয়া হল এবং এই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে আমাকে সাসপেন্ডও করা হল।
পরিচালকের মন্তব্য, ফাঁসির আসামীকেও তো নিজের সপক্ষে যুক্তি দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়, কিন্তু তার ক্ষেত্রে এমনটা হয়নি।
সূত্র: এবিপি নিউজ